গাজীপুরের টঙ্গীতে টাকার বিনিময়ে আসামিকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত মোমিনুল ইসলাম টঙ্গী পূর্ব থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, মাদকসহ আটকের পর আসামিকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে আসামির স্ত্রীর নিকট ২০ হাজার টাকা দাবি করেছেন তিনি। পরে আসামির স্ত্রী ১৬ হাজার ৭০০ টাকা পরিশোধ করলেও আসামিকে না ছেড়ে থানায় এনে মাদক মামলা দিয়েছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
টাকা নেওয়ার কথা স্বীকারও করেছেন পুলিশের এএসআই মমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিষয়টি ওসি স্যারও অবগত আছেন।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টায় আরিচপুর বউ বাজার এলাকা থেকে অমিত হাসানকে আটক করা হয়। অমিত টঙ্গীর দক্ষিণ আরিচপুর এলাকার কাজী ভিলায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করেন।
অমিতের স্ত্রী বৃষ্টি জানান, অমিতকে আটকের পরপরই টঙ্গী পূর্ব থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মোমিনুল ইসলাম মুঠোফোনে যোগাযোগ করে ২০ হাজার টাকা নিয়ে বউ বাজার রেলগেইট এলাকায় দেখা করতে বলেন। পরে ১৩ দিনের সন্তানকে খালি বাসায় রেখে টঙ্গী বাজার এলাকায় একটি জুয়েলারির দোকানে স্বর্ণালঙ্কার বন্ধক রেখে ১৬ হাজার ৭০০ টাকা নিয়ে এএসআই মমিনুলের হাতে তুলে দেই।
টাকা বুঝে পাওয়ার পর মমিনুল জানান, মধুমিতা রেলগেইট এলাকায় গিয়ে তোমার স্বামীকে ছেড়ে দেব; তুমি বাসায় চলে যাও। কিন্তু আমার স্বামীকে না ছেড়ে থানায় নিয়ে যান তিনি। পরে পুলিশের মোটরসাইকেলের পেছনে ছুটতে ছুটতে টঙ্গী পূর্ব থানার গেইট পর্যন্ত চলে আসি। তখন এএসআই মমিনুল জানান, তোমার স্বামীকে ছাড়া যাবে না। তাকে ৫০০ পিস ইয়াবার মামলায় চালান দেয়া হবে। এ কথা শুনে টাকা ফেরত চাইলে এএসআই মমিনুল আমাকেও শরীরে করে মাদক পাচারের অভিযোগ এনে মামলা দিয়ে চালান করার হুমকি দেন। পরে গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিত টের পেয়ে ৮ হাজার টাকা ফেরত দেন।
বৃষ্টি আরও অভিযোগ করে বলেন, স্বামীকে ছেড়ে দেয়ার জন্য এএসআই মমিনুল ইসলামকে ১৬ হাজার ৭০০ টাকা দিয়েছি। কিন্তু তিনি আমাকে ৮ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন। বাকি টাকা দিয়ে মাল (ইয়াবা) কিনে মামলা দেবে বলে জানান মমিনুল। গ্রেপ্তারের সময় অমিতের কাছে ৮ পিস ইয়াবা পাওয়ার কথা জানালেও বুধবার দুপুরে ৫২ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে আদালতে পাঠিয়েছে। বাকি ইয়াবাগুলো এলো কোথা থেকে..?
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মমিনুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। বলেন, বিষয়টি ওসি স্যার অবগত আছেন। ওসি স্যারের নির্দেশে কিছু টাকা ফেরতও দিয়েছি। আর আমাদের মাল (ইয়াবা) কিনতে কিছু খরচ আছে। তাই বাকি টাকা রেখে দিছি।
এ বিষয়ে টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)জাবেদ মাসুদ বলেন, আমি বিষয়টা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। যদি সে এমন কিছু বলে থাকে, তাহলে তাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।
ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন