ইরানের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা দেশটির জনপ্রিয় একটি ট্যাক্সি অ্যাপ বন্ধের দাবি জানিয়েছে। ট্যাক্সিতে একজন নারী হিজাব না পরায় ট্যাক্সি চালক মাঝ রাস্তায় তাকে নামিয়ে দেওয়ার পরই এমন দাবি তোলা হয়েছে।
এর পর ওই নারী টুইটারে ট্যাক্সি চালকের ছবি দিয়ে লেখেন- ‘এই সেই চালক যিনি মাঝ রাস্তায় আমাকে ট্যাক্সি থেকে নামিয়ে দেন’।
স্ন্যাপ নামে ওই অ্যাপ কোম্পানি থেকে অভিযোগকারীর কাছে ক্ষমা চাওয়া হয়। ওই নারী আরো জানান, সেইসঙ্গে ওই চালককে কড়াভাবে শাসানো হবে বলে তাকে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে কোম্পানির পক্ষ থেকে।
এদিকে, দেশটির রক্ষণশীলরা কোম্পানির এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করছেন।
তারা বলছেন, যারা ইসলামের মূল্যবোধকে সম্মান জানাতে পারে না তাদের সামনে মাথা নত করা উচিত না।
বিবিসি অনলাইন বলছে, পার্সিয়ান ভাষায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হ্যাশট্যাগ ‘বয়কট স্ন্যাপ’ চালু করা হয়েছে, যেটা শনিবার থেকে ৬৬ হাজার বারের বেশি ব্যবহার করা হয়েছে।
একজন টুইট করেছেন ‘ওই নারীর অশালীন আদব-কায়দার জন্য যদি কোম্পানির ম্যানেজার ক্ষমা চেয়ে থাকেন তাহলে স্ন্যাপ অ্যাপ বন্ধের পাশাপাশি তাকে ইসলামিক প্যানেল কোডে বিচার করা উচিত। কারণ তিনি ওই চালককে শাসানোর মাধ্যমে নারীদের এ ধরনের অশালীনতাকে উস্কে দিয়েছেন।’
১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর ইরানের কর্তৃপক্ষ দেশটিতে নারীদের জন্য হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করে।
ইরানের একটি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সায়িদ আবেদ নামের ওই চালক বলেছেন ‘যদি পুলিশ দেখতো তার যাত্রী হিজাব পরে নেই তাহলে তাকে জরিমানা করতো’।
তিনি মনে করছেন, তিনি যা করেছেন সেটা ছিল তার ‘ধর্মীয় দায়িত্ব’।
এদিকে, ইরানের এরোস্পেস কমান্ডার অব দ্য ইসলামিক রিভিউলিশন গার্ডস কর্পসের ব্রিগেডিয়ার জেনারের আমির আলী হাজিজেদেহ ওই চালকের সাথে দেখা করে তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
এর পর দুটি ঘটনা ঘটেছে।
প্রথমটি হলো- স্ন্যাপ কোম্পানি ওই চালকের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। কোম্পানিটি এক বিবৃতিতে বলেছে, চালক তাদের কোম্পানিতে সানন্দে কাজ করতে পারেন।
অন্যদিকে, ওই নারী তার প্রথম টুইটটি মুছে ফেলেছেন এবং তিনিও ক্ষমা চেয়েছেন।
‘আমি স্ন্যাপ কোম্পানি, চালক এবং যারা এই ঘটনা শুনে কষ্ট পেয়েছেন তাদের সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি’- লিখেছেন তিনি।
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি ঘোষণা করছি, আমি আমার দেশের আইন মানতে বাধ্য’।
দেশটির পুলিশ সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, হিজাবের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার বিক্ষোভে অংশ নিলে ১০ বছর পর্যন্ত সাজা হতে পারে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন