ভারতে নতুন নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে আসাম ও ত্রিপুরা রাজ্যে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এদিকে শুক্রবার থেকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ চলছে। বেশ কয়েকটি যানবাহনে আগুন দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। যে প্রক্রিয়ায় আন্দোলন চলছে তার তীব্র বিরোধীতা করছেন ভারতের মুসলিম বিশিষ্টজন ও ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিনিধিরা। তারা বলছেন, ক্ষোভের যায়গায় যাই থাকুক, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া অন্যায়। গণতান্ত্রিক উপায়ে বিরোধীতা নিশ্চয় করতে হবে। কিন্তু হিংসার পথ বেছে নেওয়া চলবে না।
ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকী বলেছেন, কেন্দ্রের নাগরিকত্ব আইন মানুষ মেনে নিতে পারছেন না। তাই স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে রাস্তায় নেমে তারা প্রতিবাদ করছেন। কিন্তু শুক্রবার থেকে রাজ্যের বেশ কিছু জায়গায় যে পদ্ধতিতে ট্রেনে পাথর ছোড়া, স্টেশন মাষ্টারের ঘরে আগুন জ্বালানো থেকে শুরু করে বাসে আগুন জ্বালানো হয়েছে তা মেনে নেওয়া যায় না।
ত্বহার আবেদন, আন্দোলন অবশ্যই করুন। কিন্তু দয়া করে কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। এমন হিংসাত্মক আন্দোলন করলে যাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা হচ্ছে সেই রাজনৈতিক দলই সুবিধা পাবে।
রাজ্যের সমস্ত মানুষের প্রতি অল ইন্ডিয়া মিল্লি কাউন্সিলের রাজ্য সভাপতি ফজলুর রহমানের আবেদন, কারও প্ররোচনায় পা না দিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করুন। নচেৎ আন্দোলনের গতিমুখ নষ্ট হবে।
জামায়াতে ইসলামি হিন্দের রাজ্য সভাপতি মাওলানা আবদুর রফিকের কথায়, এই আইনের বিরুদ্ধে জনগণকে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আন্দোলন করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলনে হিংসার আশ্রয় নিলে কখনও ভাল ফল আসতে পারে না।
বেঙ্গল ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুহাম্মদ ইয়াহিয়া জানাচ্ছেন , বিজেপি সরকারের ধর্মীয় বিভাজনের নয়া আইনের বিরোধীতা করে মানুষ রাস্তায় নেমেছেন। কিন্তু আন্দোলন করতে গিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনা আন্দোলনের গতিমুখটাই বদলে দেবে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
প্রবীণ অধ্যাপক ওসমান গনির পর্যবেক্ষণ, ভারতীয় মুসলিমদের এই করুণ পরিণতি দেখে আমার ঘুম নষ্ট হয়েছে। মানুষ অনেক কষ্টে যন্ত্রণায় নয়া নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন। কিন্তু আন্দোলনকারীদের প্রতি আবেদন, শান্তির সঙ্গে গঠনমূলক আন্দোলনের পথ বেছে নিন। আন্দোলনের গতিমুখ নষ্ট হলে আন্দোলনকারীদেরই ক্ষতি হবে। সূত্র: আনন্দবাজার
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন