প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস বিশ্বব্যাপী ভয়াল থাবা বসিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয়ও চলতি মাসের শুরুর দিকে এর প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। এ অঞ্চলটিতে প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি। অর্থাৎ ইউরোপ আমেরিকার মতো এখনো লাগামহীন হয়ে পড়েনি। যদিও এ সিদ্ধান্তে আসার জন্য আমাদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় জনগোষ্ঠী হলো ভারতে। গত সপ্তাহ থেকেই দেশটিতে ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নজিরবিহীন কড়াকড়ি আরোপের ফলে নিম্ন আয়ের মানুষ রয়েছে সীমাহীন দুঃখকষ্টে। এ জন্য মোদি ক্ষমাও চেয়েছেন। অন্যদিকে দরিদ্র মানুষের কষ্ট লাঘবে বড় অঙ্কের আর্থিক প্রণোদনাও ছেড়েছে মোদি সরকার।
এদিকে জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, গতকাল পর্যন্ত ভারতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১০৭১ জন, মারা গেছেন ২৯ জন। করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১০০। এদিকে পাকিস্তানে আক্রান্তের সংখ্যা গতকাল পর্যন্ত বেড়েই চলেছে। দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তানই তুলনামূলক বেশি নাজেহাল হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশটিতে সর্বমোট আক্রান্ত হয়েছেন ১৬৬৪ জন, এর মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন ২১ জন আর সুস্থ হয়েছেন ২৮ জন। আক্রান্তের শুরুর দিকে দেশটির সিন্ধু প্রদেশের অবস্থা খারাপ থাকলেও বর্তমানে সেটিকে ছাড়িয়ে গেছে পাঞ্জাব। গতকাল সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে সিন্ধু প্রদেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫০৮ জন আর পাঞ্জাবে ৬৩৮ জন। গতকাল পাকিস্তানে নতুন করে ৫ জন মারা যাওয়ায় পরিস্থিতি নেতিবাচক দিকে যাচ্ছে বলে মনে করা হলেও দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তা দাবি করেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার অপর দেশ শ্রীলংকায় গত শনিবার করোনা ভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সেখানে এখন পর্যন্ত ১১৩ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব নিশ্চিত হওয়া গেছে। করোনার বিস্তার রোধে কিছু জেলায় কারফিউ জারি করা হয়েছে ও কিছু এলাকাকে পৃথক করে রাখা হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে কম গতিতে করোনা ছড়িয়েছে নেপালে। এখন পর্যন্ত সেখানে চারজনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ৩৪ বছর বয়সী একজন সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে দেশটিতে পৌঁছলে কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসেন। দেশব্যাপী লকডাউন অমান্য করায় রাজধানী কাঠমান্ডুতে দুই হাজারের বেশি লোকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় কর্তৃপক্ষ। এদিকে কিছু মহল বলছে, তাপমাত্রা বেশি থাকার কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় সংক্রমণের প্রকোপ মারাত্মক রূপ ধারণ করেনি। যদিও এর গ্রহণযোগ্য তথ্যপ্রমাণ এখন পর্যন্ত নেই। তবে করোনা ভাইরাস যদি বেশি দিন সক্রিয় থাকে তা হলে সামনে শীতকালে দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন করে আক্রমণ করতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন