এক দিকে ওবিওআর (ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড) মহাপ্রকল্পে বাংলাদেশকে কাছে টানা, অন্য দিকে প্রস্তাবিত বিসিআইএম (বাংলাদেশ, চীন, ভারত, মিয়ানমার) অর্থনৈতিক করিডরকে সামনে এনে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের সঙ্গে তাকে যুক্ত করা। চীনের এই যৌথ কৌশল ভারতের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করল বলে মনে করছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভারতে নতুন সরকার আসার পরে এই করিডরটি নিয়ে ভারতের সঙ্গে নতুন করে আলোচনা করবে চীন, এমন ইঙ্গিত মিলেছে। এ বার বাংলাদেশের স্বার্থকে করিডরের সঙ্গে আরো বেশি করে তারা যুক্ত রাখবে, যা ভারতের পক্ষে অগ্রাহ্য করা সম্ভব হবে না।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ঝাং জুও জানিয়েছেন, বিসিআইএম অর্থনৈতিক করিডর বাস্তবায়নের মধ্যেই বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সমস্যার সমাধান লুকিয়ে রয়েছে। পাশাপাশি জানানো হয়েছে, চীনের মহাযোগাযোগ প্রকল্প ওবিওআরে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হতে চলেছে বাংলাদেশ।
প্রস্তাবিত এই বিসিআইএম প্রকল্প নিয়ে বেইজিংয়ের সঙ্গে নয়াদিল্লির ঠান্ডা লড়াই দীর্ঘদিনের। কূটনীতিকদের মতে, ঘোরতর আপত্তি থাকা সত্ত্বেও বিসিআইএম নিয়ে প্রকাশ্যে নিজেদের অসন্তোষ জানাতে পারে না ভারত। কারণ বাংলাদেশ ও মিয়নমারের উন্নয়নের আকাঙ্ক্ষা এই প্রকল্পটির সঙ্গে যুক্ত। অথচ ভারতের আপত্তির প্রধান কারণটি নিরাপত্তাজনিত। বিসিআইএম রূপায়িত হলে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চল চীনের সামনে হাট করে খুলে দিতে হবে। ওই এলাকার স্পর্শকাতরতার কথা মাথায় রেখে যা চায় না ভারত। বরং জাপান, সিঙ্গাপুরের মতো রাষ্ট্রগুলোর বিভিন্ন বিনিয়োগ প্রকল্প উত্তরপূর্বাঞ্চলে এনে সেখানকার মানুষের মন জয়ের চেষ্টা হয়েছে গত পাঁচ বছরে। উদ্দেশ্য চীন যাতে সেখানে কোনো প্রভাব তৈরি করতে না পারে। এখন রোহিঙ্গা সমস্যার বিষয়টিকে সামনে আনার পরে এই করিডর প্রশ্নে ঢাকা পুরো সমর্থন নিয়ে বেইজিংয়ের পাশে থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন