মিয়ানমার সেনাদের জ্বালাও-পোড়াও, ধর্ষণ-নির্যাতন আর গণহত্যার মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা নাগরিকদের চাল সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে চীন। প্রাথমিকভাবে রোহিঙ্গাদের জন্য আড়াই হাজার টন চাল পাঠাবে দেশটি। এর মধ্যে প্রথম দফায় চলতি সপ্তাহেই চট্টগ্রাম বন্দরে আসবে ২০০ টল চাল।
রোহিঙ্গা সংকট ইস্যুতে মিয়ানমারের কথিত বন্ধুরাষ্ট্র চীন হঠাৎ করেই এত বড় সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়ায় বাংলাদেশ বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামাল গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রোহিঙ্গাদের চাল সহায়তার জন্য চীনের সঙ্গে ইতোমধ্যে একটি চুক্তিও হয়েছে। পর্যায়ক্রমে কয়েক দফায় ঢুকবে এই চাল।
মানবিক ত্রাণ সহায়তা হিসেবে রোহিঙ্গাদের জন্য চীনের পাঠানো এই বিপুল পরিমাণ চাল বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে শুল্ক/কর মওকুফ করতে গেল ২৬ নভেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীনকে বরাবরই পাশে চেয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু বারবারই চীনের আনুকূল্য পেয়েছে মিয়ানমার। তবে গেল জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পরই রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াতে শুরু করে চীন। এমনকি রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরত পাঠাতে বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে আশ্বস্তও করা হয়।
১৯৯১-৯২ সালে ৩৩ হাজার ৫৪২ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। তাদের ফেরত নেয়া হয়নি। গত প্রায় তিন দশক ধরে তারা বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল টেকনাফ ও উখিয়াতেই স্থায়ী অবস্থান করছিল। এরইমধ্যে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে মিয়ানমারে সেনা অভিযান শুরু হলে নতুন করে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশ আশ্রয় নেয়।
গেল দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা-ইউএনএইচসিআর’সহ জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, আন্তর্জাতিক ও দেশীয় এনজিওগুলোর সহায়তায় রোহিঙ্গাদের ভরণ-পোষণ চলছে।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন