যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন তেরেসা মে। আগামী ৭ জুন পদত্যাগ করছেন তিনি। মে’র পদত্যাগের ঘোষণার পর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে- কে হচ্ছেন তার উত্তরসূরি।
এরই মধ্যে কয়েকজনের নাম সামনে এসেছে। এ বিষয়ে কনজারভেটিভ নেতা পিটার বোন বলেন, ‘সম্পর্ক ছেদের পক্ষের কেউ’ পরবর্তী নেতা হবেন।
তিনি হতে পারেন এস্টার ম্যাকভি, ডমিনিক রাব, ডেভিড ডেভিস বা বরিস জনসন।’ তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়া আমাদের এমন একজনকে প্রয়োজন যিনি বিশ্বমঞ্চে মাথা উঁচু করে চলতে পারবেন এবং যিনি পরবর্তী নির্বাচনে জিতবেন। আমার মনে হয় সঠিক ব্যক্তি বরিস জনসন।’ পিটার বোনের কথায় গুরুত্বপূর্ণ সবার কথা উঠে এসেছে।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন জুলাই মাসে পদত্যাগ করেন। এরপর থেকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। গত সপ্তাহে তিনি চূড়ান্তভাবে এ পদে লড়াইয়ের ঘোষণা দেন। তিনি কট্টর ব্রেক্সিটপন্থী। ব্রেক্সিটের পক্ষের আরেক নেতা ডমিনিক রাব।
ব্রেক্সিট সেক্রেটারি পদ থেকে গত বছর পদত্যাগ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী পদের দৌড়ে আরও রয়েছেন পরিবেশমন্ত্রী মাইকেল গভ। প্রথমদিকে নেতৃত্ব বাছাইয়ে তিনি বরিস জনসনকে সমর্থন দিচ্ছিলেন। পরে নীতিগত সিদ্ধান্তে মনোমালিন্যের কারণে তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন তিনি। এ পদের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভেদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট, অ্যান্ডিউ লিডসামসহ অনেকে রয়েছেন।
ব্রেক্সিট কীভাবে বাস্তবায়ন হবে তা নিয়ে মে’র পরিকল্পনাটি ইইউ নেতাদের অনুমোদন পেয়েছিল। কিন্তু ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে এটি পরপর তিনবার তোলা হলেও তা পাস হয়নি। বিরোধী দল লেবার পার্টির সঙ্গে আলোচনা করে সংশোধিত আরেকটি পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন তিনি। কিন্তু তার এ পরিকল্পনা নিয়ে উভয় দলই তীব্র সমালোচনা করে। ফলে তখনই স্পষ্ট হয়ে যায় মে’র নতুন এ পরিকল্পনা আলোর মুখ দেখবে না।
এদিন পদত্যাগের ঘোষণা দেয়ার সময়ই কেঁদে ফেলেন মে। কান্নায় চোখ ভিজে আসে। কণ্ঠ ধরে যায়। গাল-মুখ কুচকে ওঠে। ব্রেক্সিট প্রশ্নে এমপিদের একজোট করতে ব্যর্থ মে শুক্রবার সকালে কনজারভেটিভ পার্টি প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। ২০১৬ সালে ব্রেক্সিট গণভোটের পর এ নিয়ে দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের ঘটনা ঘটল।
ডাউনিং স্ট্রিট থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে মে বলেন, ‘এমপিদের বোঝাতে আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। দুঃখজনক হল- আমি তাদের বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছি।
যুক্তরাজ্যের স্বার্থে এ বিষয়টি এগিয়ে নেয়ার জন্য একজন নতুন প্রধানমন্ত্রীর প্রয়োজনীয়তা এখন আমার কাছে স্পষ্ট।’ ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে সম্পর্ক ছেদের প্রক্রিয়া নিয়ে তাড়াহুড়া থাকায় কনজারভেটিভ পার্টি এ সপ্তাহেই নতুন নেতা নির্বাচনের কাজ শুরু করতে পারে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন