বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুততম সুপারকম্পিউটার তৈরির দাবি করছে চীন। সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির গবেষক প্যান জিয়ানওয়ে ও তার দল এমনই একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যে জটিল হিসাবের সমাধান করতে অন্যান্য সুপারকম্পিউটারের ৮ বছর সময় লাগার কথা, সেই হিসাব মাত্র এক ঘণ্টা দশ মিনিট সময় নিয়ে করতে সক্ষম এই সুপারকম্পিউটার। এমনটাই দাবি করছে চীনের বিজ্ঞানীরা। তবে এটি এখনো পিয়ার-রিভিউড হয়নি।
এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুততম সুপারকম্পিউটার তৈরির দাবি করে আসছিল গুগল। ২০১৯ সালে আবিষ্কার করা সাইকামো সুপারকম্পিউটারকে পেছনে ফেলে, বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুততম সুপারকম্পিউটারের আবিষ্কারক এখন চীন। পরীক্ষায় গুগলের সাইকামোর সমাধান করা সমস্যার থেকেও হাজারগুণ জটিল সমস্যার সমাধান করেছিল। চীনের এই সুপারকম্পিউটার কিউবিটসগুলোকে পরিচালনা এবং প্রক্রিয়াজাত করতে অপটিক্যাল সার্কিট এবং ফোটনের ব্যবহার করেছে। অন্যদিকে গুগলের সাইকামোর ইলেকট্রন এবং সুপারকন্ডাক্টরের ওপর ভিত্তি করে সমস্যার সমাধান করেছিল। চীন তাদের তৈরি এই সুপারকম্পিউটারের নাম দিয়েছে জুশংসি।
তারা বলছে, তাদের তৈরিকৃত এই সুপারকম্পিউটার অন্য সব সুপারকম্পিউটার থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী। গবেষক প্যান জিয়ানওয়ে সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছে, ‘অন্য সুপার কম্পিউটারের যেসব হিসাব করতে কয়েক বছর লেগে যাবে, আমরা তা করতে পারব কয়েক ঘণ্টায়।’ অন্য সব সাধারণ বা ক্লাসিক্যাল কম্পিউটারে যেটা বিটস নামে পরিচিত, সেটা কোয়ান্টাম কম্পিউটারের ক্ষেত্রে কোয়ান্টার বিটস বা কিউবিটস নামে পরিচিত। চীনের তৈরি এই সুপারকম্পিউটার ৬৬ কিউবিটসের বলে তারা জানিয়েছে।
বিজ্ঞানীদের মতে, জ্যোতির্বিজ্ঞান, মহাকাশ বিজ্ঞানের নানাবিধ উত্তর সহজে মিলবে চীনের আবিষ্কৃত এই সুপারকম্পিউটারের মাধ্যমে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে মানবকল্যাণেও কাজে আসতে পারে এটি। জানা গেছে, রিভিউ পর্যায় পেরিয়ে গবেষণাপত্রটি একটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকায় এখন প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে।
গবেষণাপত্রে প্যান জিয়ানওয়ে ও তার দল লিখেছে, গুগলের ৫৪ কিউবিটের সাইকামোর কোয়ান্টাম কম্পিউটারের থেকেও ৬৬ কিউবিটের জুশংসি সুপারকম্পিউটার বেশি শক্তিশালী। গুগলের সুপারকম্পিউটারের চেয়ে জুশংসি এক হাজার গুণ জটিল গাণিতিক সমস্যার সমাধান করতে সময় নিয়েছে মাত্র ৭০ মিনিট! এর পাশাপাশি, জটিল সমস্যার জট দ্রুতগতিতে সমাধানের সঙ্গে বহু সুজটিল গাণিতিক সমস্যার সমাধান অনেক কম সময়ে করতে সক্ষম চীনের এই সুপারকম্পিউটার।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন