ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার তাৎক্ষণিক তিন তালাককে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করে অধ্যাদেশ জারি করেছে। আজ (বুধবার) কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় ওই অধ্যাদেশ পাস হয়েছে। প্রেসিডেন্টের সই হওয়ার পরেই ওই অধ্যাদেশ কার্যকর হবে।
তাৎক্ষণিক তিন তালাককে অবৈধ ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সংসদে ‘মুসলিম উইমেন (প্রোটেকশন অব রাইটস অন ম্যারেজ) বিল ২০১৭’ বিল আনা হয়। লোকসভায় ওই বিল পাস হয়ে গেলেও বিরোধীদের সহযোগিতা না পাওয়ায় এবং নানা জটিলতায় রাজ্যসভায় তা পেশ করতে পারেনি সরকার।
সংসদীয় নিয়ম অনুযায়ী, ছয় মাসের মধ্যে সংসদের উভয় কক্ষে অধ্যাদেশ পাস করাতে হয়। তা সম্ভব না হলে পুনরায় নতুন করে অধ্যাদেশ জারি করতে হয়।
মুহাম্মদ নূরুদ্দিন
কেন্দ্রীয় সরকারের অধ্যাদেশ প্রসঙ্গে জামায়াতে ইসলামী হিন্দ-এর পশ্চিমবঙ্গের সভাপতি মুহাম্মদ নূরুদ্দিন আজ (বুধবার) রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘তালাক নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রিসভা যে অধ্যাদেশ জারি করেছে তা সম্পূর্ণ অনৈতিক, সংবিধান বিরোধী ও ভারতীয় সংখ্যালঘুদের স্বার্থ বিরোধী। কেননা তালাক নিয়ে এ পর্যন্ত যত বিতর্ক হয়েছে তাতে সংখ্যালঘুরা তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। এটা তাদের ধর্মীয় মৌলিক অধিকার এবং তালাকের অপব্যবহার নিয়ে সমাজে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে সে বিষয়েও ‘অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’বোর্ড কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তালাক নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার যে খেলা খেলছে তা প্রকৃতপক্ষে ‘রাজনৈতিক খেলা’। সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের মধ্য দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করা, সংখ্যালঘুদের নিষ্পেষণ করার লক্ষ্যেই কেন্দ্রীয় সরকার অধ্যাদেশ জারি করেছে।’
মুফতি আব্দুল মাতিন
অল ইন্ডিয়া সুন্নত অল জামাআত-এর সাধারণ সম্পাদক মুফতি আব্দুল মাতিন এ বিষয়ে রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘ইসলামী যে তালাক ব্যবস্থা তা যথেষ্ট ভালো ছিল। এরা যেটা করছে এতে আরো মেয়েদেরকে মৃত্যুর পথে ঠেলে দেয়ার ষড়যন্ত্র। স্থিতিশীল পরিবেশ নষ্ট করার চক্রান্ত। এজন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নারীরা যেমন আন্দোলন করছেন, গোটা দেশ নারী-পুরুষ ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন হওয়া উচিত।’
কেন্দ্রীয় সরকারের অধ্যাদেশ জারি আসলে একটা শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করার ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয় বলেও মুফতি আব্দুল মাতীন মন্তব্য করেন।
ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এমপি
মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলেমিন (মিম) প্রধান ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এমপি বলেন, ‘এই অধ্যাদেশ মুসলিম নারীদের বিরোধী। ইসলামে বিয়ে একটি সামাজিক চুক্তি। এরমধ্যে ফৌজদারি আইন কার্যকর করা একেবারেই ভুল।’
ওয়াইসি বলেন, ‘সরকার তাৎক্ষণিক তালাককে অপরাধীকরণের পরিবর্তে ২৪ লাখ বিবাহিতা নারীর জন্য আইন আনুক যাদেরকে বিনা তালাকেই তাদের স্বামীরা পরিত্যাগ করেছে।’#
পার্সটুডে
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন