যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানা অন্যতম শক্তিশালী হারিকেন ‘ইয়ান’। ইয়ানের তাণ্ডবে এখন পর্যন্ত দেশটিতে শত শত কোটি ডলারের ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হওয়ার পাশাপাশি অন্তত ২১ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
শনিবার দেশটির ফ্লোরিডা, নর্থ ও সাউথ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্য হারিকেনের ধ্বংসযজ্ঞ পরিষ্কার করার কাজ শুরু করা হয়।
ইয়ান এখন ক্রান্তীয় ঝড়ের রূপ নিয়ে ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে। তবে স্থানীয় সময় শনিবার সকাল পর্যন্ত ক্যারোলাইনা, ভার্জিনিয়া ও ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ায় আরও বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে বলে সতর্ক বার্তা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার।
সেইসঙ্গে বিপজ্জনক জলোচ্ছ্বাস, হড়কা বান ও প্রবল ঝড়ের হুমকি চলমান আছে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার ফ্লোরিডার উপসাগরীয় উপকূল দিয়ে ইয়ান স্থলে উঠে এসে সেখানকার সৈকত শহরগুলোতে তাণ্ডব চালিয়ে সেগুলোকে দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় পরিণত করে। শুক্রবার বিকালে এটি ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার বাতাসের বেগ নিয়ে সাউথ ক্যারোলাইনার ঐতিহাসিক শহর চার্লসটনের উত্তরে জরজটাউনে আঘাত হানে।
মহাসাগর থেকে ধেয়ে আসা জলোচ্ছ্বাসে বহু রাস্তা ডুবে যায় ও গাছ উপড়ে পড়ে কোনো কোনো রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়, পাশাপাশি প্রবল ঢেউয়ের তোড়ে বহু জেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাওয়ারআউটেজ ডটইউএসের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার রাত আড়াইটা পর্যন্ত ফ্লোরিডা ও ক্যারোলিনার প্রায় ১৭ লাখ বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎবিহীন ছিল।
হতাহতের মোট পরিসংখ্যান এবং ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কি পরিমাণ খরচ হতে পারে সে ব্যাপারে এখনো সুস্পষ্ট কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি বলে রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
শুক্রবার সকালে ফ্লোরিডার জরুরি ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক কেভিন গাথরি জানান, অন্তত ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে এদের মধ্যে কয়েকজনের মৃত্যু নিয়ে অনিশ্চয়তাও রয়ে গেছে। এখনো প্রায় ১০ হাজার মানুষের খোঁজ মেলেনি, তবে তাদের অনেকেই আশ্রয় কেন্দ্রে বা বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডেসান্টিস বলেন, যে সব পুরনো বাড়িগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছিল সেগুলো সাগরে ভেসে গেছে। এসব বাড়িতে যারা ছিলেন তাদের বেঁচে থাকা খুব কঠিন হবে বলে মনে করি আমি।
যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রপার্টি তথ্য ও বিশ্লেষক কোম্পানির তথ্য মতে, ১৯৯২ সালে আঘাত হানা হারিকেন অ্যান্ড্রুর পর ইয়ানেই ফ্লোরিডায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ইতোমধ্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ফ্লোরিডা ও নর্থ ক্যারোলিনার জন্য দুর্যোগ ঘোষণার প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন। এতে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর পক্ষে কেন্দ্রীয় সহায়তা পাওয়া সহজ হবে।
ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন