দুর্নীতি কমিশনের (দুদক) মামলায় ১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা আত্মসাতের দায়ে সোনালী ব্যাংকের চার সিনিয়র কর্মকর্তাসহ পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদে ৭০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসাথে পাঁচজনকে বিভিন্ন ধারায় ৩ কোটি ৭০ লাভ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, নোয়াখালীর সদর উপজেলার সোনাপুর বিসিক শিল্প এলাকার মেসার্স ডলফিন ডলফিন সী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের কর্ণধার ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন ফারুক, সোনালী ব্যাংক নোয়াখালী শাখার সাবেক এজিএম এ জে আবদুল্ল্যা আল মামুন, সোনালী ব্যাংক নোয়াখালী শাখার সাবেক সিনিয়র অফিসার জাকের উল্যাহ, ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার সোনালী ব্যাংকের সাবেক এওজি ক্যাশ-২ এম এ রহমান, সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ের বরখাস্ত করা ইঞ্জিনিয়ার সামছুদ্দোহা নাহাদ।
সোমবার (৩ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে নোয়াখালী জেলা স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক এ এন এম মোরশেদ খান এ রায় দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট আবুল কাশেম জানান, দুপুর ১২টার দিকে মামলার শুনানি শেষে বিচারক রায় দেয়ার সময় মামলার তিন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মামলার ১ নম্বর ও ২ নম্বর আসামি পলাতক ছিলেন।
দুদক সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে ব্যবসায়ী ফারুক ও চার ব্যাংক কর্মকর্তা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে প্লেজ গুদামে মাছ না রেখে ভুয়া প্লেজ লেটার প্রস্তুত করে। পরে তা ব্যাংকে দাখিল করে বিল-ভাউচার প্রস্তুত করে ঋণের অর্থ গ্রাহকের নামীয় ঋণ হিসাবে স্থানান্তর করে নগদে উত্তোলন করে ঋণের অর্থ অন্যত্র স্থানান্তর ও রূপান্তর করে মানিলন্ডারিংয়ের সাথে সম্পৃক্ত ও সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি অর্জন করে। সর্বশেষ আলামত ধ্বংস (প্লেজকৃত মাছ) করে ১ কোটি ৯৭ লাখ ১৬ হাজার ৭০০ টাকা আত্মসাৎ করে। পরে ২০১৭ সালের ২৩ অক্টোবর দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, নোয়াখালীর তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো: মশিউর রহমানের (বর্তমানে- উপপরিচালক, গোয়েন্দা ইউনিট, প্রধান কার্যালয়) তদন্ত শেষে কমিশনের অনুমোদন নিয়ে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
দুদকের পিপি আরো জানান, দুটি ধারায় মেসার্স ডলফিন ডলফিন সী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের কর্ণধার ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন ফারুক ও সোনালী ব্যাংক নোয়াখালী শাখার সাবেক এজিএম এ জে আবদুল্ল্যা আল মামুনকে দুর্নীতির দায়ে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসাথে ব্যবসায়ী ফারুককে ২ কোটি ২ লাখ টাকা ও সোনালী ব্যাংকের সাবেক এজিএম এ জে আবদুল্ল্যা আল মামুনকে ১ কোটি ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অপর তিন ব্যাংক কর্মকর্তা সোনালী ব্যাংক নোয়াখালী শাখার সাবেক সিনিয়র অফিসার জাকের উল্যাহ, ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার সোনালী ব্যাংকের সাবেক এওজি ক্যাশ-২ এম এ রহমান, সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ের বরখাস্তকৃত ইঞ্জিনিয়ার সামছুদ্দোহা নাহাদকে একাধিক ধারায় ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। একইসাথে তিন ব্যাংক কর্মকর্তাকে ২২ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। তাদের ২৫ বছর করে রায়ে দণ্ডিত করা হলেও একসাথে সাজা কার্যকর হওয়ায় তিন আসামিকে ১০ বছর সাজা খাটতে হবে বলেও জানান এ আইনজীবী।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন