কোহিনূর হীরা চুরি যাওয়া নিয়ে ভারতীয়দের যে বদ্ধমূল ধারণা ছিল তাতে চলতি ছেদ টানে ভারত সরকার। দেশটির সুপ্রিম কোর্টকে ভারত সরকার বলে, চুরি নয়, পাঞ্জাবের মহারাজা দুলীপ সিং ব্রিটিশদেরকে উপহার দিয়েছিলেন এ হীরা।কিন্তু সম্প্রতি ‘আর্কিওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া’ (এএসআই) যা বলেছে তাতে ইতিহাসটাই পাল্টে যেতে বসেছে। আরটিআই সূত্র অনুযায়ী ১৭০ বছর আগে ব্রিটেনের রানিকে ‘উপহার’ নয়, বরং রানির কাছে সমর্পণ করা হয়েছিল ১০৮ ক্যারাটের কোহিনূর।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবর, পাঞ্চাবের লুধিয়ানা শহরের এক সমাজকর্মী সম্প্রতি প্রশ্ন তুলেছিলেন কোহিনূর আদৌ উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল কিনা। প্রশ্নের উত্তরে এএসআই তার জবাব দিয়েছে। তবে এএসআই-এর ১০ অক্টোবরের লিখিত রিপোর্ট যা বলছে তা কিন্তু শীর্ষ আদালতের ২০১৬-এর বিবৃতি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।
২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের কোহিনূর হীরা চুরিও যায়নি, জোর করে ব্রিটিশরা কেড়েও নেয়নি। বরং তৎকালীন পাঞ্জাব শাসক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে উপহার দিয়েছিলেন তা, কেন্দ্র থেকে সুপ্রিম কোর্টকে এরকমটাই বলা হয়েছিল।
রোহিত সাভারওয়াল নামের একজন ব্যক্তি মঙ্গলবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তিনি মাস খানেক আগে তথ্য জানার অধিকারের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কাছে তাঁর প্রশ্ন রেখেছিলেন। তাঁর অনবগতিতেই প্রশ্ন পাঠানো হয় এএসআই'তে।
এএসআই প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছে, ১৮৪৯ সালে মহারাজা দুলীপ সিং এবং লর্ড ডালহৌসির মধ্যে লাহোর চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি অনুসারেই ইংল্যান্ডের রানির কাছে সমর্পণ করা হয় কোহিনূর। চতুর্দশ শতকের শুরুর দিকে দক্ষিণ ভারতে এই কোহিনূরের খোঁজ পাওয়া যায়। কোহিনূর শব্দের অর্থ আলোর পাহাড়। চুক্তি অনুযায়ী মহারাজা রঞ্জিত সিং সুজা উল মুল্ক-এর কাছ থেকে যে কোহিনূর হীরা নিয়েছিলেন, লাহোরের মহারাজা দুলীপ সিং সেটি ইংল্যান্ডের রানির কাছে সমর্পণ করবেন। চুক্তির ভাষাই বলে দিচ্ছে দুলীপ সিং-এর ইচ্ছায় কিছুই হয়নি। তিনি তখনও সাবালকত্ব অর্জন করেননি।
সম্প্রতি ইংল্যান্ডের এক সংগ্রহশালায় গিয়ে কোহিনূর হীরা দেখেন রোহিত সাভারওয়াল। সেখানে এটিকে ‘উপহার’ হিসেবেই বর্ণনা করা হয়েছে। দেশে ফিরে তথ্য জানার আধিকারের ভিত্তিতে তিনি তাঁর প্রশ্ন রাখেন। তাঁর কথায়, “কেন্দ্র এবং এএসআই কোহিনূর নিয়ে দু’রকমের মতামত দিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে”।
বিডি-প্রতিদিন
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন