নদী দখল ও দূষণ রোধে সততা এবং সাহসের সঙ্গে কাজ করা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের শাস্তি দিলে কীভাবে নদী রক্ষা হবে প্রশ্ন তুলেছেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী।
বিআইডব্লিউটিএ তো নিজেই অনেক জায়গায় অবৈধভাবে বালু ফেলে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটাচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড নদীতে বাঁধ দিয়ে মেরে ফেলেছে। বহু জায়গায় এ রকম হচ্ছে। মৎস্য অধিদপ্তর ছোট নদীকে টুকরো টুকরো করে জলমহাল বানিয়ে মাছ চাষ করছে। নদীগুলো মারা যাচ্ছে। ছোট নদীগুলো বাঁচিয়ে রাখতে হবে। দখল-দূষণের পরও বড় নদীগুলো নিজেরাই নিজেদের বাঁচিয়ে রাখছে। মানুষের নির্লজ্জ উদাসীনতায় ছোট ছোট নদী মরে যাচ্ছে।
জাগো নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা মঞ্জুর আহমেদ এ প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি কমিশনের ক্ষমতা বাড়াতে নতুন আইন করা, কমিশনের সীমাবদ্ধতা, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কমিশনকে সহযোগিতা, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের নদী দখল-দূষণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা, নদী রক্ষায় এনজিওদের ভূমিকা নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন।
২০২০ সালে নতুন কমিশন আইনের খসড়া করা হয়েছিল জানিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, কোনো আইন পাস হওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর কাছে খসড়া পাঠিয়ে মতামত চাওয়া হয়। আইন মন্ত্রণালয়ে যায়। তখন সেই খসড়াটি পাঠানো হয়। সেই খসড়ায় অনেকেই নেতিবাচক মন্তব্য করছেন। আইনটা অনেক বড় হয়েছে, ভাষারও রিপিটেশন আছে। আবার মৎস্য ও পানি আইনকে সুপারসিড করেছে খসড়াটি, তারা (মৎস্য ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়) সেটি মানেনি। ছোট ছোট বিষয় খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত ছিল, আমরাও মনে করি সেগুলো আইনের বিষয় নয়। এসব কারণে সেই খসড়াটি ফেরত এসেছে। সেই আইনটি আরও ছোট আকারে সহজভাবে করার চেষ্টা করছি। একটা কমিটি করে দিয়েছি, কাজ এগোচ্ছে। আমরা আবার সাবমিট করব।
দেশের দেশের ৫৪ নদী দূষিত- ছবি সংগৃহীত
কী কারণে অঞ্জনা খান মজলিশকে বদলি করা হলো, কেন দাউদ হোসেনকে ওএসডি করা হলো? কী চাপ ছিল? নদীদূষণ করা যে অপরাধ এটা অনেকে জানেও না। এটাও বাস্তবতা। কিছু লোক আছে, ইচ্ছাকৃতভাবে নদী দখল করে শিল্প-কারখানা করছে। একই অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে কমপক্ষে ছয় মাসের জেল সঙ্গে জরিমানাও। কেউ যদি ছয় মাস জেল খেটে বেরিয়ে আসে, সে কী আবার নদী দখল করতে যাবে। কিন্তু জেল তো দেওয়া হয় না।
কোনো সংস্থা সুপারিশ না মানলে আমাদের সিস্টেমের মধ্যে কীভাবে জবাবদিহিতার মধ্যে আনা যায় সেই ব্যবস্থা নতুন আইনে থাকবে।
কমিশন মূলত সুপারিশ করে। এটাকে অনেকে দুর্বলতা ভাবে। বিশেষ করে এনজিওগুলো এটা মনে করে। পিএসসি যারা পাস করে তাদের চাকরি দেওয়ার জন্য অর্ডার দেয় না, সুপারিশ করে? তাদের সুপারিশ কী মানে না? কিছু ক্ষেত্রে হয়তো হয়, যেখানে পদ খালি নেই, সেখানে হয়তো নিয়োগ দেওয়া হয় না। কমিশন মূলত সেভাবে এনফোর্সমেন্টে যায় না।
যদি কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি আইন ভাঙে সেখানে কমিশন হস্তক্ষেপ করে, জেলা ও উপজেলা নদী রক্ষা কমিটির মাধ্যমে মূলত বাস্তবায়ন করা হয়। জেলা কমিটির আহ্বায়ক ডিসি ও উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক ইউএনও। কমিটিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সিভিল সোসাইটি, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিশেষজ্ঞসহ বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজন রয়েছে। আমরা এ কমিটির মাধ্যমে আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করি। কমিটি আমাদের কাছে রিপোর্ট দেয়। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, নদীর বৈধ অভিভাবক হচ্ছে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন।
সিটি করপোরেশনের বর্জ্য নদীতে আসছে। আমি তো মনে করছি আতিক সাহেবকে আমি মোবাইল কোর্টের সম্মুখীন করব। তাদের অনেকবার তাগিদ দিয়েছি, কোনো পাত্তাই দিচ্ছেন না। একজন জুনিয়র অফিসার পাঠান মিটিংয়ে তিনি কিছুই জানেন না। অথচ তার খাল দিয়ে বর্জ্য যাচ্ছে। তিনি কিছুই করছেন না।
বাংলাদেশই পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে নদীকে সবচেয়ে বেশি আইনি সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। এদেশেই নদী সবচেয়ে বেশি দুর্দশাগ্রস্ত। এটা একটা ট্র্যাজেডি। কারণ আইন বাস্তবায়ন করা হয় না। আইন বাস্তবায়ন হলে তো নদীর এ অবস্থা হতে পারে না। আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখেছি, আইন মানা হয় না আইন প্রয়োগ হয় না।
কমিশনের হাতে কোনো ক্ষমতা নেই- এটি এক ধরনের প্রচারণা। কারণ আমরা যে কোনো অ্যাকশন নিতে পারি। দেখেন, চাঁদপুরের বালুখেকো সেলিমকে উৎখাত করেছি, তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়ে যাচ্ছে, সে এখন জেলে যাবে। এটা আমরা কীভাবে করেছি? এই যে প্রায়ই বলা হয় ঠুটো জগন্নাথ-টগন্নাথ, এই ধরনের কিছু এনজিও আছে তারা বলে। আমরা মোবাইল কোর্টের নির্দেশ দিয়ে পটুয়াখালীর মেয়রকে ছয় মাস জেল দিতে সক্ষম হয়েছিলাম। মাফ চেয়ে রক্ষা পেয়েছেন। আমরা তো এগুলো করছি।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে মাঠ পর্যায়ের প্রশাসন। রূপগঞ্জ বলেন, কেরানীগঞ্জ বলেন- ঢাকার চারপাশের চারটি নদী আমরা বঙ্গবন্ধুর আগামী জন্মদিনের আগে দূষণমুক্ত করার চেষ্টা করছি। আমরা ঘোষণাও দিয়েছি। পৌরসভার কঠিন বর্জ্য নদীতে ফেলে, তাদের শাস্তি দেওয়ার দায়িত্ব পরিবেশ অধিদপ্তরের। তারা তো নিজেরাই মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে পারে। এটা তাদের দায়িত্ব কিন্তু এটা তারা করে না। যখন বাসাবাড়ির কঠিন ও শিল্প বর্জ্য কেউ নদীতে ফেলছে পরিবেশ বা যেকোনো আইনে তাদের শাস্তি দেওয়া যায়। কিন্তু সেদিকে তাদের নজর নেই। পরিবেশ চেতনার অভাব আছে আমাদের প্রশাসনের মধ্যে।
আমি সুপারিশ করেছি প্রত্যেকেটি জেলায় একজন করে এডিসি (অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক) নিয়োগ দেওয়া হোক, যার কাজ হবে নদী ও পরিবেশ বিষয়ক সব কর্মকাণ্ড সমন্বয় করা। এ ধরনের কাজ করতে পারলে আমরা এগোতে পারবো।
আমাদের লোকবল মাত্র ৪২ জন। ৫ কোটি টাকার মতো বাজেট। এটা দিয়ে কিন্তু আমরা এসব কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের কোনো নৌযান নেই। আমাদের তো নদীতে যেতে হবে, আমি বাল্কহেডের মধ্যে ট্রলারে ঝুঁকি নিয়ে যাই। আমার সহকর্মীরা ঝুঁকি নিয়ে সেখানে যান। আইনে আছে আমাদের সহযোগিতা করবেন, কিন্তু করেন না। আমাদের বিশেষজ্ঞও নেই, বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞদের আনতে হয়।
নদী এখন ময়লার ভাগাড়-ফাইল ছবি
সরকারি অনেক সংস্থা নদী দখল-দূষণের সঙ্গে জড়িত জানিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, বিআইডব্লিউটিএ তো নিজেই অনেক জায়গায় অবৈধভাবে বালু ফেলে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটাচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড নদীতে বাঁধ দিয়ে মেরে ফেলেছে। বহু জায়গায় এ রকম হচ্ছে। মৎস্য অধিদপ্তর ছোট নদীকে টুকরো টুকরো করে জলমহাল বানিয়ে মাছ চাষ করছে। নদীগুলো মারা যাচ্ছে। ছোট নদীগুলো বাঁচিয়ে রাখতে হবে। দখল-দূষণের পরও বড় নদীগুলো নিজেরাই নিজেদের বাঁচিয়ে রাখছে। মানুষের নির্লজ্জ উদাসীনতায় ছোট ছোট নদী মরে যাচ্ছে।
আগে রূপগঞ্জে যে ইউএনও এবং এসিল্যান্ড ছিলেন, তারা রিফিউজ করেছেন কাজ করতে। রিফিউজ করার তো কোনো কারণ থাকতেই পারে না। বঙ্গবন্ধুর নামে আমরা এটা করছি। শিবিরের প্রেতাত্মা ঘুরে বেড়ায়। আমাদের কর্মীরা পই পই করে দেখিয়ে দিয়েছে এখানে দূষণ হচ্ছে, এখানে দখল হয়েছে। তারা এনফোর্সমেন্টে যাবে না!
পরিবেশ ও নদী রক্ষায় প্রজাতন্ত্রের যেসব কর্মচারী কাজ করেছেন, তারা মেধা দিয়ে, সাহস নিয়ে কাজ করেছেন। সততার সঙ্গে কাজ করেছেন। চাঁদপুরের ডিসি (জেলা প্রশাসক) অঞ্জনা খান মজলিশ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) দাউদ হোসেন চৌধুরী ও মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. হারুনর রশিদ- তারা নদী রক্ষায় ভূমিকার রেখেছেন। হারুনর রশীদ গবেষণা করে বলেছেন চাঁদপুরে ড্রেজারের জন্য ইলিশ মাছ ছোট হয়ে যাচ্ছে, তাদের খাদ্যের অভাব হচ্ছে। এদের সহযোগিতায়, এ জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা বালু খেকোকে উচ্ছেদ করেছি। সেই অঞ্জনা খান মজলিশকে বদলি করে দেওয়া হলো। দাউদ হোসেনকে ওএসডি করা হয়েছে। ড. হারুন দেশের মধ্যে নম্বর ওয়ান ইলিশ বিশেষজ্ঞ, তাকে শাস্তিমূলক হিসেবে চিংড়ি মাছের প্রকল্পে পাঠানো হয়েছে।
এখন কোনো ডিসি কি আমাদের সঙ্গে কাজ করবেন? এগুলো তো তাদের জন্য শাস্তি। আমি জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছি, আপনি কেন এদের বদলি কিংবা ওএসডি করলেন। তিনি বললেন, রুটিন কাজ। আমি বললাম, রুটিন কাজ নয়, তিনজন একসঙ্গে বদলি হতে পারে না। তিনি বলেন, হারুনর রশিদকে তো বদলি করেছে মৎস্য মন্ত্রণালয়।
এখন আমরা কীভাবে নদী রক্ষা করব, যারা আমাদের সঙ্গে সততা ও সাহসের সঙ্গে কাজ করবেন তাদের শাস্তি দেবেন। রূপগঞ্জের এসিল্যান্ড তাকে আরও ভালো পদে নিয়ে গেছেন। কিন্তু আমরা যখন তাদের (উপজেলা প্রশাসন) সঙ্গে মিটিং করতে গেছি তারা মিটিংও করতে চাননি। এমনকি তারা অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন। তারা আমাদের রিসিভও করেননি। তারা বলেছেন তারা এ কাজ (অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও দূষণ রোধ) করবেন না।
যার যার কাজ তার তার করার সংস্কৃতি গড়ে উঠতে হবে। নদীর জমি এই যে দখল করে নিয়ে যায়, কাগজপত্র করে দেয় কে? এই এসিল্যান্ডরাই তো করে দেন। এরাই যদি এটা করেন আমরা কী করতে পারি।
কী কারণে অঞ্জনা খান মজলিশকে বদলি করা হলো, কেন দাউদ হোসেনকে ওএসডি করা হলো? কী চাপ ছিল?
নদীদূষণ করা যে অপরাধ এটা অনেকে জানেও না। এটাও বাস্তবতা। কিছু লোক আছে, ইচ্ছাকৃতভাবে নদী দখল করে শিল্প-কারখানা করছে। একই অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে কমপক্ষে ছয় মাসের জেল সঙ্গে জরিমানাও আছে। কেউ যদি ছয় মাস জেল খেটে বেরিয়ে আসে, সে কী আবার নদী দখল করতে যাবে। কিন্তু জেল তো দেওয়া হয় না।
পরিবেশের বর্জ্য নিঃসরণের যে আইন তাতে দূষণকারীদের ধরা যায় না। তাদের অফিসারদের নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি, তারা বলেন, শিল্প বর্জ্যের বিভিন্ন প্যারা্মিটার আছে, সেগুলোর জন্য ধরা যাবে না। পিএইচ দেওয়া আছে ৬ অনুপাত ৯। এর বাইরে তো পিএইচ হয়ও না। আমাদের মূল সমস্যা হচ্ছে ওয়াশিং এবং ডাইং শিল্প। খুব বেশি অ্যাসিড থাকলে তো কাপড়ই পুড়ে যাবে, তাই তাদের পিএইচ নরমাল রেইঞ্জের মধ্যেই থাকে। তাই তারা আনট্রিটড কিছু ছেড়ে দিলেও আইনগতভাবে আপনি ধরতে পারবেন না। পরিবেশ অধিদপ্তর কেন এটা করলো?
তারা মিটিংয়ে বলে তারা যদি ঠিকমতো ট্রিটমেন্ট করে তবে প্রতিলিটারে এক টাকা খরচ পড়বে। আমি বলি আপনার কী সেটা দেখার দায়িত্ব। আপনি কী টেক্সটাইল শিল্পের মুখপাত্র, আপনার কাজ আইন প্রয়োগ করা। আপনি সার্টিফিকেট কীভাবে দেন। আমি একা কতটা করব?
নদী রক্ষা কোর্ট প্রয়োজন কি না- এ বিষয়ে মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, পরিবেশ আইন বাস্তবায়ন করলেই হয়। আর ম্যাজিস্ট্রেট দেওয়া হোক। আপনি সার্টিফিকেট না দিলেই তো হয়। দুর্নীতিমুক্ত করেন।
সিটি করপোরেশনের যে বর্জ্য নদীতে আসছে। আমি তো মনে করছি আতিক সাহেবকে আমি মোবাইল কোর্টের সম্মুখীন করব। তাদের অনেকবার তাগিদ দিয়েছি, কোনো পাত্তাই দিচ্ছেন না। একজন জুনিয়র অফিসার পাঠান মিটিংয়ে তিনি কিছুই জানেন না। অথচ তার খাল দিয়ে বর্জ্য যাচ্ছে। তিনি কিছুই করছেন না। আমরা বলেছি, খালের মাথায় লিনিয়ার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট করেন। সেখানে ট্রিট করে পানি নদীতে ছাড়েন। কিন্তু পাত্তাই দেন না। দক্ষিণের মেয়র (শেখ ফজলে নূর তাপস) উনি এ বিষয়ে জোর দিয়েছেন। আমাদের সুপারিশ অনুযায়ী তিনি এগোচ্ছেন। আমাদের লোকজন যাচ্ছেন।
শিল্প কারখানা নদীতে বর্জ্য ফেলছে। আমি শিল্পকারখা বন্ধ করার পক্ষে নই। কিন্তু ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সম্পৃক্তদের গ্রেফতারের পক্ষে। তাদের জরিমানা করে জেল দেওয়ার জন্য সুপারিশ করি।
বিআইডব্লিউটিএ ঢাকার পাশে যত নদীর ২৪০ কিলোমিটার এলাকাকে বন্দর ঘোষণা করেছে। শুধু পানগাঁওয়ের জায়গাটা চট্টগ্রাম বন্দরের অধীনে। এ পোর্ট এলাকা তাদের আওতায়। সেখানে জেলা প্রশাসনের কোনো হস্তক্ষেপ নেই। এই বন্দর এলাকা কী তারা মেইনটেইন করতে পারছেন। তাদের বন্দর এলাকায় পাইপ দিয়ে নদীতে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। নদীর জায়গা দখল করে ডকইয়ার্ডসহ বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে উঠেছে। তারা কেন অ্যাকশন নিতে পারছে না? এত বড় পোর্টেরও তো দরকার নেই।
কিন্তু কিছু এনজিও’র কাছে তারা চায় কমিশনে পুলিশ থাকবে। ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে। জায়গায় জায়গায় গিয়ে তছনছ করবে। কমিশনের কাজের ধরন তো এমন নয়। তারা (এনজিও) কমিশনের নাম ভাঙিয়ে কিছু বেনিফিটও পাবে।
নদী নিয়ে কারও মধ্যে দ্বিমত নেই। সবাই জানে নদীদূষণ করা খারাপ। এটার খারাপ দিক বোঝানোর জন্য তো কার্টুন চিত্র, নৌকাবাইচ এগুলোর প্রয়োজন নেই। পৌরসভাসহ যারা নদীতে ময়লা ফেলে সেটা বন্ধ করার জন্য কাজ করা উচিত। নদীকে বাঁচা…সেটা তো আছেই। কিন্তু তুমি ওটাকে ঠেকাও না কেন? মেয়রকে বলো, যারা ফেলে তাদের বলো। ছবি নিয়ে পুলিশের কাছে যাও, প্রচার করো। নৌকা নিয়ে ঘুরে বেড়ানো, এটা সেটা করা- এগুলো করে মানুষের অ্যাকটিভিটিস অন্য দিকে ই-হয়ে যায়, কাজের কাজ কিছুই হয় না।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন