তাইওয়ানে পালিয়ে যাওয়ার সময় সম্প্রতি চীনের হাতে আটক ১২ জন হংকংবাসীর বিষয়ে ‘কোনো হস্তক্ষেপ করবে না’ বলে জানিয়েছে হংকংয়ের সরকার।
১৩ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকংয়ের সরকার জানায়, ওই ১২ জনের পরিবারের পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে তাঁদের মুক্তির বিষয়ে সাহায্য চাওয়া হয়েছে।
হংকং সরকার জানিয়েছে, আটক ওই ১২ জনের অপরাধ চীনের মূল ভূখণ্ডে বিচারব্যবস্থার আওতায় পড়ে এবং হংকং প্রশাসন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজে হস্তক্ষেপ করবে না। এদিকে চীন ১২ জনের ওই দলটিকে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ আখ্যা দিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ওই দলটি হংকংয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হিসেবে সন্দেহভাজন। তাদের পরিবারকে আইনের সাহায্য নিতে বলা হয়েছে।
চীনের আরোপ করা বিতর্কিত ‘জাতীয় নিরাপত্তা আইন’ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন-বিক্ষোভে তোলপাড় হংকং। এর মধ্যে যেসব হংকংবাসী অঞ্চলটি থেকে পালাতে চাচ্ছিলেন, তাদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছে তাইওয়ান, তবে তাদের বৈধভাবে দেশটিতে যেতে হবে বলে জানানো হয়েছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে, চীন থেকে পালাতে চেষ্টা করা ওই দলটিতে ১১ জন পুরুষ এবং একজন নারী রয়েছেন, যাদের বয়স ১৬ থেকে ৩৩ বছরের মধ্যে। তারা সমুদ্রপথে তাইওয়ান যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
গত বছরের সরকারবিরোধী বিক্ষোভে দলটি জড়িত ছিল এবং তারা চীন থেকে হংকংকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করছে বলে জানায় বেইজিং।
হংকংয়ের সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী অ্যাক্টিভিস্ট অ্যান্ডি লি-ও রয়েছেন। এ আইন কেন্দ্র করে গত ১০ আগস্ট অ্যাগনেস চো এবং জিমি লাই নামে আরো দুজন গণতন্ত্রপন্থী অ্যাক্টিভিস্ট গ্রেপ্তার হন। আইনটি চালু হওয়ার পর থেকে গণতন্ত্রপন্থী অ্যাক্টিভিস্টদের অনেকেই হংকং ছেড়ে নিরাপদ দেশে পাড়ি জমাতে শুরু করেছেন।
গত ৩০ জুন হংকংয়ের জন্য নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইন কার্যকর করে চীনের আইন প্রণেতারা। নতুন আইনে বিচ্ছিন্নতাবাদ, কেন্দ্রীয় সরকারবিরোধী কার্যক্রম, সন্ত্রাসবাদ এবং জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন করে এমন যেকোনো কাজ শাস্তিমূলক অপরাধ। হংকংয়ের স্বাধিকার আন্দোলন দমনের লক্ষ্যেই আধাস্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলটির জন্য আইনটি তৈরি করে বেইজিং। নতুন আইনে উল্লিখিত অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
সূত্র : ইয়াহু নিউজ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন