মাত্র ছয় মাস আগে প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল আহমেদ আওয়াদকে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেন ওমর আল-বশির।
সুদানে গণবিক্ষোভের মুখে প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত ও গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল আহমেদ আওয়াদ ইবনে আউফ নেতৃত্বাধীন একটি সামরিক কাউন্সিল দুই বছরের জন্য দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নিয়েছে
আল জাজিরা জানায়, গ্রেপ্তার করে গোপন স্থানে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে। এক মাসব্যাপী কারফিউ এবং সব সীমান্ত বন্ধ রাখার কথাও ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল আওয়াদ ঘোষণা দেন, তার নেতৃত্বে একটি সামরিক কাউন্সিল দুই বছরের জন্য দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নিয়েছে। এরপর নতুন সংবিধানের আওতায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
মাত্র ছয় মাস আগে জেনারেল আওয়াদকে ভাইস প্রেসিডেন্ট বানান বশির। তিনিই ৭৫ বছর বয়সী বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করার পেছনে মূল ভূমিকা রাখেন। একই সঙ্গে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও পালন করছেন এ সামরিক কর্মকর্তা।
আফ্রিকা অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা অন্যতম প্রেসিডেন্ট বশির। ১৯৮৯ সালে একদল সামরিক কর্মকর্তার সমর্থন নিয়ে রক্তপাতহীন এক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে দেশটির ক্ষমতা দখল করেছিলেন তিনি।
গত ডিসেম্বরে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির অসন্তোষ থেকে তার বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভ দমনে সৃষ্ট সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় অর্ধশতাধিক। এ ছাড়া তিন হাজারের অধিক সুদানিকে গ্রেপ্তার করে গোপন বন্দিশিবিরে আটকে রেখে তাদের ওপর নির্যাতন চালায় নিরাপত্তা বাহিনী।
সৈনিক হিসেবে চাকরি শুরু করা জেনারেল আওয়াদ হয়ে ওঠেন দেশটির সেনাবাহিনীর প্রভাবশালী কর্মকর্তা। বাহিনীতে তিনি জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। দারফুর গণহত্যা চলাকালীন তিনি ছিলেন সুদানের সামরিক গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান।
জাতিসংঘের মতে, ২০০৩ সালে সংগঠিত ওই গণহত্যায় নিহত হয়েছে ৩ লাখ মানুষ। এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ২০০৯ বশিরের বিরুদ্ধে 'যুদ্ধাপরাধ' এবং 'মানবতাবিরোধী অপরাধের' অভিযোগ আনে। সেনাবাহিনীর সহায়তায় এ গণহত্যা সংগঠিত হওয়ার অভিযোগে জেনারেল আওয়াদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাও আনে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি সহ সুদানের আরও দুই শীর্ষ কর্মকর্তার সম্পত্তি আটকে দিয়েছে ওয়াশিংটন।
২০১০ সালে অবসরে যাওয়ার পর জেনারেল আওয়াদ দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কূটনীতিক হয়ে ওঠেন। কূটনীতিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মিশর ও ওমানে। ২০১৫ সালে খার্তুমে ফিরলে তাকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন প্রেসিডেন্ট বশির।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন