ফিলিস্তিনের পশ্চিমতীরের জেনিনে আগ্রাসী ইসরাইলি সেনারা সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিলেন। এতে একজন সাংবাদিক নিহত হন এবং তাঁর সঙ্গে থাকা আরেক সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আহত হয়েছেন।
কাতারভিত্তিক টেলিভিশন আল-জাজিরা জানায়, ইসরায়েলি বাহিনী ‘ঠাণ্ডা মাথায়’ এবং ‘ইচ্ছেকৃতভাবে’ ৫১ বছর বয়সী শিরিন আবু আকলাকে গুলি করে। একই ঘটনায় তার প্রযোজকও গুলিবিদ্ধ হন।
আল জাজিরাকে উদ্ধৃত করে এমন তথ্য জানায় বৃটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।
তবে আক্রমণকারী ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী সাংবাদিকদের টার্গেট করে গুলি চালানোর কথা অস্বীকার করেছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দাবি করেন, গোলাগুলি চলার সময় ‘সম্ভবত’ ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীদের গুলি লেগেছিল এদের গায়ে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, শিরিন আবু আকলা যখন ইসরাইলি অভিযানের খবর দিতে সেখানে অবস্থান করছিলেন, তখন তার মাথায় গুলি লেগেছিল। খুবই সংকটজনক অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে পরে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
একই ঘটনায় আরেকজন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক, আল জাজিরার প্রযোজক আলি সামুদির পিঠে গুলি লাগে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তার অবস্থা স্থিতিশীল।
আল জাজিরা জানায়, আলি সামুদি তাদের বলেছেন, আমরা ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের ভিডিও চিত্র ধারণ করতে যাই। আমাদের সতর্ক না করেই বা সেই স্থান ত্যাগ করার নির্দেশ না দিয়েই হঠাৎ গুলি চালায়। প্রথম গুলিটি আমার গায়ে লাগে। এরপরের গুলি আঘাত করে শিরিনকে।
আল-জাজিরার এক বিবৃতিতে বলা হয়, এটা একটা নগ্ন হত্যাকাণ্ড। আন্তর্জাতিক আইন এবং রীতি-নীতি ভঙ্গ করে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী ঠাণ্ডা মাথায় ফিলিস্তিনে আল জাজিরার সংবাদদাতা শিরিন আবু আকলাকে হত্যা করেছে। আজ সকালে তিনি যখন সাংবাদিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন, নিজের সাংবাদিক পরিচয়ের চিহ্ন হিসেবে প্রেস জ্যাকেট পরে ছিলেন। তখন তাকে টার্গেট করে গুলি করা হয়েছে।
আল জাজিরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এরকম ‘ইচ্ছেকৃতভাবে টার্গেট করে সাংবাদিক হত্যার’ দায়ে ইসরায়েলি সরকার এবং সামরিক বাহিনীকে জবাবদিহিতার মুখোমুখি করার জন্য।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এই ঘটনার নিন্দা করেছেন।
আবু আকলা ছিলেন আল জাজিরার খুবই সুপরিচিত এক সাংবাদিক। বিগত বছরগুলোতে ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি সংঘাতের খবর পরিবেশনকারী এই নারী সাংবাদিক ছিলেন টেলিভিশনের পর্দায় এক পরিচিত মুখ।
তার এক সহকর্মী নিদা ইব্রাহীম বলেন, তিনি ছিলেন খুবই শ্রদ্ধেয় এক সাংবাদিক এবং তার মৃত্যুর খবরে সহকর্মীদের মর্মাহত করেছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জেনিনের শরণার্থী শিবিরে নিয়মিতই হানা দেয়। সম্প্রতি ইসরায়েলের রাস্তায় ইসরায়েলি আরব এবং ফিলিস্তিনিরা অনেকগুলো হামলা চালানোর পর এরকম অভিযান আরও বাড়ানো হয়।
পশ্চিম তীরে দখলদার বাহিনীর অভিযানে নিহত হয় অন্তত ২৬ জন ফিলিস্তিনি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন