ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞা সমর্থন করলে তার পরিণতি সম্পর্কে সরাসরি হুমকি দিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷ জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী অবশ্য উত্তেজনা এড়াতে যাবতীয় কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেবার অঙ্গীকার করেছেন৷
অ্যামেরিকা ও ইরানের মধ্যে সংঘাত পুরোপুরি যুদ্ধের আকার নিতে পারে, এমন আশঙ্কা আর উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ বিশেষ করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফলে ইরানের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় সে দেশের নেতৃত্ব মরিয়া হয়ে উঠেছে৷ আগামী জুলাই মাসের মধ্যে ইউরোপ, চীন ও রাশিয়া ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য স্বাভাবিক করতে না পারলে সে দেশ পরমাণু চুক্তি অন্তত আংশিকভাবে বর্জন করার হুমকি দিয়েছে৷ এমন প্রেক্ষাপটে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস তাঁর ইরান সফরে কোনো বড় কূটনৈতিক সাফল্যের আশা করেন নি বটে, কিন্তু তেহরানে তাঁর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভাদ জরিফ যে পশ্চিমা জগতের বিরুদ্ধে খোলাখুলি হুমকি দেবেন – এমনটাও তিনি ভাবতে পারেন নি৷
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে ইরানের বিরুদ্ধে ‘অর্থনৈতিক যুদ্ধ' চালানোর বিষয়ে সাবধান করে দেন জরিফ৷ তাঁর মতে, যারা এই যুদ্ধ পরিচালনা করছে বা তার প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে, তারা নিরাপদ থাকার আশা করতে পারে না৷ গোটা অঞ্চলে উত্তেজনা কমাতে এই অর্থনৈতিক যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে, বলেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷ এ ক্ষেত্রে জার্মানি তথা ইউরোপীয় ইউনিয়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন৷জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সিরিয়া ও ইয়েমেনে যুদ্ধ চললেও সৌভাগ্যবশত ইরানে কোনো যুদ্ধ চলছে না৷ তাঁর মতে, পরিস্থিতি সে রকম রাখতে তাঁরা সব কিছু করতে চান৷ তবে গোটা অঞ্চলে উত্তেজনা দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে৷ সামান্য ঘটনাও হিংসায় ইন্ধন যোগাতে পারে৷ তাই যে কোনো অবস্থায় এমন পরিস্থিতি এড়িয়ে যেতে সব কিছু করতে হবে বলে মনে করেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷ তিনি ইরানের নেতৃত্বের উদ্দেশ্যে পরমাণু চুক্তি মেনে চলার ডাক দেন৷ওয়াশিংটন অবশ্য ইরানের হুমকির তোয়াক্কা করছে না৷ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, পরমাণু ব্ল্যাকমেল কাজে লাগিয়ে অন্যান্য দেশকে ভয় দেখানো তেহরানের বিপ্লবি প্রশাসনের বৈশিষ্ট্য৷ইরান সফরের পর হাইকো মাস সার্বিকভাবে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন৷ মঙ্গলবার সুইডেনে পরমাণু শক্তিধর নয়, এমন ১৮টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনের আগে তিনি গোটা বিশ্বে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ ও পরমাণু অস্ত্র প্রসার রোধের উদ্যোগ সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করেছেন৷ তাঁর মতে, এই নেতিবাচক প্রবণতার বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে৷ তাঁর মতে, ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে৷ উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংলাপেও কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না৷ ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যে স্টার্ট চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর সম্ভাবনা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে৷ উল্লেখ্য, বিশ্বের বিভিন্ন সংকটের ক্ষেত্রে ট্রাম্প প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে সংশয় বাড়ছে৷
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন