বাংলাদেশ জাতীয় আইনজীবী সমিতির সভাপতি সিনিয়র অ্যাডভোকেট শাহ মো. খসরুজ্জামান বলেছেন, অর্থ পাচার রোধ ও ব্যাংকিং খাতে দুর্নীতি বন্ধ করা উন্নয়নের সরকারের একমাত্র চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এ সমস্যাকে দূর করার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ব্যাংক ও বিমাখাতকে নিয়ে আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করলে ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। এতে অর্থ পাচার ও দুর্নীতি পর্যায়ক্রমে কমে আসবে।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে সোমবার (২৭ জুন) বিকেলে ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের (এলআরএফ) কার্যালয়ে ২০২২-২৩ সালের বাজেটের ওপর আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় জাতীয় আইনজীবী সমিতির মহাসচিব মো. সগীর আনোয়ার, সহ-সভাপতি কেএম জাবির ও উপ-মহাসচিব শাহেদ আলী জিন্নাহ্ উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে অ্যাডভোকেট শাহ মো. খসরুজ্জামান বলেন, আপনারা লক্ষ্য করেছেন, যুদ্ধকালীন অর্থনৈতিক সংকটের থাবা থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য কেবলমাত্র বিদেশে পাচার করা অর্থ আনয়নের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে ঘোষিত অর্থের ওপর বিশেষ সুবিধার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে ২০১৯ সাল থেকে সুস্পষ্টভাবে আমরা বলে আসছি, বিদেশে পাচার করা অর্থ ও দেশে জমা করা অর্থ মুদ্রা বাজারে আনতে হলে— অর্থপাচার বন্ধ করার কথা চিন্তা করলে দেশের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে সরকারকে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে। বাজেটে এগুলো অন্তর্ভুক্ত করলে অর্থনীতিতে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাবে।
এ বিষয়ে জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে এবং বাজেট বাস্তবায়নে জনগণের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) একটি প্রচারণা সেল গঠন করে স্থায়ীভাবে এটি পরিচালনা করতে হবে, যাতে জনগণ সার্বিকভাবে সরকারের বিশদ সুবিধাগুলো জানতে এবং বুঝতে পারে। এ বিষয় জনগণকে উদ্ধুদ্ধ করা এনবিআরের দায়িত্ব।
দেশের আইনজীবীদের পক্ষ থেকে বাজেটের অন্তর্ভুক্তির জন্য নিম্নর সুপারিশগুলো বিবেচনার আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি বলেন, যুদ্ধকালীন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় বাজেটে লিখিত পাচারকারীর অর্থ এর পরিবর্তে ‘অপ্রদশির্ত অর্থ’ সংশোধন করে বিদেশে পাচার করা এবং দেশে জমা করা অর্থের ওপর ৫ শতাংশ অগ্রিম কর নিয়ে এনবিআরের ঘোষণায় আকৃষ্ট হবে না।
শাহ খসরুজ্জামান বলেন, দেশের শিল্প, কল কারখানা স্থাপনসহ কাঁচামাল উৎপাদনের প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল প্রতিষ্ঠাসহ স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠান স্থাপনে বিনিয়োগের ওপর ৫ শতাংশ অগ্রিম কর নিয়ে বিনা প্রশ্নে এনবিআরের অনুমোদন নিতে হবে।
তিনি বলেন, কর বিভাগে অপ্রদর্শিত ক্রয় করা জমির রেজিস্ট্রি করা মূল্যের ওপর ৫ শতাংশ কর নিয়ে বিনা প্রশ্নে কর কর্মকর্তার অনুমোদনপ্রাপ্ত হলে ওই জমির ওপর আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন এবং মার্কেট গড়ে উঠবে। এতে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পর্যায়ক্রমে সরকারের আয় হবে।
এছাড়া আবাসন খাতে নির্মাণসামগ্রীর বাজার মূল্যবৃদ্ধিকরণ রোধকল্পে নির্মাণসামগ্রীর কাঁচামালের ওপর আমদানি খরচ কমানোর ব্যবস্থা করে এ খাতকে সচল করতে হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন