বারো সংখ্যাটি সর্বনাশের কারণ! ১২ তেই বদলায় দিন-রাত। ১২ মাসে পেরিয়ে যায় বছর। আবার ১২ বছরের ব্যবধানে পাল্টায় যুগ। আবার সিদ্ধান্তে ব্যর্থ হলে জীবন-যাপনেও বাজে ১২টা। এই সব ধারণা থেকেই পৃথিবীর একটি দেশে ঘড়ির কাঁটায় হয়তো রাখা হয়নি ১২টা!
সোলোথার্ন শহর। ছবির মতো সুন্দর সুইজারল্যান্ডের উত্তর পশ্চিমের এই শহরটি পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয়। তবে ঘুরতে আসা পর্যটকরা কিছু সময়ের জন্য থমকে যান। এর কারণ শহরের কেন্দ্রস্থলের ‘টাউন স্কয়ার’ সামনে লাগানো ঘড়ির দিকে তাকিয়ে। এই ঘড়িটা আর দশটা ঘড়ির মতো নয়। পৃথিবীর সব ঘড়িতে যেখানে ১ থেকে ১২ পর্যন্ত চিহ্ন রয়েছে, সেখানে এই ঘড়িতে রয়েছে ১১টি ঘর। অর্থাৎ এই ঘড়িতে কখনো ১২টা বাজেনা।
কারণ কি? উৎসুক হয়ে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই মিলবে অবাক করা তথ্য। শুধু ঘড়ি নয়, শহরের অনেক কিছুতেই রয়েছে ১১ সংখ্যার আধিক্য। যেমন - শহরে রয়েছে ১১টি জাদুঘর, এগারোটি গির্জা, এগারটি ঝর্নাসহ আরও অনেক কিছু।কি বিশেষত্ব রয়েছে এই ১১ সংখ্যাটির?
এই উত্তর খুঁজতে ফিরে যেতে হবে হাজার বছর আগে। যখন এই নগরীর গোড়াপত্তন হয়েছিল। একাদশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে এই নগরীতে ইলভ নামে এক জামার্নির আগমন ঘটেছিল। যিনি এই নগর প্রতিষ্ঠায় অনেক পরিশ্রম করেছিলেন। তবে ওই সময় ইলভ সফল না হলেও সোলোথার্নবাসী তাকে ভোলেনি। তারা ইলভ স্মরণে তার নামের সঙ্গে মিল রেখে শহরে ইলেভেন নামে কয়েকটি স্থাপনা তৈরি করে। সেই থেকে শুরু। এরপর যতদিন গেছে এই শহরের সাথে এগারো সংখ্যাটি জড়িয়ে গেছে কাকতালীয়ভাবে।
১২১৫ সালে যখন সালে যখন এই শহরে কাউন্সিল নির্বাচন হয় তখন এগারো জনকে নির্বাচিত করা হয়। ১৪৮১ সালে সোলোর্থান সুইস কনফেডারেশনের এগারো তম প্রদেশ হিসেবে যুক্ত হয়। ওই সময়ে শহরে ১১ জন শহর রক্ষাকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। এরপর পনের শতকের গোড়ার দিকে যখন শহরে সেইন্ট আরসু গির্জা নির্মাণ করা হয় তখন গির্জায় ১১টি দরজা, এগারোটি জানালা,১১টি রো, এগারো ঘণ্টা ও এগারো রকমের পাথর ব্যবহার করা হয়েছিল।
মোটকথা এই শহরবাসীর ১১ সংখ্যাটির প্রতি রয়েছে এক প্রাগৈতিহাসিক দুর্বলতা, যা তারা হাজার বছর ধরে ব্যবহার করে আসছে পরম যত্নে আর মমতায়।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন