সাংবাদিকদের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে না পারায় মিয়ানমারে প্রেস কাউন্সিলের ২৪ সদস্য পদত্যাগ করেছেন। খবর মিয়ানমার নাউ, ফ্রন্টিয়ার।
খবরে বলা হয়, গত সোমবার সাধারণ ধর্মঘট বা ‘ফাইভ টুজ বিপ্লব’র সংবাদ কাভার করার সময় ইয়াঙ্গুনে একদল সাংবাদিকের দিকে অস্ত্র তাক করেছিল সেনা সদস্যরা। তখনও গ্রেফতার এড়াতে সাংবাদিকরা দৌড়ে পালিয়ে যান। পহেলা ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী অভ্যুত্থান ঘটানোর পর সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করে। সুনির্দিষ্ট কিছু শব্দ ব্যবহার করা যাবে না বলে প্রেস কাউন্সিলকে দিক নির্দেশনা দেয়। ফলে মিয়ানমার প্রেস কাউন্সিলের ২৬ সদস্যের মধ্যে ২৪ জনই পদত্যাগ করেন। জান্তা প্রশাসনের অধীনে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে না পেরে এবং মিডিয়া নৈতিকতা সমন্বিত করতে না পারার ব্যর্থতার কারণে তারা পদত্যাগ করেন।
গ্রেফতার-আটক এড়াতে মিয়ানমারের সাংবাদিকরা পুলিশ ও সেনা সদস্যদের থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী প্রতিবাদ-বিক্ষোভের সংবাদ কাভার করার সময় রাজধানী নেপিদোর পাইনমানা এলাকা থেকে বুধবার ফের কিছু সাংবাদিককে গ্রেফতারের চেষ্টা করে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা। তাদেরকে সংবাদ প্রচার না করে পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়। এদিকে টুইটারের টুইট ও খুদে বার্তা মিয়ানমারে ভয় ছড়ানোর নতুন মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। মিয়ানমার নাউ, ফ্রন্টিয়ার।
দিন দিন জান্তার সাংবাদিক দমন-পীড়ন বাড়ছে। পাঁচজন সাংবাদিক একটি হাইস্কুলের কাছে প্রতিবাদ র্যা লির ভিডিও করছিলেন। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনীর একটি গাড়ি এসে তাদের ভিডিও না করার জন্য বলে। কিন্তু তারা ভিডিও করতে থাকলে কিছুক্ষণ পর আরেকটি পুলিশের গাড়ি এসে কী ধারণ করা হচ্ছে, জানতে চায়। এ সময় গাড়ির ভেতর থেকে এক পুলিশ বলে ‘এদের গ্রেফতার কর’। সঙ্গে সঙ্গে তারা পালিয়ে যান। এ সময় এক সাংবাদিক তার ভিডিও-ক্যামেরা ফেলেই দৌড়ে পালান। অন্যজন পালাতে গিয়ে পড়ে আহত হন। একজন সাংবাদিক বলেন, ‘আমি দৌড়ে পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নিতে সক্ষম হই। আমরা শুনছিলাম, তারা এক-অপরকে বলছে- এদেরকে গ্রেফতার করো।’
অভ্যুত্থানের পর থেকে ফেসবকু বন্ধ থাকায় বিভিন্ন নতুন প্লাটফর্মে ভুল ও ভুয়া তথ্য ছড়ানো হচ্ছে মিয়ানমারে। ইন্টারনেটে জান্তার বিধিনিষেধ আরোপ মিথ্যা তথ্যের আগুনে আরও বাড়তি হাওয়া যোগ করেছে। সম্প্রতি টুইটারে ছড়িয়ে পড়া এক পোস্টে দাবি করা হয় জেল থেকে ছাড়া পাওয়া অপরাধীরা ইয়াঙ্গুনের বিভিন্ন এলাকায় নাশকতা সৃষ্টি করছে। প্রমাণ হিসেবে সংযুক্ত করা হয় একটি ভিডিও যাতে কিছু মানুষ রাতের অন্ধকারে অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে ঘুরছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে-এরা সেনা-পুলিশের গ্রেফতারের হাত থেকে প্রতিবেশীদের বাঁচাতে সুরক্ষার কাজ করছে। এভাবে জান্তা ফেসবুক বন্ধ করার পর থেকে টুইট ও খুদে বার্তায় ভুয়া মেসেজ দিয়ে আতঙ্ক তৈরি করা হচ্ছে। সামরিক বাহিনীর মদদপুষ্টরা এসব করছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন