ইউরোপের দেশগুলোতে অবস্থানকারী মুসলমানেরা তাদের প্রাত্যহিক জীবন খানিক চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়েই অতিবাহিত করেন। বিশেষত পর্দানশীন মুসলিম নারীদের জন্য এই চ্যালেঞ্জ পর্বত সমান। পর্দা পালনের কারণে তারা সহজেই বৈষম্য ও আক্রমণের শিকার হন।
ইউরোপীয়দের দৃষ্টিতে মুসলিম নারীদের পর্দা এক বিদ্বেষপূর্ণ বিষয়। মুসলিম নারীরা তাদের পর্দার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই ইউরোপে বৈষম্যের শিকার হন। যারা মুখ ঢাকা পর্দা বা নিকাব ব্যবহার করেন, তাদের ক্ষেত্রে বৈষম্য প্রকাশ করার মত নয়।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মুসলিম নারীদের মুখ ঢেকে পর্দা তথা নিকাবের ব্যবহার নিষিদ্ধ রয়েছে। এই দেশগুলো নিম্নরূপ,
এক. ফ্রান্স:
২০১১ সালে ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে ফ্রান্স প্রথম মুসলিম নারীদের নিকাব ব্যবহার নিষিদ্ধ করে। এ প্রসঙ্গে ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতে মামলা করা হলে ২০১৪ সালে আদালত রায় দেয়, নিকাব নিষিদ্ধের মাধ্যমে কোন প্রকার মানবাধিকার লঙ্ঘন সম্পন্ন হয়নি। এই রায়ের প্রেক্ষিতে ফ্রান্সের পথ ধরে আরো অনেক দেশ নিকাব নিষিদ্ধ করে।
দুই. নেদারল্যান্ড:
২০১২ সালে নেদারল্যান্ডে পাবলিক প্লেসে মুখ-ঢাকা পোশাকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। এর মাধ্যমে নেদারল্যান্ডে নিকাবের ব্যবহার নিষিদ্ধ হয়ে যায়।
তিন. বেলজিয়াম:
২০১৫ সালে বেলজিয়ামে নিকাবের ব্যবহারে সরকারীভাবে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়।
চার. বুলগেরিয়া:
বুলগেরিয়ার পার্লামেন্টে ২০১৬ সালে নিকাবের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে একটি আইন পাশ করা হয়।
পাঁচ. লাটভিয়া:
একইবছর (২০১৬) লাটভিয়ার পার্লামেন্টেও এরূপ একটি আইন পাশ করা হয়, যদিও লাটভিয়ায় খুব কম নারীই নিকাব পরিধান করে।
ছয়. অস্ট্রিয়া:
অস্ট্রিয়ার পার্লামেন্টে ২০১৭ সালে নিকাবের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে আইন পাশ করা হয়।
সাত. জার্মানী:
২০১৭ সালেই জার্মানীতে কর্মক্ষেত্রে নিকাব ব্যবহার নিষিদ্ধ করে আইন পাশ করা হয়।
আট. নরওয়ে:
একই বছর নরওয়ের পার্লামেন্টে স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে মুখ ঢাকার জন্য কোনো নিকাব ব্যবহার নিষিদ্ধ করে আইন পাশ করা হয়।
নয়. ডেনমার্ক:
সর্বশেষ গত ৩১শে মে, ২০১৮ তে ডেনমার্কের সংসদে নিকাবের ব্যবহারে সম্পূর্ণরূপে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আইন পাশ করা হয়। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশাল সাম্প্রতিক এই নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে উল্লেখ করে, এর মাধ্যমে নারীর অধিকার বৈষম্যপূর্ণভাবে লঙ্ঘন করা হচ্ছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন