বিশ্বের অন্যতম উত্তপ্ত অঞ্চল ফিলিস্তিন। বছরের পর বছর দেশটির ভূমি গ্রাস করছে দখলদার ইহুদি ইসরাইল। তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ মধ্যপ্রাচ্যেরও বহু দেশ।
ফিলিস্তিনকে একঘরে করে রেখে শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে বিভিন্ন সময়ে জাতিসংঘের সহায়তায় প্রস্তাবও দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনই সর্বশেষ এক শান্তি পরিকল্পনার প্রস্তাব ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। অভিনব এই প্রস্তাবটি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইহুদি জামাতা জারেড কুশনার।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইসরাইল-ফিলিস্তিনে তার জামাইয়ের এই শান্তি পরিকল্পনাকে ‘ডিল অফ দ্য সেঞ্চুরি’ হিসেবে অভিহিত করছেন।
অনুসন্ধানী সাংবাদিক ভিকি ওয়ার্ড তার ‘কুশনার ইনকরপরেশন: গ্রিড অ্যাম্বিশন করাপশন’ নামের বইতে এই প্রস্তাবের আদ্যপ্রান্ত তুলে ধরেছেন। তিনি সেখানে এই পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্ফোরক নানা তথ্য দিয়েছেন।
শান্তি পরিকল্পনা প্রস্তাবে ট্রাম্পের জামাতা ও তার জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা জারেড কুশনার গোটা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ফিলিস্তিন, জর্ডান ও সৌদি আরবকে নিজেদের মধ্যে জমি বিনিময়ের কথা বলেছেন।
ব্রিটেনে জন্ম নেয়া লেখক ভিকি ওয়ার্ড জানান, কুশনার তার এই মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনার কেন্দ্রীয় ভূমিকায় রেখেছে সৌদি আরবকে। সৌদি সরকার ফিলিস্তিনের গাজার অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করবে। একইসঙ্গে কূটনৈতিক উদ্যোগে সহায়তার জন্য নিজেদের এলাকা হস্তান্তর করবে।
এই পরিকল্পনায় ভূমি বিনিময়ের প্রস্তাবও রয়েছে। এতে ১৯৪৮ সাল থেকে ফিলিস্তিনের যেসব অঞ্চল ইসরাইলের পেটে গেছে, তা নিয়ে টু-শব্দটি করা হয়নি।
তবে, জর্ডান তাদের ভূমি ফিলিস্তিনিদের জন্য ছেড়ে দেবে। প্রতিদানে জর্ডানকে জায়গা দেবে সৌদি আরব। এর ফলে সৌদি আরবকে লোহিত সাগরের দুটি দ্বীপ ফেরত দেবে মিশর। বইটিতে বলা হয়েছে, ১৯৫০ সালে মিশরকে দ্বীপ দুটি নিয়ন্ত্রণের জন্য দিয়েছিল সৌদি আরব।
পরিকল্পনা প্রস্তাবে ফিলিস্তিনের জন্য সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থনৈতিক সহায়তাও চেয়েছেন কুশনার। এজন্য সৌদি আরব থেকে গাজা পর্যন্ত তেলের পাইপলাইন বসানো হবে।
দশকের পর দশক ধরে ব্যর্থ হওয়ার পর এবার ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা তৈরির ভার পড়ে জারেড কুশনার ও জেসন গ্রিনব্লাটের ওপর।
এই দায়িত্ব পাওয়ার আগে কুশনারের কূটনৈতিক বিষয়ে কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। পুরো প্রক্রিয়া চলাকালীনই তিনি বারবার সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছেন। প্রস্তাবটি নির্ধারিত সময়ে প্রকাশ না করা এবং এর প্রধান পক্ষগুলোকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রাখার জন্যও তিনি ব্যাপক সমালোচিত হয়েছেন।
গতবছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তেল আবিব থেকে তাদের দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তরের ঘোষণা দেয়। এর প্রতিবাদে ফিলিস্তিন ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করে। এরই জের ধরে কুশনার তার সম্ভাব্য শান্তি পরিকল্পনা প্রস্তাবে ফিলিস্তিনকে অন্তর্ভূক্ত করেনি।
এক টুইটে এই শান্তি পরিকল্পনা প্রস্তাব তৈরিতে কুশনারের সহযোগী গ্রিনব্লাট ভিকি ওয়ার্ডের বইয়ের তথ্যকে ‘ভুল’ বলে দাবি করেছেন।পরিবর্তন
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন