ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন তারা আবারো ফিলিস্তিনি নেতাদের হত্যার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন।

গত এক দশকে সন্ত্রাসবাদ সারা বিশ্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু দখলদার ইসরাইল গত তিন দশকের বেশি সময় ধরে লেবানন ও ফিলিস্তিনি নেতাদের বিরুদ্ধে এবং ইরানের বিজ্ঞানীদের বিরুদ্ধে গুপ্তহত্যা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।

ইসরাইল গত শুক্রবার থেকে গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে হামলা শুরু করে। কিন্তু ফিলিস্তিনিরা পাল্টা হামলা শুরু করলে মিশরের মধ্যস্থতায় মাত্র চার দিন পর ইসরাইল যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে বাধ্য হয়। ইসরাইল গত বছর অক্টোবরেও গাজায় হামলা চালিয়ে ফিলিস্তিনিদের পক্ষ থেকে পাল্টা প্রতিরোধের মুখে মাত্র দুই দিনের মাথায় যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিল।

ধারণা করা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনিদের মোকাবেলায় চরম হতাশা ও দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে রয়েছেন। ইসরাইলের সাবেক সেনা প্রধান বনি গান্তেস এ ব্যাপারে বলেছেন, গত ছয় মাসে এই নিয়ে দুইবার নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনিদের মোকাবেলায় আত্মসমর্পণে বাধ্য হলেন।

দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু গত এক দশক ধরে গাজায় হামলা ও অবরোধের মাধ্যমে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ যোদ্ধাদেরকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করার চেষ্টা চালিয়ে এসেছেন যাতে হামাস ও ইসলামি জিহাদ আন্দোলন প্রতিরোধ সংগ্রাম থেকে সরে আসে। কিন্তু আজ পর্যন্ত ইসরাইলের সে আশা পূরণ হয়নি। ইসরাইলের জ্বালানিমন্ত্রী ইউভাল স্টাইনয বলেছেন, গাজা সংকটের কোনো সমাধান দেখতে পাচ্ছি না এবং ৩০ বছর পরও গাজা এখনো আমাদের জন্য হুমকি হয়ে আছে।

এভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যর্থ হওয়ার পর ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এখন ফিলিস্তিনি নেতাদেরকে সরাসরি হত্যার হুমকি দিলেন। অবশ্য এর আগেও তারা বিভিন্ন সময়ে ফিলিস্তিনি নেতাদেরকে হত্যা করেছে বা হত্যার হুমকি দিয়েছে। নতুন করে হত্যার হুমকি দেয়া থেকে বোঝা যায় প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ধারণা ফিলিস্তিনি নেতাদের হত্যার মাধ্যমে ওই অঞ্চলের প্রতিরোধ সংগ্রামীদের দমন করা যাবে।

কিন্তু এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, তার এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। কারণ নতুন করে হত্যার ঘোষণা দেয়ার বহু আগে থেকেই ইসরাইল ফিলিস্তিনি নেতাদের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ড চালিয়ে আসছে। কিন্তু তারপরও ইসরাইল বিরোধী প্রতিরোধ সংগ্রাম থেকে ফিলিস্তিনিরা পিছিয়ে আসেনি। তারাতো দুর্বল হয়নি বরং আগের চেয়ে আরো শক্তিশালী হয়েছে। মাত্র ছয় মাসের মধ্যে দুই দিন ও চার দিনের যুদ্ধ থেকেই এর প্রমাণ পাওয়া যায়।