পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সম্প্রতি দেশবাসীকে নতুন এক আশার সংবাদ শুনিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তেল-গ্যাসের বিশাল ভাণ্ডারের খোঁজ পেতে চলেছে পাকিস্তান। শীঘ্র এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সুসংবাদ পাওয়া যেতে পারে।
পাকিস্তানের গণমাধ্যমের খবারে জানা গেছে, পাকিস্তানের উপকূলীয় এলাকায় তেল-গ্যাসের খনির সন্ধানে খনন কাজ করছে এক্সন-মবিল কোম্পানি। সেখানেই তেল-গ্যাসের বিশাল ভাণ্ডার পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদি ইমরান খান। তার এই ধারণা যাতে সত্য হয় সে জন্য তিনি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন।
ইমরান খান জানান, তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে জড়িত কোম্পানিগুলো যে আভাস দিচ্ছে তাতে আশা করা যাচ্ছে, পাকিস্তানের জলসীমার মধ্যে তেল-গ্যাসের বিশাল মজুদ পাওয়া যাবে। বিষয়টি সত্য হলে পাকিস্তানের ভঙ্গুর অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন ঘটবে। আশাবাদ ব্যক্ত করেন ইমরান আরো বলেন, জ্বালানি তেলের প্রত্যাশিত ওই মজুদ পাওয়া গেলে দেশের সব অর্থনৈতিক দুর্দশার ইতি ঘটবে এবং পাকিস্তানকে আর কখনো পিছনে ফিরে তাকাতে হবে না।
তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানাননি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। অন্যদিকে খননকাজে অংশ নেয়া এক্সন-মবিল এবং আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানি ইএনআইও এ নিয়ে কিছু জানায়নি।
এদিকে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী গোলাম সরওয়ার খান সোমবার জানান, উপকূল হতে ২৩০ কিলোমিটার দূরে ড্রিলিং চলছে সেখানে তেল-গ্যাসের বড় ধরনের মজুদের লক্ষণ দেখা গেছে। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, মার্কিন একটি কোম্পানি এ খনন কাজের সাথে জড়িত। তারা এখন খননের শেষ ও চূড়ান্ত স্তরে পৌঁছে গেছে। তারাই এ ব্যাপারে আশাবাদ জানিয়েছে। তবে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত কথা জানা যাবে আগামী মাসেই।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে কেকরা ওয়ান এলাকায় সাগরের ২৩০ কিলোমিটার ভেতরে খনন প্রক্রিয়া চালাচ্ছে পাকিস্তান। অতি-গভীর কুপ খননের মধ্য নিয়ে তেল-গ্যাসের মজুদ খুঁজে পাওয়ার বিষয়ে এখনও কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছুই বলা হয় নি। প্রায় এক দশক অনুপস্থিত থাকার পর গত বছর পাকিস্তানে ফিরে আসে এক্সন-মোবিল। গত বছর চালানো সমীক্ষা থেকেই ধারণা করা হয়েছে যে পাকিস্তানের জলসীমার মধ্যে তেলের বিশাল মজুদ রয়েছে।
এর আগে এ খননকাজে এক্সন-মবিলের সাথে এক চুক্তিতে সম্মত হয় পাকিস্তান। চুক্তি অনুযায়ী, এই ক্ষেত্র থেকে উত্তোলনকৃত তেলের শতকরা ২৫ ভাগ এক্সন মবিলকে দিতে হবে।
পরবর্তী সময়ে খনন কোম্পানিটি জানায়, ইরান-পাকিস্তান পানিসীমার কাছে এক্সন-মবিল কোম্পানি বিশাল এক তেলের মজুদ খুঁজে পেয়েছে। উত্তোলন উপযোগী এই তেলের খনি পাকিস্তানকে তেলের মজুদের দিক দিয়ে বিশ্বের ৬ষ্ঠ দেশে পরিণত করবে। কারণ এ খনিতে যে পরিমাণ তেল রয়েছে তা কুয়েতের মোট মজুদের চেয়েও বেশি। কিন্তু এ তেল ক্ষেত্র থেকে তেল উত্তোলন শুরু করতে ১,০০০ কোটি ডলার প্রয়োজন হবে।
বর্তমানে পাকিস্তানের মোট তেলের চাহিদার শতকরা ১৫ ভাগ অভ্যন্তরীণভাবে উৎপন্ন হয়। বাকি ৮৫ ভাগ প্রয়োজনের জন্য দেশটি আমদানির ওপর নির্ভরশীল।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন