গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদৈর আইনজীবী ইউসুফ আলীর ৬টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ (ফ্রিজ) করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইউনিট (বিএফআইইউ)। গতকাল এডভোকেট ইউসুফ আলী নিজে সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, সকালে বাংলাদেশ ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে দেখেছি আমার ৬টি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। টাকার বিনিময়ে গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে শ্রমিক-কর্মচারীদের মামলা প্রত্যাহারের অভিযোগ অস্বীকার করে আইনজীবী ইউসুফ আলী এটাকে গুজব, সম্পূর্ণরূপে অসত্য, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। সুপ্রিম কোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে আইনজীবী ইউসুফ আলী সাংবাদিকদের বলেন, আমাকে নিয়ে ১২ কোটি টাকার যে গল্প বানানো হয়েছে, তা সম্পূর্ণ আষাঢ়ে গল্প ছাড়া আর কিছু না। আমি সকালে গিয়ে দেখেছি, আমার সবগুলো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। আমার ব্যক্তিগত ৩টি অ্যাকাউন্ট আর আমার পার্টনারের ২টা আর আমার চেম্বারের একটা অ্যাকাউন্ট। সবগুলো অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। ২০০৬ সাল থেকে কোম্পানির মুনাফার ৫ শতাংশ লভ্যাংশ শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টন করার কথা। কিন্তু সেই লভ্যাংশ শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টন না করায় ১০৭ জন শ্রমিক কর্মচারীর পক্ষে শ্রম আদালতে ১০৭টি মামলা দায়ের করি।
বিজ্ঞাপন
গ্রামীণ টেলিকম এই ১০৭টি মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে শতাধিক রিট পিটিশন দায়ের করেন।
যেখানে আমরা শ্রমিক বন্ধুদের পক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি। তিনি বলেন, গ্রামীণ টেলিকম কর্তৃপক্ষ গত ২৫শে অক্টোবর ২০২০ সালে কেবলমাত্র ব্যবস্থাপনা পরিচালাক ব্যতীত অপর ৯৯ কর্মীকে একসঙ্গে এক নোটিশেই বেআইনিভাবে ছাঁটাই করা হয়েছিল। উক্ত বেআইনি ছাঁটাই চ্যালেঞ্জ করে চলমান রিট পিটিশনে আমরা পৃথক পৃথক শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য ৩৮টি দরখাস্ত দায়ের করি এবং ছাঁটাইকৃত শ্রমিক-কর্মচারীদের চাকুরিতে পুনর্বহাল করতে প্রফেসর মোহাম্মদ ইউনূসদের বাধ্য করি। একইসঙ্গে গ্রামীণ টেলিকমের অবসায়ন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন।
আইন অনুযায়ী পাওনা টাকা পরিশোধ করা হবে। সম্প্রতি আদালতের বাইরে এমন সমঝোতার পর মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে ছাঁটাই, পাওনা নিয়ে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারী ও শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের করা শতাধিক মামলা প্রত্যাহার করা হয়। এমন সংবাদ প্রকাশিত হয় শ্রমিক-কর্মচারীদের আইনজীবী ১২ কোটি টাকার বিনিময়ে গ্রামীণ টেলিকমের সঙ্গে সমঝোতা করেছেন। তারই অংশ হিসেবে আদালতের বাইরে সমঝোতা করে শ্রমিক-কর্মচারীদের মামলা প্রত্যাহারে বাধ্য করেছেন। প্রতিবেদনটি নজরে আসার পর গত বৃহস্পতিবার বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ বিস্ময় প্রকাশ করে শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধ সংক্রান্ত প্রতিবেদন চান আইনজীবীদের কাছে। প্রতিষ্ঠানটির কোন কর্মচারীকে কতোটাকা দেয়া হয়েছে তার তালিকা এবং এ সংক্রান্ত নথিসহ আগামী ২রা আগস্টের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। এ সময় হাইকোর্ট প্রশ্ন তোলেন, বাংলাদেশ কেন, এই উপমহাদেশে এমন কোনো আইনজীবী জন্ম নেননি যার ফি ১২ কোটি টাকা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন