পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সাবেক চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ (৫৭) মারা গেছেন। তবে এ মৃত্যুকে ‘রহস্যজনক’ উল্লেখ করে থানা পুলিশ ও আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন মরহুমের ছোটভাই কবির আহামেদ। পল্টন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সেন্টু মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘কবির আহামেদসহ তাদের অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনের অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) বিকালে পুরানা পল্টন তাদের বাসার সামনে থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই মৃত্যুতে মৃতের ছোটভাই ও স্বজনদের সন্দেহ থাকায়, মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য লাশটি মর্গে নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।
কবির আহামেদ এরই মধ্যে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন, তার আগে আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছেন বলেও জানান মো. সেন্টু মিয়া।
এর আগে গতকাল সোমবার (২৪ জানুয়ারি) হাসান আহমেদকে (৫৭) অসুস্থ অবস্থায় তার স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস তাকে প্রথমে ইসলামী ব্যাংক সেন্টাল হাসপাতাল নিয়ে যান। সেখান থেকে বারডেম হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সন্ধ্যা ৬টার সময় তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জান্নাতুল ফেরদৌস জানিয়েছেন, তার স্বামী হাসান আহমেদের নামে অনেক সম্পত্তি রয়েছে, এসব আত্মসাৎ করার জন্য পরিবারের সদস্যরা ষড়যন্ত্র করছে। এর আগে হাসান আহমেদের বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়েছে। এমনকি দুই বছর আগে তাকে অন্যায়ভাবে তার পদ থেকে সরানো হয়েছে। তাকে সরানোর পর ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাসানের ছোটভাই কবির হোসেন বসেছেন। আর চেয়ারম্যান পদে মোতাহার হোসেন নামে একজনকে বসানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কবির হোসেন মৃতের আপন ছোট ভাই। তিনি আমার ও আমার ভাই বোনের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা করেছেন। আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।
দুই বছর আগে হাসান আহমেদ স্ট্রোক করেছিলেন জানিয়ে তার স্ত্রী বলেন, ‘সেই থেকে তিনি দাঁড়াতেও পারতেন না। হুইল চেয়ারে করে চলাফেরা করতে হতো।
‘সম্পত্তি জন্য পারিবারিক বিরোধের’ কারণেই পরিকল্পিতভাবে ‘হয়রানি’ করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, ‘তারা লাশটা দাফনও করতে দেয়নি। তারা মামলা করে পুলিশ পাঠিয়েছে। পরে পুলিশ মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে নিয়ে যায়। অত্যান্ত দুঃখের বিষয়, তারা কেউ একবারের জন্য অসুস্থ অবস্থায় তাকে দেখতেও আসেননি।
পরে ময়নাতদন্তের পর সন্ধ্যা ৬টার দিকে স্ত্রী ও তার স্বজনরা মরদেহটি নিয়ে যান।
হাসান আহামেদ (৫৭), চাদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার গাজিপুর গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিন আহামেদের ছেলে। দুই মেয়ে ও এক ছেলের এই জনক পুরানা পল্টনের একটি ভবনে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন