অযোধ্যার পর এবার মথুরা! শ্রীকৃষ্ণের জন্মভূমির দাবিতে মামলা দায়ের মথুরার দেওয়ানি আদালতে। শ্রীকৃষ্ণের মন্দির চত্বরের পাশে অবস্থিত শাহি ঈদগাহ মসজিদ অন্যত্র সরানোর পাশাপাশি ওই চত্বরের পুরো ১৩.৩৭ একর জমি ফিরিয়ে দেয়া হোক, আবেদন জানিয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বিরাজমানের পক্ষে আদালতের দ্বারস্থ হলেন লখনউ–এর আইনজীবী রঞ্জনা অগ্নিহোত্রিসহ ছ’জন ‘কৃষ্ণ–ভক্ত’। পিটিশন দাখিল করেছেন আরো দু’জন আইনজীবী– হরিশঙ্কর জৈন এবং বিষ্ণু জৈন। আবেদনে বলা হয়েছে, ‘মামলাকারী নাবালক। তাই সেবাইতদের মাধ্যমে নিজের সম্পত্তির দাবিতে মামলা করেছেন শ্রীকৃষ্ণ বিরাজমান। নিজের সম্পত্তি রক্ষা ও পুনরুদ্ধারের সবরকম অধিকার রয়েছে মামলাকারীর। সেবাইতদের অবর্তমানে তার বন্ধুরা এই মামলা চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন।’
ভারতের সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড ও শাহি ঈদগাহ মসজিদের ট্রাস্ট বোর্ডের বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়েছে। অভিযোগ, স্থানীয় কিছু মুসলিমের সাহায্য নিয়ে শ্রীকৃষ্ণ জন্মস্থান ট্রাস্টের অন্তর্গত কাটরা কেশব দেবের জমি কব্জা করেছে ঈদগাহ মসজিদ ট্রাস্ট। ১২ অক্টোবর, ১৯৬৮ সালে শ্রীকৃষ্ণ জন্মস্থান সেবা সঙ্ঘের সঙ্গে অবৈধ সমঝোতা করে কাটরা কেশব দেবের ১৩.৩৭ একর জমি থেকে বেআইনিভাবে ২ বিঘা জায়গা দখল করেছে শাহি ঈদগাহ ট্রাস্ট। সেবা সঙ্ঘ এবং মসজিদ ট্রাস্টের ‘বেআইনি’ সমঝোতা সংক্রান্ত মামলায় ১৯৭৩ সালে মথুরার দেওয়ানি আদালত যে রায় দিয়েছিল, সেটিও খারিজ করার আবেদন জানানো হয়েছে এই পিটিশনে।
আবেদনে বলা হয়েছে, ১৬১৬ সালে ওরচার রাজা বীর সিংহদেব বুন্দেলা প্রায় ৩৩ লাখ রুপি খরচ করে ওই জায়গায় মন্দির নির্মাণ করেছিলেন। ১৬৫৮ সালে আওরঙ্গজেব দিল্লির বাদশাহ হওয়ার পর বহু হিন্দুমন্দির এবং ধর্মস্থান ধ্বংস করা হয়েছে। ১৬৬৯–’৭০ সালের মধ্যে মোগল বাহিনী মথুরা আক্রমণ করে ওই মন্দিরের একটা অংশ ভেঙে মসজিদ তৈরি করে এবং নাম দেয়া হয় ঈদগাহ মসজিদ। মোগল জমানার সরকারি দলিলেরও উল্লেখ করা হয়েছে পিটিশনে।
এতে আরো দাবি করা হয়, ১৭৭০ সালে মারাঠারা আগ্রা এবং মথুরা দখল করেছিল। ফের মন্দির পুনর্নির্মাণ করা হয়। তারপর ১৮০৩ সাল নাগাদ গোটা অঞ্চলটি দখল করে ব্রিটিশরা। পরে নিলামে পুরো জমিটি কিনেছিলেন বেনারসের রাজা পাটনি মল। জমি ফেরতের দাবি তুলে বহুবার মামলাও করেছিলেন মুসলিম না। কিন্তু প্রত্যেকবারই তা খারিজ হয়ে যায়।
১৯৯১ সালে ধর্মীয় স্থান সংক্রান্ত একটি বিশেষ আইন পাশ করা হয়। বলা হয়, কোনো মসজিদকে ভেঙে মন্দিরে বা মন্দির ভেঙে মসজিদ নির্মাণ নিষিদ্ধ। একমাত্র অযোধ্যা বিতর্কিত জমি মামলাকে এই আইনের বাইরে রাখা হয়। গত বছর অযোধ্যার মামলায় রায় দিতে গিয়ে এই আইনের উল্লেখ করেছিলেন বিচারপতিরা। বলেছিলেন, এই রায়ের উদাহরণ টেনে অন্য মামলা করা হলে তা গ্রহণ করা হবে না।
সূত্র : আজকাল
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন