মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে গতি ফেরানো ছাড়াও একাধিক এজেন্ডা নিয়ে আলেচনা করতে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইলের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল আজ শনিবার মধ্যরাতে ঢাকায় আসছে। প্রতিনিধিদলে দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব দাতুক মুহাম্মদ খায়ের রাজমান বিন মুহাম্মদ আনওয়ার ও ইমিগ্রেশন ডাইরেক্টর জেনারেলসহ কয়েকজন কর্মকর্তা আসার কথা রয়েছে।
সূত্র বলছে, গত বছর শ্রমবাজার শুরু হলেও এখন পর্যন্ত কাক্সিক্ষত লোক দেশটিতে যেতে পারেনি। তবে যে ৭০ হাজার শ্রমিক দেশটিতে গেছেন তাদের কেউ সমস্যায় আছে এমন অভিযোগ এখনো মন্ত্রণালয়ে আসেনি।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. আহমদ মুনিরুছ সালেহীন নয়া দিন্তকে বলেন, না, এখন পর্যন্ত নতুন যাওয়া শ্রমিকদের বিষয়ে কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি।
সূত্র মোতাবেক, প্রতিনিধিদল শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টা ৫ মিনিটে ঢাকায় অবতরণ করবে। ৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৪টায় তারা সেনাকল্যাণ ওভারসিস এমপ্লয়মেন্ট সার্ভিসের সাথে মিটিং করবেন। ৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদের সাথে ফরেন ওয়ার্কার ইস্যু নিয়ে তার মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করবেন। এরপর দুপুর ১২টায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সাথে সাক্ষাৎ করবেন। বেলা ২টায় মালয়েশিয়ার উদ্দেশে প্রতিনিধিদলের ঢাকা ত্যাগের কথা রয়েছে।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণে ধীরগতির জন্য জটিলতা কোথায়, সেগুলো চিহ্নিত করে গতি ফেরানোটাই প্রতিনিধিদলের আসার মূল উদ্দেশ্য বলে তারা ধারণা করছেন। এ ছাড়া বেশকিছু মেডিক্যাল সেন্টারের কার্যক্রম এফডব্লিওসিএমএস সিস্টেম থেকে বন্ধ রাখার বিষয়সহ নানা বিষয়ের ওপর প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীর সাথে আলোচনা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে মালয়েশিয়া থেকে একজন সংবাদকর্মী নয়া দিগন্তকে বলেন, মালয়েশিয়ার প্রতিনিধিদলটি নেপাল থেকে ঢাকায় যাওয়ার কথা। তিনি বলেন, এবারের সফর নিয়ে দুই দেশ থেকেই কিছুটা গোপনীয়তা রক্ষা করা হচ্ছে, যার কারণে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কারো কাছ থেকে দুই দিনের সফরের সময়সূচি জানা যাচ্ছে না।
হাইকমিশন থেকে বলা হচ্ছে- মালয়েশিয়া থেকে যে দল যাচ্ছে সেই শিডিউল তাদের কাছে নেই!
গতকাল মালয়েশিয়া থেকে একজন অভিবাসন ব্যবসায়ী নয়া দিগন্তকে জানান, মূলত এমওইউ চুক্তি মোতাবেক ফলোআপ মিটিং হতে যাচ্ছে। দুই দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে শ্রমিক প্রেরণের গতি বাড়ানোসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। এর মধ্যে সিন্ডিকেট থাকবে কি থাকবে না এই বিষয়টিও আলোচনায় আসতে পারে। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক যাতে বেশি আসতে পারে সেটিই বৈঠকে প্রাধান্য পাবে বেশি।
শোনা যাচ্ছে প্রতিনিধিদলটি ঢাকায় বৈঠক শেষে তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিতে পারে।
এ দিকে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে ঢাকার একটি হোটেলে বায়রার কার্যনির্বাহী কমিটির উদ্যোগে গত বৃহস্পতিবার মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সাধারণ সদস্যদের মতামত জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু এই মতবিনিময় সভাটি বাধার মুখে পড়ে। হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। তবে কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা সাধারণ সদস্যদের দেয়া মতামতকেই প্রাধান্য দেবেন বলে ঘোষণা দেন । তাদের মধ্য যে দূরত্ব রয়েছে সেটি তারা ভুলে যেতে চাচ্ছেন। শ্রমবাজার যেন টিকে থাকে সেই স্বার্থে তারা এক কাতারে আসতে চাইছেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন