স্থানের পার্থক্য ছাড়া দুটি ছবির ম্যাসেজ একই! বিষ্ময়করভাবে দুটি ছবি প্রকাশ বা ঘটনার পর মানুষের প্রতিক্রিয়া কিন্তু এক নয়!
দুটি ছবিই অমানবিক, তবে প্রথমটি থেকে দ্বিতীয় ছবিটি আরও বেশি অমানবিক!
প্রথম ছবিতে মৃত্যু নিশ্চিত জানার পরও এভাবে হাঁটু দিয়ে গলা চেপে ধরা হয়নি!
পরের ছবিতে একটি শিশুকে এমনভাবে চেপে ধরা হয়েছে, তাতে মুখ দিয়ে রক্ত গড়িয়ে মাটিতে পড়ছে! তা দেখার পর আরও শক্তভাবে চেপে ধরা হয়েছে! এবং মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে!
প্রথম ছবি আমেরিকার। এক শেতাঙ্গ পুলিশ কৃষাঙ্গ যুবককে আটকের পর এভাবে হাঁটু দিয়ে গলা চেপে ধরে হাতকড়া পড়াচ্ছে। পরে লোকটি মারা যায়! কিন্তু এরকম ঘটনা অহরহ নয়। হঠাৎই ঘটে!
আর দ্বিতীয় ছবিতে ইজরায়েলের পুলিশ এক ফিলিস্তিনি শিশুকে ধরে একই উপায়ে তার গলা হাঁটু দিয়ে চেপে ধরেছে হত্যা করার জন্য! এবং হত্যাই করেছে! এরকম ঘটনা একটি নয়। অহরহ ঘটছে ফিলিস্তিনে। আর ঘটাচ্ছে ইজরায়েল!
দুঃখজনক হলো, প্রথম ছবির একটি ঘটনার পর দুনিয়াবাসী হাহাকার করছেন। হা হুতাশা করছেন। বিলাপ করছেন। বর্ণপ্রথার জন্য অভিশাপ দিচ্ছেন। দেশ-মহাদেশ, ধর্ম-বর্ণ, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রতিবাদ, নিন্দার ঝড় বইছে। আমেরিকার মসনদ রীতিমত কেঁপে উঠছে!
অথচ দ্বিতীয় ছবির হাজারো ঘটনার পরও দুনিয়া নীরব। মুখে কুলুপ এঁটে থাকে সবাই! কেউ হা হুতাশা করে না! বিলাপও করে না! জাতিগত অভিশাপও দেয় না! দেশ-মহাদেশ, ধর্ম-বর্ণ, নারী-পুরুষ নির্বিশেষ কেউ নিন্দাও জানায় না! সেখানে ইজরায়েলের মসনদ নড়া তো দিবাস্বপ্ন!
সেটি কি ঘটনাগুলোর স্থান ভিন্ন, জাতি ভিন্ন বলে? 'মানুষ'-এর কি কোনোই মূল্য নেই তথাকথিত এই মানবিক দুনিয়ায়?
মৃত্যুর আগে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড পুলিশকে বলেছিলেন, ‘আমি নি:শ্বাস নিতে পারছি না। কষ্ট হচ্ছে।' কিন্তু পুলিশ অফিসার শোনেনি। উলটা হাঁটু দিয়ে গলা চেপে ধরে তাঁকে হাতকড়া পরানো হয়েছিল। ফ্লয়েডের এই আর্তনাদ আজ প্রতিধ্বনিত হচ্ছে পুরো দুনিয়ায়!
এবং এভাবেই! মৃত্যুর আগে হাজারো ফিলিস্তিনি শিশু, কিশোর, নারী, বৃদ্ধরাও এভাবে নিঃশ্বাস নিতে না পেরে, 'আমি নি:শ্বাস নিতে পারছি না। কষ্ট হচ্ছে।' বলে আহাজারি করেছিলেন, করছেনও! কিন্তু পুলিশ অফিসাররা শোনে না, কখনও শুনেওনি। উলটা হাঁটু দিয়ে গলা চেপে ধরে তাঁদেরকে হাতকড়া পরানো হয়। হত্যা করা হয় একের পর এক! তবে ফিলিস্তিনের নির্যাতিত কোটি মানুষের করুণ আর্তনাদ কখনই প্রতিধ্বনিত হয় না পুরো দুনিয়ায়!
কেন? তারা ফিলিস্তিনি বলে? ইজরায়েলি পুলিশকে যা খুশি করার অধিকার দিয়েছে দুনিয়াবাসী? যদি তাই হয়, তাহলে সেই দুনিয়ার মুখে একগাদা থু-থু, ঘেন্না, অভিশাপ!
শীর্ষনিউজের মন্তব্য প্রতিবেদন থেকে সংগ্রহ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন