জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রধান ফারুক আবদুল্লাহকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের(ইডি)পক্ষ থেকে সেখানকার ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনে দুর্নীতির অভিযোগে সোমবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ন্যাশনাল কনফারেন্সের এক মুখপাত্র ওই ঘটনাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার উদ্দেশ্যে নেওয়া পদক্ষেপ গ্রহণ বলে অভিহিত করেছেন। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গুপকার ঘোষণাপত্রের পরে ইডি’র চিঠি এসেছে। এটা স্পষ্ট যে কাশ্মীরে গণজোট গঠনের পরে এটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিপ্রায় নিয়ে নেওয়া একটি পদক্ষেপ। পারসটুডে
টানা ৭ ঘণ্টা জেরা চলার পর ইডি অফিস থেকে বেরিয়ে ৮২ বছরের ফারুক আব্দুল্লাহ বলেন, একটি জিনিস মনে রাখবেন, আমাদের অনেক দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে হবে। এটি আসলেই একটা দীর্ঘ লড়াই। ফারুক আবদুল্লাহ বেঁচে থাকুক বা মারা যাক, তারপরেও আমাদের সংগ্রাম চলবে। আমাদের সংকল্প বদলায়নি। আমাকে ফাঁসি দেওয়া হলেও আমাদের সংকল্প কখনওই বদলাবে না। তার দল বলেছে, আমরা জানতাম যে এমনটি ঘটতে চলেছে। কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি তার এজেন্সিগুলোকে নয়া রাজনৈতিক জোটের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ব্যবহার করছে, কারণ তারা রাজনৈতিকভাবে এর মুখোমুখি হতে পারবে না।
২০০২ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে, বিসিসিআই রাজ্যে ক্রিকেটের সুযোগ-সুবিধার জন্য ১১২ কোটি টাকা দিয়েছিল। এই অর্থের মধ্যে ৪৩.৬৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনায় তদন্তকারী সংস্থা জম্মু-কাশ্মীর ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন সভাপতি ফারুক আবদুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সালিম খান, কোষাধ্যক্ষ আহসান আহমেদ মির্জা এবং জম্মু-কাশ্মীর ব্যাংকের কর্মচারী বশীর আহমেদ মিসগারের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ষড়যন্ত্র ও জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে। এরপরে ইডি অর্থ পাচারের বিভিন্ন ধারা অনুযায়ী তদন্ত শুরু করেছে।
৮২ বছর বয়সী ফারুক আব্দুল্লাহকে তদন্তকারী সংস্থা ৫ আগস্টের আগে তলব করেছিল যখন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু-কাশ্মীরকে ৩৭০ ধারা অনুযায়ী দেওয়া বিশেষ মর্যাদা বাতিল এবং রাজ্যটিকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করেছিল। ওই পদক্ষেপ গ্রহণের পরে, ফারুক আব্দুল্লাহ, তার ছেলে ওমর আবদুল্লাহ এবং পিডিপি নেত্রী মেহেবুবা মুফতিসহ রাজ্যের বেশ কিছু নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদেরকে জননিরাপত্তা আইনে আটক করা হয়। এরপর ফারুক আব্দুল্লাহ ও ওমর আব্দুল্লাহকে মুক্তি দেওয়া হয়। পিডিপি নেত্রী মেহেবুবা মুফতিকে প্রায় ১৪ মাস পরে সম্প্রতি মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
মুক্তি পাওয়ার পর তারা একজোট হয়ে ‘পিপলস অ্যালায়েন্স ফর গুপকর ডিক্লেয়ারেশন’ গঠন করেছেন। গত বছরের ৫ অগস্টের আগে উপত্যকার নাগরিকদের যে অধিকার ছিল, তা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন।
রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ ইডি’র পদক্ষেপ গ্রহণকে রাজনৈতিক প্রতিশোধ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, গুপকার ঘোষণার পরে তৈরি হওয়া পিপলস অ্যালায়েন্স গঠনের পরেই কেন্দ্রীয় সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাঁর বাবা ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ন্যাশনাল কনফারেন্স খুব শিগগিরি ইডি’র তলবের জবাব দেবে। ডাঃ ফারুক আবদুল্লাহর বাড়িতে ইডি কোনও অভিযান চালায়নি বলেও ওমর আব্দুল্লাহ মন্তব্য করেন।
জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পিডিপি নেত্রী মেহেবুবা মুফতি ওই ঘটনাকে কেন্দ্রীয় সরকারের ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করেছেন।তিনি বলেন, জম্মু-কাশ্মীরের মূলধারার সমস্ত রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের অধিকারের জন্য লড়াই করছে। রাজনৈতিক উদেশ্যে কেন্দ্রীয় সরকার এর বিরুদ্ধে এ জাতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।আস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন