২১ জেলার প্রবেশদ্বার হিসেবে খ্যাত রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট। এ ফেরি ঘাটটি সব সময়ই ব্যস্ততা থাকতো। যানবাহনের ভীড়ের সঙ্গে মানুষের ভীড়ও লেগে থাকতো। সেই চিরচেনা ঘাটটি আজ জৌলস হারিয়েছে। এখন সব সময়ই থাকে ফাঁকা।
আজ শুক্রবার দুপুরে দৌলতদিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ঘাট এলাকার সড়কের দুপাশের হোটেল, মুদি দোকান লোক শুণ্য হয়ে পড়ে আছে। হকারদের নেই হাকডাক। বাস, ট্রাক, মাইক্রো, মোটরসাইকেল এসেই ফেরিতে উঠছে। তাদেরকে আর ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা বা যানজটে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে না।
বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের জানুয়ারিতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের উভয় প্রান্তে ঘাট আধুনিকায়নের জন্য ৬৮০ কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হয়। কাজটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় পানি উন্নয়ন বোর্ড। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শুরু করতে না পারা এবং নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ১ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা করা হয়েছে। যার ডিজাইন এখনো চূড়ান্ত না হওয়ায় স্থায়ী কাজ শুরু হতে বিলম্ব হচ্ছে।
ঢাকা থেকে আসা মোটরসাইকেল চালক আরিফ হোসেন বলেন, ‘আমি একটি কোম্পানিতে চাকুরি করি। প্রতি শুক্রবার বাড়িতে আসি। ঘাটে এসে এখন ফাঁকা ফাঁকা লাগে। মানুষের ভীড় ও যানজট নেই। আগে বিভিন্ন ধরণের হকারদের হাকডাক ছিল এখন আর নেই।’
ট্রাক চালক সুজন বলেন, ‘আগে দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে আসতে আমাদের বেগ পেতে হতো। অনেক সময় ৩-৪দিন লেগে যেতো। পদ্মা সেতু চালু হবার পর থেকেই যানবাহনের চাপ একটু কম। এ কারণে ঘাটে এসে অপেক্ষা করতে হয় না। তবে দালালদের দৌড়াত্ব কমেনি। টিকিটের বাড়তি মূল্যে আদায় কমেনি।’
দৌলতদিয়া ঘাটের চায়ের দোকানি ইউসুব আলী বলেন, ‘ভাই এখন লোকজন কম। আগে ২ হাজার বেচা বিক্রি হলেও এখন ২-৩শত টাকার বেশি হয় না। যাত্রীরা তো ঘাটে এসে দেরি করতে হয় না। এসেই সরাসরি ফেরিতে চলে যায়।’
বিআইডব্লিউটিএ আরিচা অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম বলেন, দৌলতদিয়া প্রান্তের ৭ টি ঘাটের মধ্যে বর্তমানে ৩ ও ৫ নম্বর ঘাট দুটি ভাঙন সমস্যায় রয়েছে। ফেরি ঘাট টিকিয়ে রাখতে জিও ব্যাগ দিয়ে তারা ডাম্পিংয়ের কাজ চলমান রেখেছেন। ৫ নম্বর ঘাটটি চলতি মাসের প্রথম দিকে এবং ৩ ঘাটের ডাউনে আজ ভোর রাতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। খবর পাওয়ার পর সকাল থেকেই ভাঙন রোধে কাজ শুরু করেছেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন