নোভেল করোনাভাইরাস হানা দেওয়ার এক বছরের মধ্যেই টিকাকরণ শুরু হয়ে গেল ভারতে। শনিবার নিজে হাতে টিকাকরণের সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রেকর্ড সময়ে করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কারের কৃতিত্ব বিজ্ঞানী এবং গবেষকদেরই দেন তিনি।
পরীক্ষা সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই ভারত কোভ্যাক্সিনের তৈরি প্রতিষেধককে ছাড়পত্র দেওয়া নিয়ে যদিও বিতর্ক চলছে। কিন্তু কোভ্যাক্সিন এবং ব্রিটিশ-সুইডিশ সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ডের প্রযুক্তি নিয়ে সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি কোভিশিল্ড, দু’টি প্রতিষেধককেই দরাজ সার্টিফিকেট দেন প্রধানমন্ত্রী। রেকর্ড সময়ে দু’-দু’টি ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ প্রতিষেধক বিজ্ঞানের অগ্রগতিরই প্রতীক বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এমনকি প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ নেওয়া যে বাধ্যতামূলক, তা-ও মনে করিয়ে দেন মোদী। প্রথম ডোজটি নেওয়ার পর এক মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয় ডোজটি নিতে হবে বলে জানান তিনি।
এ দিন প্রধানমন্ত্রী যা বললেন—
• টিকাকরণ শুরু হওয়ার অর্থ এই নয় যে, মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে চলার আর প্রয়োজন নেই। বরং দাওয়াই এবং কড়া নিয়মানুবর্তিতা, এই দুই নীতি মেনেই চলতে হবে আমাদের।
• জনতা কার্ফু আসলে ধৈর্যের পরীক্ষা ছিল। লকডাউনের জন্য মানুষকে প্রস্তুত করা প্রয়োজন ছিল। থালা বাজিয়ে, প্রদীপ জ্বেলে মনোবল বাড়ানোর চেষ্টা করেছি আমরা।
• গোটা বিশ্বের সামনে নজির তৈরি করেছি আমরা। অতিমারিতে অন্য দেশে বাসিন্দারা যখন চিনে আটকে ছিলেন, বন্দে ভারত মিশনের আওতায় দেশের মানুষকে ফিরিয়ে এনেছি আমরা। শুধু নিজেদের দেশের মানুষকেই নয়, অন্য দেশের বাসিন্দাদেরও আমরা অতিমারি প্রকোপিত জায়গা থেকে সরিয়ে এনেছি।
• বিগত কয়েক মাস ধরে সকলের মুখে একই প্রশ্ন ছিল, প্রতিষেধক কবে আসবে? প্রতিষেধক এসে গিয়েছে এবং তা অত্যন্ত কম সময়ের মধ্যেই সম্ভব হয়েছে।
• আর কয়েক মিনিটের মধ্যে বিশ্বের সর্ববৃহৎ টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু হতে চলেছে ভারতে। সকলকে অভিনন্দন জানাই। যাঁরা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তাঁদের বিশেষ অভিনন্দন। উৎসবের মধ্যেও দিন-রাত এক করে পরিশ্রম করে গিয়েছেন ওঁরা। প্রতিষেধকের জন্য নিজেদের সব কিছু উজাড় করে দিয়েছিলেন।
• এমন অনেক দেশ রয়েছে, যেখানে মোট জনসংখ্যাই ৩ কোটি। আমরা সেখানে প্রথম দফাতেই ৩ কোটি মানুষকে প্রতিষেধক দিতে চলেছি। দ্বিতীয় দফার শেষে সবমিলিয়ে ৩০ কোটি মানুষকে প্রতিষেধক দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করছি।
• প্রতিষেধক আবিষ্কার সাধারণত সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। কিন্তু দেশে তৈরি দু-দু’টি প্রতিষেধক পেয়ে গিয়েছি আমরা। ভারতে বিজ্ঞানে অগ্রগতি এবং ভারতীয়দের প্রতিভারই পরিচয়।
• এই মুহূর্তে সবার আগে যাঁদের নিরাপত্তা দেওয়া প্রয়োজন, তাঁরাই প্রথম প্রতিষেধক পাবেন। স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক, নার্স-সহ সরকারি এবং বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত সকলকে এ ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। তার পর সেনাবাহিনীর কর্মী, আইনজীবী, সাফাইকর্মীদের মতো জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত সকলকে প্রতিষেধক দেওয়া হবে।
• প্রতিষেধকের দু’টি ডোজই নিতে হবে। প্রথম ডোজ নেওয়ার ঠিক একমাস পর দ্বিতীয় ডোজটি নেওয়া প্রয়োজন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন