র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও সংস্থাটির সাবেক-বর্তমান কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দেয়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আমেরিকার একটি অভ্যাস।
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্ক সময় সন্ধ্যায় হোটেল লোটেতে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন বলে মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যে ছয়জনের বিরুদ্ধে আমেরিকান সরকার (স্যাংশন) দিয়েছে আমরা কারণ জানতে চাই। ওরা আমাদের সঠিক, সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দেয়নি এখনও। সুতরাং আমরা জানি না। আর আমেরিকার একটা অভ্যাসও আছে বিভিন্ন দেশে স্যাংশন দিয়ে থাকে। এটা তাদের ব্যাপার।
র্যাবের কারণে বাংলাদেশ সন্ত্রাসমুক্ত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একসময় সারাদেশে একই সঙ্গে ৪৯৫টি স্থানে বোমা হামলা হয়েছিল। বিচারকের এজলাসে, বিদেশি রাষ্ট্রদূতের উপরও বোমা হামলা হয়েছে। সারা দেশে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করার কারণে দেশ সন্ত্রামুক্ত হয়েছে।
সন্ত্রাস দমনে সরকারের সফলতার কথা তুলে ধরে মোমেন বলেন, ওইদিন এখন আর নেই। আপনি প্রায় শুনতেন অপারেশন ক্লিনহার্টে কত লোক (মারা) গেছেন- ৫৫ জন ইয়াংম্যান, ২৬-২৭ বছরের লোক মনে আছে এটা, নাকি ভুলে গেছেন। এ র্যাব প্রতিষ্ঠার ফলে আপনার যে কাজটা হয়েছে। ইদানিং আমাদের দেশে সন্ত্রাসী নেই। লাস্ট সন্ত্রাসী ছিল হলি আর্টিজেন। দ্যাট ওয়াজ লাস্ট ওয়ান।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসী নেই বলে আমাদের দেশে উন্নয়ন হচ্ছে। স্কুল-কলেজের সেশন অন টাইমে হচ্ছে, কোনো ঝামেলা নেই। ব্যবসায়ী নিশ্চিন্তে ব্যবসা করতেছে। অভিভাবকরা খুশি স্কুলে বাচ্চা গেলে ফিরে আসছে ঠিক সময়ে। কোনো সন্ত্রাসীর ভয় নেই। শুধু আমাদের দেশ না প্রতিবেশী রাষ্ট্র খুশি সন্ত্রাসীর আতঙ্ক না থাকায়।
র্যাব কর্মকর্তাদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কোনো সম্ভাবনা আছে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিষয়টা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ব্যাপার। সরকারের পক্ষ থেকে কারণ জানতে চাওয়া হলেও তারা কোনো কারণ জানাতে পারেনি। পৃথিবীর বহু দেশে বহু মানুষকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার এভাবে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কিছু কিছু দুষ্টু লোক তারা মনে করে এ র্যাবের কারণে ও সরকারের বিশেষ অবস্থানের কারণে সন্ত্রাসী হচ্ছে না, ঝামেলা করতে পারতেছে না। বিভিন্ন রকম প্রচারণা করেছে। যারা এদের ওপরে স্যাংশন দিয়েছেন এটা তাদের দায়দায়িত্ব এটা উড্রো করার। আর তারা আমাদের বলেননি কেন দিয়েছেন।
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সকালে জাতিসংঘের ৭৭তম সাধারণ অধিবেশনের উদ্বোধনী পর্বে অংশগ্রহন করেন। পরে নিউক্লিয়ার টেস্ট বান ট্রিয়েটি অরগানাইজেশনের নির্বাহী সেক্রেটারি রবার্ট ফ্লয়েড পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। এ বৈঠকে পারমানবিক অস্ত্রের সাধারণ ও সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা জানান তিনি। পারমাণবিক অস্ত্রের পরিবর্তে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বৈশ্বিক সম্পদের ব্যবহার করা উচিত বলে মতামত ব্যক্ত করেন তিনি। এছাড়া ডিজিটাল কো-অপারেশন অরগানাইজেশন-ডিসিও এর সেক্রেটারি জেনারেল দিমা আল ইয়াহিয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করে সংগঠনের সদস্যপদ গ্রহনের অনুরোধ জানান।
ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন