পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়ার ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপে যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বানের তীব্র সমালোচনা করেছে পিয়ংইয়ং। উত্তর কোরিয়ার অভিযোগ, ওয়াশিংটন এখনো উসকানিমূলক ‘পুরনো সংলাপ উচ্চারণ করছে।’ পিয়ংইয়ং হুশিয়ারি দিয়েছে, ডিমে তা দিলে বাচ্চা ফুটবে। অবশ্য তারা এও মনে করছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ওয়াশিংটন সে রকমই কিছু একটা দেখতে চাচ্ছে। শুক্রবার এ খবর দেয় বিবিসি।
উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, পিয়ংইয়ং পারমাণবিক অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা বন্ধ করেছে, একটি পরীক্ষাকেন্দ্র ধ্বংস করেছে এবং ১৯৫০-৫৩ সালে কোরীয় যুদ্ধে নিহত কিছু মার্কিন সেনার দেহাবশেষও ফেরত দিয়েছে। এর পরও ওয়াশিংটন ‘আগে নিরস্ত্রীকরণ চাই’ বলে চাপ প্রয়োগ করছে এবং ‘আমাদের প্রত্যাশার জবাবে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও চাপ উসকে দিচ্ছে।’মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র যতক্ষণ পর্যন্ত সংলাপ সহযোগীর মৌলিক কাঠামোকে অস্বীকার করবে এবং পুরনো সংলাপ আঁকড়ে ধরে রাখবে, যা প্রাক্তন সব মার্কিন প্রশাসন ধরে রেখেছিল এবং ব্যর্থ হয়েছে, ততক্ষণ নিরস্ত্রীকরণসহ যৌথ ঘোষণা বাস্তবায়নের আশা কেউ করতে পারে না।’ উত্তর কোরিয়ার বার্তা সংস্থা কেসিএনএতে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১২ জুন সিঙ্গাপুরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কিম জং উনের বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো এখনো বাস্তবায়নের আশা রাখে পিয়ংইয়ং।
সিঙ্গাপুরে ট্রাম্প-কিমের ঐতিহাসিক বৈঠকে নিরস্ত্রীকরণের বিপরীতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা শিথিলের প্রতিশ্রুতি পায় পিয়ংইয়ং। কিন্তু বৈঠকে কিমের থেকে কোনো সুনির্দিষ্ট সময়সীমা ও প্রতিশ্রুতি আদায় করতে না পারায় দেশের সমালোচনার মুখে পড়েন ট্রাম্প।
ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন জানান, উত্তর কোরিয়া নিরস্ত্রীকরণের কৌশলগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর নিষেধাজ্ঞা শিথিলের পথে যাবে তারা। তিনি অভিযোগ করেন, ‘নিরস্ত্রীকরণের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলোকে আমরা অপরিহার্য বিবেচনা করি, উত্তর কোরিয়া এখনো তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আসলে আমাদের মধ্যে আলোচনা প্রয়োজন। উত্তর কোরিয়ার দিক থেকে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে পদক্ষেপ দরকার।’
১৯৫০-৫৩ সালের কোরীয় যুদ্ধের পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র আর উত্তর কোরিয়া শত্রুরাষ্ট্র। সাম্প্রতিক সময়ে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক পরীক্ষার জের ধরে দুই দেশের সম্পর্কের আরও অবনতি হতে থাকে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন