তিন বছর ধরে ‘ব্রেক্সিট’ নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা ও আলোচনা হলেও বিষয়টির সুরাহা হয়নি এখনো। এতে বিরক্ত হয়ে উঠেছেন ইউরোপের নাগরিকরা, আর চাইছেন সরকারের দায়িত্ব নিক বুদ্ধিদীপ্ত রোবট!
স্পেনের আইই ইউনিভার্সিটির প্রকাশ করা ইউরোপিয়ান টেক ইনসাইট ২০১৯-এর মতে ইউরোপীয়দের মাঝে এক-তৃতীয়াংশই চান মানুষের বদলে রোবট বা এআই দেশ চালানোর গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নিক। ফ্রান্স, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, স্পেন, নেদারল্যান্ডস এবং যুক্তরাজ্যের ১৮ থেকে ৯৯ বছর বয়সী ২,৫৭৬ মানুষের ওপর চালানো জরিপে তা জানা যায়।
এই জরিপের উদ্দেশ্য ছিল, নিজ নিজ দেশে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং সরকারের পদক্ষেপের বিষয়ে ইউরোপের নাগরিকরা কী ভাবেন।
দেখা যায়, নাগরিকরা মনে করেন তাদের সরকার এ বিষয়ে মোটেই ভালো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ মনে করেন আগামী ১০ বছরের মাঝে সঠিক নীতিমালা প্রণয়ন ও প্রয়োগ করা না হলে এসব প্রযুক্তি উপকারের চেয়ে ক্ষতিই করবে বেশি। দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ এটাও মনে করেন যে, পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি আধুনিক এই প্রযুক্তিও ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। ৫৬ শতাংশ মানুষ মনে করেন, একটা সময় মানুষের চাকরি কেড়ে নেবে রোবট। মাত্র ৩০ শতাংশ মানুষ মনে করেন, রোবটিকস ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসবে সমাজে।
সাধারণ মানুষের চাকরির ক্ষেত্রে রোবটকে কেউ পছন্দ না করলেও, একটি ক্ষেত্রে বরং মানুষের চেয়ে রোবটকেই পছন্দ করেন তারা, আর তা হলো সরকার চালানো। রাজনীতিবিদদের জায়গায় রোবটকেই দেখতে চান তারা। নেদারল্যান্ডসের ৪৩ শতাংশ মানুষই এমনটা চান। অন্য দেশগুলোতেও এমন পরিসংখ্যান দেখা যায়।
আইই ইউনিভার্সিটির ডিরেক্টর অব সেন্টার ফর গভর্নেন্স অব চেঞ্জের দিয়েগো রুবিও জানান, রাজনীতিবিদদের প্রতি মানুষের আস্থা ক্রমশ কমে যাচ্ছে। এ কারণেই এমন মনোভাব দেখা যাচ্ছে। তবে তাদের এটাও মনে রাখা উচিত যে, রোবট বা এআই প্রোগ্রাম করে মানুষ, তাই এদের মাঝেও বর্ণবৈষম্য ও লিঙ্গবৈষম্য দেখা যায়।
এটাও জেনে রাখা ভালো যে, প্রায় সাত মিলিয়ন মানুষের মাঝে মাত্র ২,৫৭৬ জনের মাঝে এই জরিপ করা হয়, আরও বড় পরিসরে জরিপ করলে সঠিক তথ্য জানা যাবে। এই তথ্য নেওয়া হয় মূলত পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলো থেকে।
সূত্র: আইএফএলসায়েন্স
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন