মোল্লা গোষ্ঠী ও ফকির গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। পূর্বশত্রুতার জের এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বুধবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে। এতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় এলাকা। সংঘর্ষে একজন নিহত হন। আহত হন উভয় গোষ্ঠীর প্রায় ৬০ জন। ভাঙচুর ও লুট করা হয় প্রায় ২৫ বাড়ি।
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ীতে মোল্লা গোষ্ঠী এবং ফকির গোষ্ঠীর মধ্যে সকাল ১০টায় শুরু হয় সংঘর্ষ। প্রায় ৩ ঘণ্টা ব্যাপী এ সংঘর্ষ চলে। পরে পুরুষ শূন্য হয়ে পড়ে গ্রাম। লুটের ভয় সবকিছু নিয়ে বাড়ি ছাড়তে দেখা গেছে নারীদের।
সংঘর্ষে নিহত শরিফুল ইয়ারফিন ওই গ্রামের ইউসুফ মোল্লার ছেলে। আহতদের শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পাবনার বেড়া ও ফরিদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরেই বুধবার সকালে লাঠি, শাবল, দা, বল্লমসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয় গোষ্ঠীর লোকজন। এ সময় নারীরাও সংঘর্ষে অংশ নেন। সংঘর্ষ চলাকালে বাঘাবাড়ী-চাটমোহর আঞ্চলিক সড়কের বাঘাবাড়ী এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় যান চলাচল বন্ধ হয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
সংঘর্ষে আহত ইয়ারফিনকে বেড়া হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, সংঘর্ষের চলাকালে উভয়পক্ষের ২৫ বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। সংঘর্ষের পর উভয় পক্ষই বাড়ির আসবাবপত্র, ফ্রিজ, টেলিভিশন ও গরু বাছুর নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়। অনেককে সবকিছু নিয়ে এলাকা ছাড়তে দেখা গেছে। তারা জানায়, আবারো সংঘর্ষ ও লুটের ভয়ে এলাকা ছাড়ছেন। সংঘর্ষের পর পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে পুরো এলাকা।
শাহজাদপুর থানার সার্কেল এএসপি হাসিবুল আলম জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
শাহজাদপুর থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল মজিদ বলেন, সংঘর্ষে নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মর্গে পাঠনো হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুনরায় সংঘর্ষের আশঙ্কায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পুলিশ উভয় পক্ষের ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এখনো উভয় পক্ষ থেকে কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন