কুমিল্লা সিটি নির্বাচন ১৫ জুন। ইতোমধ্যে মেয়র, কাউন্সিলর প্রার্থীদের মনোনয়ন যাচাই-বাছাই শেষ হয়েছে। শুক্রবার প্রতীক পেয়েই প্রচারে নেমে পড়েছেন প্রার্থীরা। পাশাপাশি ভোটের হিসাব-নিকাশ করছেন তারা।
২০১১ সালে কুমিল্লা পৌরসভার ১৮টি ও সদর দক্ষিণ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে সিটি করপোরেশনের যাত্রা শুরু। এরপর ২০১২ ও ২০১৭ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দুটি নির্বাচনেই জয়-পরাজয়ে ভূমিকা রাখেন দক্ষিণের ৯ ওয়ার্ডের ভোটাররা। এবারও মেয়র প্রার্থীদের জয়-পরাজয়ে ভূমিকা রাখবে ৬৭ হাজার ভোটার-সংবলিত ওই ওয়ার্ডগুলো।
এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন প্রার্থী। ক্ষমতাসীন দলের মনোনীত আরফানুল হক রিফাত, সদ্য বিদায়ী মেয়র বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মনিরুল হক সাক্কু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি বহিষ্কৃত নেতা নিজাম উদ্দিন কায়সার, নাগরিক কমিটির কামরুল হাসান বাবুল ও ইসলামী আন্দোলনের রাশেদুল ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
গত দুই নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের কারণ বিশ্লেষণ করে দক্ষিণের ৯ ওয়ার্ডের ভোটারদের আস্থা অর্জনে নিজ নিজ কৌশল নিয়ে কাজ শুরু করেছেন তারা। বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, যিনি ওই ওয়ার্ডগুলোর ভোট বেশি আয়ত্ত করতে পারবেন তিনিই জয়ী হবেন।
সরেজমিন দেখা যায়, পৌরসভা থেকে সিটি করপোরেশন নামের পরিবর্তন হলেও ১১ বছরে ২০নং ওয়ার্ডে তেমন উন্নয়ন হয়নি। উনাইশার, কাজীপাড়া, দিশাবন, লক্ষ্মিনগর এলাকা নিয়ে এই ওয়ার্ডটি গঠিত। নাগরিকদের অভিযোগ উন্নয়ন না হলেও করের বোঝা বইতে হচ্ছে তাদের। প্রতি বছর কর দিয়েই যাচ্ছেন, বিনিময়ে সুযোগ-সুবিধাও পাচ্ছেন না।
এই চিত্র দক্ষিণের সব কয়টি ওয়ার্ডে। ৯টি ওয়ার্ডে কয়েকটি পাকা সড়ক ছাড়া দৃশ্যমান উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি। পৌরসভা থেকে সিটি করপোরেশনে রূপান্তরিত হলেও ১০ বছরে ওয়ার্ডগুলোতে নাগরিক কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই বললেই চলে। গ্রাম-গঞ্জের পরিবেশ।
সড়ক ও ড্রেন ব্যবস্থা ছাড়াও শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে কোনো উন্নয়ন নেই। কুমিল্লা উত্তর অর্থাৎ সদরের ১৮ ওয়ার্ডে আবাসিক এলাকাগুলোর ময়লা পানির নিষ্কাশনের ড্রেন দক্ষিণের ৯ ওয়ার্ডের ওপর দিয়ে গেছে। এ ছাড়া কুমিল্লা ইপিজেডের বিভিন্ন কল-কারখানার দূষিত আবর্জনা পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের কৃষি ও জীব বৈচিত্র্যকে হুমকিতে ফেলেছে।
সদর দক্ষিণ পৌরসভার সাবেক এলাকাটি ২০নং ওয়ার্ডে রূপান্তরিত হলেও দীর্ঘ ১১ বছরেও এখানকার রাস্তাঘাট তেমন সংস্কার হয়নি, পর্যাপ্ত ড্রেন নেই, ডাস্টবিন নেই, সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত বলেন, দক্ষিণের ৯টি ওয়ার্ডে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এটি সত্য। ওয়ার্ডগুলোতে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দিতে একজন দক্ষ এবং নাগরিক বান্ধব মেয়র প্রয়োজন। আমি মনে করি, ৯ ওয়ার্ডের বাসিন্দারা আমাকে সেই কাজ করার দায়িত্ব দেবেন।
সদ্য বিদায়ী মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ওই ৯টি ওয়ার্ডের উন্নয়ন আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। এবার নির্বাচিত হলে ওয়ার্ডগুলোকে পরিপূর্ণ সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করবো।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন