রুপার্ট মারডক, যিনি গোটা বিশ্বে পরিচিত ‘মিডিয়া মোগল’ হিসেবে। তার ‘মিডিয়া মোগল’ পরিচিতির পিছনে রয়েছে- গণমাধ্যম ব্যবসা। কেননা, অস্ট্রেলিয়ান বংশোদ্ভূত এই মার্কিন ব্যবসায়ী একাধারে স্কাই টিভি, দ্য সান, টাইমস নিউজপেপারস, ইউএস টেলিভিশন নেটওয়ার্ক, ফক্স নিউজ ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মতো প্রভাবশালী গণমাধ্যমের মালিক। এসবের ফলেই বিশ্বজুড়ে তিনি মিডিয়া মোগল খ্যাতি পেয়েছেন।
তবে এটি পুরনো খবর, নতুন খবর হচ্ছে আবারও বিবাহ বিচ্ছেদ হতে যাচ্ছে ৯১ বছর বয়সী মার্কিন ধনকুবের রুপার্ট মারডকের। এবার চতুর্থ স্ত্রী জেরি হলের সঙ্গে ঘর ভাঙছে তার।
দুটি অজ্ঞাত সূত্রের বরাত দিয়ে মার্কিন গণমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস প্রথম রুপার্ট মারডকের বিবাহ বিচ্ছেদের খবর প্রকাশ করে। এ নিয়ে মারডকের মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোনও মন্তব্য করেননি।
এই মার্কিন ধনকুবের এর আগেও তিনবার বিয়ে করেছিলেন। অপর দিকে জেরি হলও ১৯৯০ সালে একবার বিয়ে করেছিলেন।
দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, মারডক এবং হল ২০১৬ সালে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন। বিয়ের আগে তাদের ঘনিষ্টরা জানিয়েছিলেন, মারডক এবং জেরির সম্পর্ক বেশ মিষ্টি। তারা বিয়ের আগে থেকেই বিবাহিত দম্পতির মতো আচরণ করতো।
বিয়ের দিন মারডক টুইট করে লেখেন, আগামি ১০ দিন কোনও টুইট করছি না। মনে হচ্ছে আমি বিশ্বের সব থেকে সুখী ও ভাগ্যবান মানুষ।
২০১৯ সালে এই দম্পতি ১৩৮ লাখ ডলার ব্যয় করে লন্ডনের কাছে একটি বাড়ি কেনেন। নিউ ইয়র্কে গত বছর দু’জনে একসঙ্গে মারডকের ৯০তম জন্মদিন উদযাপন করেন।
জেরির বর্তমান বয়স ৬৫। বিচ্ছেদের বিষয়ে জেরির প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস। তবে মারডকের ঘনিষ্টরা এই বিচ্ছেদের খবর শুনে অবাক হয়েছেন।
রুপার্ট মারডক প্রথম বিয়ে করেছিলেন ১৯৫৬ সালে। তার প্রথম স্ত্রীর নাম ছিল প্যাট্রিসিয়া বুকার। ১৯৬৭ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়। পরে ২০০০ সালে মারা যান প্যাট্রিসিয়া। সেই ঘরে প্রুডেন্স মারডক নামে এক কন্যা সন্তান রয়েছে তাদের।
ধনকুবের রুপার্ট মারডকের দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন আন্না মারডক মান। ১৯৬৭ সালে তাদের বিয়ে হয়। ১৯৯৯ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়। মারডক-আন্না দম্পতির রয়েছে তিন সন্তান। তারা হলেন-এলিজাবেথ, লাচলান, জেমস।
এরপর ১৯৯৯ সালে রুপার্ট মারডক বিয়ে করেন চীনা-বশোদ্ভূত ওয়েন্ডিকে। ২০১৩ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়। সেই ঘরে গ্রেস ও কোলি নামের দুই সন্তান রয়েছে মারডকের।
ডানপন্থী মতাদর্শের পক্ষের মানুষ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে মারডকের প্রভাব ব্যাপক। তার অধীনে থাকা ফক্স নিউজ সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ এবং দাবি গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করতো। নির্বাচনে কারচুপি কিংবা জলবায়ু পরিবর্তনের সংকটকে অস্বীকারের মতো দাবিগুলো রয়েছে এরমধ্যে। নিউ ইয়র্ক টাইমসের দুই সাংবাদিকের লেখা এক বই অনুযায়ী, ডানপন্থীদের পছন্দের গণমাধ্যমগুলো পরিচালনার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে রুপার্ট মারডক বিশ্বের সব থেকে ভয়াবহ মানুষ।
সূত্র: নিউ ইয়র্ক টাইমস,
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন