চীনা জনগণের মধ্যেও সিনোফার্ম ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা এবং সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে
আন্তর্জাতিক মহলে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশকে নিজেদের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা দিচ্ছে চীন। তবে এই কৌশল প্রায় ব্যর্থ হওয়ার পথে কারণ চীনা ভ্যাকসিনকে ‘অকার্যকর’ বলে চিহ্নিত করেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। এমনকি চীনা জনগণেরও এই ভ্যাকসিনের প্রতি আস্থা নেই।
এমনকি চীনের সব সময়ের বন্ধু পাকিস্তান এবং ব্রাজিলের মতো দেশগুলোও চীনা ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। অন্য কয়েকটি দেশে আইন প্রণেতাদের চীনা টিকা প্রয়োগের আগে জনগণনকে আশ্বস্ত করতে হয়েছে যে সেগুলো কার্যকর ও নিরাপদ প্রমাণ না করা পর্যন্ত ব্যবহার করা হবে না।
বেইজিংভিত্তিক সংস্থা সিনোভাকের তৈরি করোনাভ্যাক ভ্যাকসিনটিকে ‘হতাশজনক’ বলে অভিহিত করেছে ব্রাজিলের বুটানটান ইনস্টিটিউট। কারণ এই টিকার কার্যকারিতা হার ৫০.৪ শতাংশের বেশি যেতে পারছে না। পাকিস্তানও প্রমাণ পেয়েছে যে সিনোভাকের তৈরি ভ্যাকসিন ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য কার্যকর নয়।
এই ধরনের সমালোচনার পর চীনের ভ্যাকসিন নিতে আগ্রহী দেশগুলোর মধ্যে মারাত্মক প্রভাব দেখা দিতে পারে। চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের মতে, ইতিমধ্যে শতাধিক দেশ সিনোভ্যাক থেকে ভ্যাকসিন ক্রয়ের জন্য চুক্তি করেছে।
বৈদেশিক সম্পর্ক কাউন্সিলের বৈশ্বিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সিনিয়র ফেলো ইয়ানজং হুয়াং বলেন, ‘যে দেশগুলো চীনের তৈরি টিকা নেওয়ার চুক্তি করেছে তারা এই ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সম্ভাবনা রয়েছে।’
তাইওয়ান চীনা কোম্পানির তৈরি করোনভাইরাস ভ্যাকসিন গ্রহণের আগে যাচাই করার বিষয়ে জনসাধারণকে সতর্ক করেছে। মালয়েশিয়া এবং ফিলিপাইনের সরকার তাদের নাগরিকদের প্রতিশ্রুতি দেয় যে পরীক্ষার ফলাফল সন্তোষজনক না হওয়া পর্যন্ত চীনা ভ্যাকসিন ব্যবহার করা হবে না।
চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের মাধ্যম পাকিস্তানকে একটি চীনা উপনিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করছে এই আশঙ্কায় অনেক পাকিস্তানী এই টিকা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছে। চীনা ভ্যাকসিনের নিম্নমানের বিষয়ে উদ্বিগ্ন করাচির একজন বাইকচালক ফরমান আলি শাহ জাপান টাইমসকে বলেন, ‘আমি এটি গ্রহণ করব না। আমি এর কার্যকারিতা বিশ্বাস করি না।'
চীনা জনগণের মধ্যেও সিনোফার্ম ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা এবং সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। মানবাধিকার কর্মী গুও লি বলেন, ‘আমার বন্ধু একটি চীনা ভ্যাকসিন প্রত্যাখ্যান করেছে কারণ ভ্যাকসিনের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বিশেষত শিশুদের ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
দরিদ্র দেশগুলোর ওপর প্রভাব বাড়াতে চায় চীন। এর আগে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের মাধ্যমে এবং এখন ভ্যাকসিন কূটনীতি ব্যবহার করে। তবে লকডাউনের সময় পিপিই কিটসহ মানহীন ও ত্রুটিযুক্ত মেডিকেল সরঞ্জামের রপ্তানির করায় বিশ্বজুড়ে মানুষ ক্ষুব্ধ হয়েছে চীন সরকারের ওপর।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন