ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। শুক্রবার ওই আদেশের অনুলিপি প্রকাশ করেছে হোয়াইট হাউস। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্টিভ মিউচিন। তিনি বলেন, ইরাকে মার্কিন সেনাদের ওপর ইরানের হামলার ফলেই তেহরানের ওপর নতুন করে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
স্টিভ মিউচিন জানান, নতুন নিষেধাজ্ঞায় মূলত ইরানের শিল্পখাতকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে। দেশটির নির্মাণ, বস্ত্র, খনি, ইস্পাত ও লোহা শিল্পের মতো খাতগুলো নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে।
এছাড়া ইরানের ৮ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকেও নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে। হোয়াইট হাউসের দাবি, ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ওই কর্মকর্তারা জড়িত ছিলেন।
দুনিয়াজুড়ে তেহরানের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের লাগাম টেনে ধরতেই এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী।
নিষেধাজ্ঞায় ইরানকে দুনিয়াজুড়ে সন্ত্রাসের বড় ধরনের মদদদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া মার্কিন ঘাঁটি ও সেনাদেরকে হুমকির মুখে ফেলার জন্যও দেশটিকে দায়ী করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
এর আগে গত বুধবারই ইরানের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞার আভাস দেয় ওয়াশিংটন। এদিন ট্রাম্প ঘোষণা করেন, ইরান তার আচরণ পরিবর্তন না করা পর্যন্ত দেশটির ওপর নতুন শক্তিশালী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত কেলি ক্রাফট জানান, তার দেশ ইরানের সঙ্গে যে কোনও ধরনের নিঃশর্ত আলোচনায় বসতে প্রস্তুত রয়েছে। ৯ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা পরিষদে পাঠানো এক চিঠিতে ওয়াশিংটনের এমন অবস্থানের কথা জানান তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে গত ৩ জানুয়ারি বাগদাদে বিমান হামলা চালিয়ে ইরানের প্রভাবশালী কুদস বাহিনীর কমান্ডার কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্র। এই হামলার ‘মারাত্মক প্রতিশোধ’ হিসেবে ৮ জানুয়ারি সকালে ইরাকের মার্কিন বিমান ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় তেহরান। এরপর জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে পরমাণু অস্ত্র পরিত্যাগের শর্তে ইরানকে শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দেন ট্রাম্প। পরে এ বিষয়ে জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদকে চিঠি দেয় ওয়াশিংটন।
এর আগেও তেহরানের সঙ্গে নিঃশর্ত আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে বরাবরই এতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে ইরান। দেশটি বলছে, নিষেধাজ্ঞা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত ওয়াশিংটনের সঙ্গে কোনও আলোচনা হবে না।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন