অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক বোগার্ট লামপ্রেই প্রথম যেদিন ইরাকি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান নুরা আল মাতোরিকে দেখেন সেদিনই তিনি তাকে বিয়ে করবেন বলে স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছেন।
বার্তা সংস্থা এবিসি নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বোগার্ট বলেন, ‘যখনই আমি কোনো কারণে সেই দোকানে যেতাম আর সেখানটায় কর্মরত বয়স্ক ভদ্র মহিলাকে নুরার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করতাম।’
আর এর এক মাসের মধ্যেই তাদের দুজনের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং বোগার্ট, নুরার মুসলিম সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পেরে অভিভূত হয়ে পড়েন।
তিনি বলেন, ‘আমি এই সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে এবং বুঝতে চাইতাম, আমি প্রতি রাতে পবিত্র কুরআন অধ্যয়ন করতাম এবং শেষে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলাম।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি নুরাকে বলেছিলাম সে যাতে তার পিতার সাথে আমার একটি সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা করেন যাতে করে আমি তার কাছে নুরাকে বিবাহ করার প্রস্তাব দিতে পারি।’
এর পূর্বে বোগার্ট, নুরার পরিবারের কাছে একজন বন্ধু হিসেবে যাতায়াত করা শুরু করেন।
নুরা বলেন, ‘যখন আমি আমার পিতাকে বোগার্টের কথা বলেছিলাম তখন তিনি তিন মাসের জন্য কোথাও বেড়াতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন।’
‘তিনি এমনটি করেছিলেন কারণ তিনি দেখতে চেয়েছিলেন বোগার্ট আমার দেখাশোনা করে নাকি চলে যায়।’
এর পরে বোগার্ট, নুরার পরিবারের কাছে দ্বিতীয় বারের মত বেড়াতে যান।
বোগার্ট বলেন, ‘আমি নুরার মাকে আমার দ্বিতীয় মায়ের মতই দেখি, তারা আমার সাথে যে ব্যবহার করেছেন তা আসলেই অন্যরকম, বিস্ময়কর।’
এই যুগল চার বছর পূর্বে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন এবং বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরাতে বসবাস করছেন। জামিলা নামে তাদের তিন বছর বয়সী একটি মেয়ে শিশু রয়েছে।
বোগার্ট বলেন, ‘আমার মেয়ে যদি নুরার যতটা ভালো তার অর্ধেকও ভালো হতে পারে, এবং নিজেকে একজন মানবিক গুণসম্পন্ন মানুষ ভাবতে পারে তবে আমি হব এ পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষদের একজন।’
প্রসঙ্গত, অস্ট্রেলিয়ায় মুসলিমরা বিগত ২০০ বছরেরও অধিককাল যাবত বসবাস করে আসছে আর বর্তমানে দেশটির ২০ মিলিয়ন মানুষের মধ্যে মুসলিমদের সংখ্যা ১.৭ শতাংশ।
খ্রিস্টান ধর্মের পর ইসলাম হচ্ছে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম।
ইসলাম বিভিন্ন অনুষ্ঠানে লোকজনদের একে অপরের কাছে এসে তাদের জীবনকে রাঙিয়ে তোলার জন্য তাগিদ দেয়।
তথাপি, ইসলাম পশ্চিমা সংস্কৃতির বিভিন্ন অনুষ্ঠান যেমন ভ্যালেন্টাইনস ডে’র মত প্রথাসমূহের অন্ধ অনুকরণ সমর্থন করে না।
অতঃপর, ভ্যালেন্টাইনস ডে’র মত অনুষ্ঠান একটি নতুন আবিষ্কার এবং এধরনের অনুষ্ঠান পালন করার কোনো ধর্মীয় ভিত্তি নেই আর এটি ইসলামে একটি বিদায়াত হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে।
সূত্র: এবাউটইসলাম ডট নেট।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন