চীনের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই গণতন্ত্রের দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন হংকংয়ের বাসিন্দারা। রোববারের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে ১৭ লাখ মানুষ অংশ নেন। গণতন্ত্রপন্থীদের বিক্ষোভে সামরিক অভিযান না চালানোর জন্য বেইজিংয়ের ওপর চাপ প্রয়োগে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এরমধ্যেই, বেইজিংয়ের তিয়েনআনমেন স্কয়ারের মতো গণহত্যার ঘটনা হংকংয়েও ঘটতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
রোববার হংকংয়ের সাপ্তাহিক বিক্ষোভে অন্তত ১৭ লাখ মানুষ অংশ নেন। যদিও পুলিশ বলছে, এ সংখ্যা ১ লাখ ২৮ হাজারের মতো। এদিন, হংকংয়ের প্রধান প্রধান সড়ক ও ভিক্টোরিয়া পার্কে সমাবেশ করেন তারা। গেলো সপ্তাহগুলোতে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘাতের ঘটনা ঘটলেও এদিনের সমাবেশ ছিল শান্তিপূর্ণ।
বৃষ্টির মধ্যেও, সমাবেশ অব্যাহত রাখেন বিক্ষোভকারীরা। এ বিক্ষোভ চলে রাত অবধি। সন্ধ্যায় হংকংয়ের সরকারি ভবনে লেজার শো'য়েরের মাধ্যমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। হংকং জুড়ে যখন শান্তিপূর্ণ আন্দোলন, তখন শিনজিয়েন সীমান্তে চীনের অধাসামরিক বাহিনীকে প্রশিক্ষণরত অবস্থায় দেখা যায়। গেলো কয়েকদিন ধরেই সেখানে অবস্থান করছে চীনা বাহিনী।
এদিন, হংকংয়ের প্রশাসন জানায় সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ১শ' ৮০ পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে প্রশাসন। সংঘাতের নিন্দা জানিয়ে ফ্রান্স, লন্ডন, ফিলিপিন্স ও অস্ট্রেলিয়ায় সমাবেশ করেছেন চীনারা। এসময়, তারা একজাতি, এক চীন নীতির স্লোগান দেন।
বিক্ষোভকে বরাবরই বিদেশি শক্তির ইন্ধন বলে অভিযোগ করে আসছে চীন। আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে বেইজিং। এ অবস্থায়, তিন দশক আগে চীনের বেইজিংয়ের তিয়েনআনমেন স্কয়ারে ঘটা গণহত্যার মতো ঘটনা হংকংয়েও ঘটতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
অপরাধীদের বিচারের জন্য চীনের মূলখণ্ডে পাঠানোর বিধান রেখে হংকংয়ের পার্লামেন্ট একটি বিল উত্থাপনের পরই ৩১শে মার্চ সেখানে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভের জেরে বিলটি স্থগিত করে প্রশাসন। বর্তমানে বিলটি পুরোপুরি বাতিল, বিক্ষোভে পুলিশি নির্যাতেনের নিরপেক্ষ তদন্ত, আটককৃতদের মুক্তি, গণতান্ত্রিক অধিকারসহ পাঁচটি দাবিতে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন হংকংয়ের বাসিন্দারা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন