পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফকে ১ টন আম উপহার পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুভেচ্ছার নিদর্শনস্বরূপ বাংলাদেশের সরকার প্রধানের পক্ষ থেকে রোববার ওই উপহার পাঠানো হয় বলে নিশ্চিত করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সূত্রমতে, সন্ধ্যায় কাতার এয়ারওয়েজের নিয়মিত ফ্লাইটে (কার্গোতে) প্রধানমন্ত্রীর উপহারের আমগুলো কার্টনবন্দি করে পাঠানো হয়েছে। দোহা হয়ে সোমবার ভোরে তা ইসলামবাদে পৌঁছাবে। আজ দিনের শেষার্ধে বা মঙ্গলবার সকালে ইসলামাবাদস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর উপহারগুলো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে হস্তান্তর করার কথা রয়েছে। উল্লেখ্য, গত বছর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের জন্য এক হাজার কেজি ‘হাঁড়িভাঙা’ আম পাঠিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবারে কী জাতের আম পাঠানো হয়েছে তা এখনই প্রকাশ করতে চাননি কর্মকর্তারা। তবে তারা বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের ১৪টি দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আম উপহার পাঠিয়েছেন।
যার মধ্যে বেশির ভাগই গেছে আম্রপলি জাতের। ভারতের প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে উন্নতমানের সুস্বাদু ‘আম্রপলি’ জাতের আমই পাঠানো হয়েছে। তবে মালদ্বীপ এবং ভুটানসহ কয়েকটি দেশে হাঁড়িভাঙা জাতের আম গেছে।
স্মরণ করা যায়, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনা না করা, যুদ্ধকালীন ট্রেজারির ন্যায্য হিস্যা বুঝিয়ে না দেয়ায় ৫০ বছরে ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্ক টানাপড়েনের মধ্যদিয়েই যাচ্ছে। এক যুগের বেশি সময় ধরে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বাৎসরিক রুটিন বৈঠক ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) পর্যন্ত আটকে আছে। তাছাড়া ২০১৩ সাল থেকে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিয়ে ইসলামাবাদের অহেতুক প্রশ্ন উত্থাপন, অযাচিত হস্তক্ষেপ তথা নাক গলানোর কারণে সম্পর্ক তিক্ততার চরম পর্যায়ে পৌঁছেছিল। তখন হাইকমিশনার তলব এবং পদস্থ কূটনীতিকদের পাল্টাপাল্টি বহিষ্কারও প্রত্যক্ষ করেছে দুই দেশ।
কিন্তু গত ক’বছর ধরে ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্ক নাটকীয়ভাবে ইউটার্ন নিয়েছে। অনেকে এর নেপথ্যে চীনের মধ্যস্থতা রয়েছে বলে ধারণা করেন। বিশেষ করে ইমরান খানের আমলে সম্পর্ক ইতিবাচক অনেক পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। তিনি একাধিকবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। ২০১৯ সালে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ অধিবেশনের সাইড লাইনে দেখাও করেন। সম্পর্কের সেই রূপান্তরের ধারাবাহিকতায় গত বছর থেকে ঢাকা-ইসলামাবাদ যে ‘ম্যাঙ্গো ডিপ্লোমেসি’ শুরু হয়েছে তার ইতিবাচক ফল রয়েছে বলে মনে করে বিশ্লেষকরা। গেল বছরের উপহারকে দু’দেশের সম্পর্কের ‘বিশেষ নজির’ হিসেবে উল্লেখ করেছিল ইসলামাবাদ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন