৩৭৩৭ টন প্লাস্টিক বর্জ্য পশ্চিমা দেশগুলোতে ফেরত পাঠিয়েছে মালয়েশিয়া। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশে এসব বর্জ্য পাঠানো হয়েছে। মালয়েশিয়া সরকার সোমবার এ আদেশ দিয়েছে।
দেশটির পরিবেশমন্ত্রী ইও বি ইন বলেছেন, ইতোমধ্যে প্লাস্টিক বর্জ্য ভর্তি ১৫০টি কন্টেইনার ১৩টি দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৪৩টি ফ্রান্স, ৪২টি যুক্তরাজ্য, ১৭টি যুক্তরাষ্ট্র ও ১১টি কানাডাতে পাঠানো হয়েছে।
২০১৭ সালে প্লাস্টিক আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এক সময়কার বিশ্বের সবচেয়ে বেশি প্লাস্টিক পণ্য পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকারী দেশ চীন। এরপর থেকেই মূলত বিভিন্ন দেশ থেকে প্লাস্টিক এসে ভরে গেছে মালয়েশিয়া। তবে মালয়েশিয়া এসব প্লাস্টিক বর্জ্য ফেরত দিয়ে বলেছে, মালয়েশিয়া বিশ্বের আবর্জনা ফেলার জায়গা নয়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন প্লাস্টিক আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরই মূলত বিভিন্ন চীনা প্রতিষ্ঠান মালয়েশিয়ামুখী হয়েছে। এবং কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক আমিদানি করা হচ্ছে দেশটিতে।
যুক্তরাজ্যে যেসব প্লাস্টিক বর্জ্য ফেরত পাঠানো হচ্ছে সেগুলো দিয়ে কী করা হবে তা স্পষ্ট নয়। তবে ধারণা করা হচ্ছে, এসব প্লাস্টিক আবার ঘুরেফিরে অন্য দেশেই যাবে। এগুলোর স্থান হতে পারে পোল্যান্ড অথবা ইন্দোনেশিয়ায়। কারণ, এ দেশ দুটিতেও ব্যাপকভাবে প্লাস্টিক বর্জ্য পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করা হয়। যুক্তরাজ্য তার প্লাস্টিক বর্জ্যের দুই-তৃতীয়াংশই বাইরের দেশে রফতানি করে থাকে।
তবে যুক্তরাজ্যের পরিবেশমন্ত্রী নিশ্চিত করে বলেছেন, এসব প্লাস্টিক বর্জ্য ফেরত আসার দায় একমাত্র সেই কোম্পানির যারা প্রথমে রফতানি করেছে।
মালয়েশিয়ার সরকারি কর্মকর্তারা আশা করছেন, তারা নিকট ভবিষ্যতে আরও ১১০ কন্টেইনার ভর্তি প্লাস্টিক বর্জ্য ফেরত পাঠাতে সক্ষম হবেন। যার মধ্যে ৬০ কন্টেইনার প্লাস্টিক এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।
মালয়েশিয়ার পরিবেশমন্ত্রী ইও বি ইন বলেছেন, মালয়েশিয়া যাতে বিশ্বের প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলার ভাগাড়ে পরিণত না, সেজন্য যা যা করণীয় তা-ই করা হবে। তিনি আরও বলেন, পরিবেশ মন্ত্রণালয় প্লাস্টিক বর্জ্যসহ সব ধরনের দূষণের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখবে।
রফতানিকারক দেশ ও আমদানি সংশ্লিষ্ট জাহাজ কর্তৃপক্ষকেই এসব কন্টেইনার ফেরতের খরচ বহন করতে হবে বলেও জানিয়েছে মালয়েশিয়া। এ বিষয়ে পরিবেশমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘এজন্য আমরা একটি কানাকড়িও খরচ বহন করব না। আমরা এটা দিতে বাধ্য নই।’
তবে মালয়েশিয়ায়ই প্রথম কোনো দেশ নয়, যারা প্লাস্টিক বর্জ্য সংশ্লিষ্ট দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে। এর আগে ইন্দোনেশিয়া শত শত কন্টেইনার ভর্তি প্লাস্টিক বর্জ্য উৎস দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। ফিলিপাইনও বিপুল পরিমাণ বর্জ্য কানাডাতে ফেরত পাঠিয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন