পশ্চিম এশিয়ার অন্যতম সম্পদশালী দেশ কাতারে সামরিক ঘাঁটি রয়েছে তুরস্কের। সেইসঙ্গে মোতায়েন রয়েছে কয়েক হাজার তুর্কি সেনা। বেশ কয়েক বছর ধরেই আঙ্কারা-দোহা তাদের গভীর সম্পর্কের বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছে।
তবে দেশ দুটির মধ্যে এমন একটি গোপন সামরিক চুক্তি হয়েছে, যার কারণে কাতারে অবস্থানরত তুর্কি সেনারা কোনো আইন লঙ্ঘন করলেও তার বিচার করতে পারবে না দোহা।
সুইডেনভিত্তিক মনিটরিং সাইট নরডিক মনিটর সম্প্রতি ওই গোপন চুক্তির বিষয়টি ফাঁস করেছে বলে সৌদি গণমাধ্যম আল-আরাবিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
স্টকহোমভিত্তিক ওই মনিটর সাইটের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্কের সঙ্গে কাতারের করা গোপন সামরিক চুক্তিটি চালাকিপূর্ণ ও অস্পষ্ট, যা দেখে মনে হয়, ইচ্ছাকৃতভাবেই এমনটি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই চুক্তি অনুসারে কাতারে বেশ কয়েক হাজার সেনা মোতায়েন করেছে তুরস্ক।
আর চুক্তিটির একটি অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কাতারের মাটিতে তুর্কি সেনারা কোনো আইন লঙ্ঘন করলেও তার বিচার করতে পারবে না দোহা।
চুক্তির এই অনুচ্ছেদটি কাতারের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন বলেও প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে।
আল-আরাবিয়া ওই অনুচ্ছেদটির উদ্ধৃতি দিয়ে আরো বলেছে, এটি আরব অঞ্চলে সেই ঔপনিবেশিক যুগের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়, যেখানে আধিপত্যবাদী শক্তিগুলো দখলকৃত অঞ্চলে অপরাধ করলেও তাদের সেনাদের সুরক্ষা দিতো।
দুই দেশের কর্মকর্তারাই ১৬ পৃষ্ঠার ওই গোপন সামরিক চুক্তিতে সই করেছেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মিসরের মুসলিম ব্রাদারহুড ও ফিলিস্তিনের হামাসকে সহায়তা এবং সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নসহ বেশ কিছু অভিযোগ তুলে ২০১৭ সালের মাঝামাঝি আমেরিকার প্রত্যক্ষ সমর্থনে কাতারের ওপর অবরোধ আরোপ করে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট। জোটের অন্য সদস্যরা হলো- সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিসর। সে সময় ঘোষণা দিয়ে কাতারে পক্ষে অবস্থান নেয় তুরস্ক।
আবার গত বছরের অক্টোবরের শুরুতে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর যখন দেশটির (সৌদি) সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যা করে আঙ্কারাকে চাপে ফেলানোর চেষ্টা হয় তখন তুরস্কের পক্ষে নিজেদের অবস্থান জানান দেয় কাতার।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন