বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার মামলায় আসামিদের সাজা হবে কি না, তা জানা যাবে রোববার।
ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের বিচারক আবু জাফর কামরুজ্জামান এদিন দুপুরে আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন।
বুয়েটের শেরেবাংলা হলের আবাসিক ছাত্র আবরারকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনায় ক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বুয়েট। ওই শিক্ষায়তনে নিষিদ্ধ হয় ছাত্র রাজনীতি।
আবরারের বাবা, এ মামলার বাদী বরকত উল্লাহ শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আসামিদের সর্বোচ্চ সাজার আশায় রয়েছি আমরা।”
আবরার ফাহাদ
এ ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর আবু আব্দুল্লাহ ভূঁঞা শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা র্যাগিং কালচার, চাঁদাবাজি, জোর করে কথা শুনতে বাধ্য করা- এসবের বিরুদ্ধে এ মামলার মাধ্যমে সবাইকে সচেতন করে দিতে চাই।
“মামলায় ৪৬ জন সাক্ষী ভালোভাবে সাক্ষ্য দিয়ে মামলা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন । আশা করি ২৫ আসামির সবাইকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।”
অন্যদিকে আসামিপক্ষের অন্যতম আইনজীবী আমিনুল গণী টিটো বলেন, “এ আদালতে যা কিছুই আদেশ আসুক না কেন, উচ্চ আদালত থেকে আমরা ছাড়া পাব।”
তার ভাষ্য, “ঘটনার পর প্রথমে দাখিল করা জিডিটাই এফআইআর হিসাবে গণ্য করা উচিৎ ছিল। পরের এজাহারে আসামিদের নাম ঢোকানো হয়েছে। আসলদের ছেড়ে দিয়ে নকলদের আসামি করা হয়েছে।”
২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলা বিচারে এসেছিল। দুই পক্ষে যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে গত ১৪ নভেম্বর বিচারক এ মামলার রায়ের জন্য ২৮ নভেম্বর তারিখ রাখেন।
আবরার হত্যায় অভিযুক্ত যারা
এজাহারের ১৯ আসামি: বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল (সিই বিভাগ, ১৩তম ব্যাচ), সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ (১৪তম ব্যাচ, সিই বিভাগ), সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন (কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৫তম ব্যাচ), তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার (মেকানিক্যাল ইঞ্জনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির (ওয়াটার রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশারফ সকাল (বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য মুনতাসির আল জেমি (এমআই বিভাগ), সদস্য মুজাহিদুর রহমান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য হোসেন মোহাম্মদ তোহা (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), সদস্য এহতেশামুল রাব্বি তানিম (সিই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), শামীম বিল্লাহ (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মাজেদুল ইসলাম (এমএমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), আকাশ হোসেন (সিই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর (মেকানিক্যাল, ১৭তম ব্যাচ), মাহমুদুল জিসান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), মোয়াজ আবু হোরায়রা (সিএসই, ১৭ ব্যাচ), এ এস এম নাজমুস সাদাত (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ) ।
এজাহারের বাইরের ৬ আসামি: বুয়েট ছাত্রলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না (মেকানিক্যাল, তৃতীয় বর্ষ), আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহা (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং), মিজানুর রহমান (ওয়াটার রিসোসের্স, ১৬ ব্যাচ), শামসুল আরেফিন রাফাত (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং), উপ-দপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ (কেমিকৌশল) এবং মাহামুদ সেতু (কেমিকৌশল)।
পলাতক ৩ জন: এহতেশামুল রাব্বি তানিম (সিই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মাহমুদুল জিসান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ) এবং মুজতবা রাফিদ (কেমিকৌশল)।
‘স্বীকারোক্তি’ দিয়েছেন ৮ জন: মেহেদী হাসান রবিন, অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মনিরুজ্জামান মনির, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ, এ এস এম নাজমুস সাদাত এবং খন্দকার তাবাখ্খারুল ইসলাম তানভীর।
মারপিটে সরাসরি জড়িত ১১ জন: মেহেদী হাসান রবিন, অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মনিরুজ্জামান মনির, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ, শামীম বিল্লাহ, এ এস এম নাজমুস সাদাত, মুনতাসির আল জেমি, এহতেশামুল রাব্বি তানিম এবং খন্দকার তাবাখ্খারুল ইসলাম তানভীর।
ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত ১১ জন: মেহেদী হাসান রাসেল, মুহতাসিম ফুয়াদ, মেহেদী হাসান রবিন, অনিক সরকার, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মনিরুজ্জামান মনির, ইফতি মোশাররফ সকাল, মুনতাসির আল জেমি, এহতেশামুল রাব্বি তানিম, মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ এবং মুজতবা রাফিদ।
২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচারে আসে আবরার হত্যা মামলা২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচারে আসে আবরার হত্যা মামলা
মামলা বৃত্তান্ত
আবরারকে যে রাতে হত্যা করা হয়, তার পরদিন ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর তার বাবা ১৯ শিক্ষার্থীকে আসামি করে চকবাজার থানায় মামলা করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ এজাহারের ১৬ জনসহ মোট ২১ জনকে গ্রেপ্তার করে।
পাঁচ সপ্তাহ তদন্ত করে তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান ওইবছর ১৩ নভেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে যে অভিযোগপত্র জমা দেন, সেখানে আসামি করা হয় মোট ২৫ জনকে।
অভিযোগপত্র গ্রহণ করে গত ১৮ নভেম্বর পলাতক চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। তাদের মধ্যে একজন পরে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে মামলাটি পরে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এ স্থানান্তর করে আদেশ জারি হয়। বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
গত বছরের ৫ অক্টোবর এ মামলার বাদী ও আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ আদালতে সাক্ষ্য দেন। এর মধ্য দিয়ে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ৬০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। কারাগারে থাকা ২২ আসামি গত ১৪ সেপ্টেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। তিন আসামি পলাতক থাকায় তারা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাননি।
এরপর কয়েকজন আসামি নিজেদের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্যও দেন। এ মামলার চার্জ গঠনের সময় শব্দগত ত্রুটি থাকায় ৭ অক্টোবর রাষ্ট্রপক্ষ তা সংশোধনের আবেদন করে। পরদিন ২৫ আসামির বিরুদ্ধে পুনরায় অভিযোগ গঠন করে আদালত।
আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের পর রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করে। গত ২৪ অক্টোবর রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল যুক্তিতর্ক উপস্থাপনে পলাতক তিন আসামিসহ ২৫ জনের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।
অন্যদিকে অন্যদিকে আসামিপক্ষের অন্যতম আইনজীবী আমিনুল গণী টিটো বলেন, এ মামলায় অনেক ‘গুরুত্বপূর্ণ দুর্বলতা’ রয়েছে, যার ফলে আসামিদের আটকানো ‘সম্ভব না’।
সিসিটিভি ফুটেজে আবরারকে নির্যাতনের পর ফেলে যাওয়ার ছবি
সন্দেহ থেকে পিটিয়ে হত্যা
আবরার ছিলেন বুয়েটের তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি।
মামলার আসামিদের সবাই বুয়েট ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। গ্রেপ্তার ২১ জনের মধ্যে আটজন আদালতে দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আবরারকে কীভাবে ক্রিকেট স্টাম্প আর স্কিপিং রোপ দিয়ে কয়েক ঘণ্টা ধরে বেধড়ক পেটানো হয়েছিল, সেই ভয়ঙ্কর বিবরণ উঠে আসে তাদের জবানবন্দিতে।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর সন্ধ্যার পর আবরারকে ওই হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। কয়েক ঘণ্টা ধরে নির্যাতনের পর দোতলা ও নিচতলার সিঁড়ির মাঝামাঝি জায়গায় তাকে অচেতন অবস্থায় ফেলে যায় কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী। ভোরে চিকিৎসক এসে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আবরার ফেইসবুকে তার শেষ পোস্টে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের করা কয়েকটি চুক্তির সমালোচনা করেছিলেন। বুয়েট ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাই যে ফেইসবুকে মন্তব্যের সূত্র ধরে ‘শিবির সন্দেহে’ আবরারকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে, তা সংগঠনটির তদন্তে উঠে এলে ১২ জনকে বহিষ্কার করা হয়।
গতবছর ১৩ নভেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্র দেওয়ার আগে হত্যার ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে তৈরি করা একটি ভিডিও সাংবাদিকদের দেখানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।
আবরারকে কেবল শিবির সন্দেহে ডেকে নেওয়া হয়েছিল, নাকি এর পেছনে অন্য কোনো কারণ ছিল- সেই প্রশ্ন সেদিন পুলিশের সংবাদ সম্মেলনে করেছিলেন একজন সাংবাদিক।
উত্তরে অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘শিবির হিসেবে সন্দেহের’ বিষয়টি ছিল আবরারের ওপর নির্যাতনের ‘একটি কারণ’। আসলে বুয়েট ছাত্রলীগের ওই নেতাকর্মীরা অন্যদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য ‘উচ্ছৃঙ্খল আচরণে অভ্যস্ত’ হয়ে গিয়েছিল।
“ছোটখাটে বিষয়ে কেউ একটু দ্বিমত পোষণ করলে, কিংবা কেউ এদের বিরুদ্ধে কথা বললে, কিংবা সালাম না দেওয়ার কারণেও এই র্যাগিংয়ের নামে, মানে অন্যদেরকে, নতুন যারা আসবে, তাদের আতঙ্কিত করে রাখার জন্যই তারা এই কাজগুলো করে অভ্যস্ত।”
এসব বিষয় হল বা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দেখার কথা। কিন্তু তদন্তে পুলিশ হল কর্তৃপক্ষের ‘এক ধরনের ব্যর্থতা’ দেখতে পেয়েছে বলে সেদিন জানান অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল।
“যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা রাজনৈতিক পরিচয়কে শেল্টার হিসাবে ব্যবহার করেছে। তারা অছাত্রসুলভ আচরণ করেছে।”
মনিরুল সেদিন বলেন, “তদন্তে উঠে এসেছে, রাত ১০টার পরে আবরারকে নির্যাতন করা শুরু হয় এবং রাত ২টা ৫০ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এর আগে যদি তাকে হাসপাতালে নেওয়া হত তাহলে হয়তো এমন পরিণতি হত না।”
বুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে সাবেক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল। ফাইল ছবিবুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে সাবেক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল। ফাইল ছবি
শেরেবাংলা হলের যে ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরারকে নির্যাতন করা হয়, সেই কক্ষের আবাসিক ছাত্র বুয়েট ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহাকেও অভিযোগপত্রে আসামি করা হয়েছে, যদিও এজাহারে তার নাম ছিল না।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নে মনিরুল সেদিন বলেন, “অমিত সাহা এর আগেও একজনকে পিটিয়েছে। আবরারকে মারপিটের সময় সে উপস্থিত না থাকলেও তাকে ডেকে আনাসহ তার বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়ার যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। এ কারণে তাকে আসামির তালিকায় প্রথম দিকে রাখা হয়েছে।”
আবরারকে কক্ষে ডেকে নিয়ে নির্যাতন চালানোর আগে দুই দিন শেরে বাংলা হলের ক্যান্টিন এবং ওই হলের অতিথি কক্ষে বৈঠক হয়েছিল বলে গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা সে সময় বলেছিলেন, ৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় ক্যান্টিনের বৈঠকে আটজন ছিলেন। পরদিন রাত ১০টায় অতিথি কক্ষের বৈঠকে আবরারকে মেরে হল থেকে বের করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এই দুই বৈঠকে মোট ১২ জন ছিলেন। তারা হলেন- মনিরুজ্জামান মনির, ইফতি মোশাররফ সকাল, আকাশ হোসেন, মুজতবা রাফিদ, অমিত সাহা, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, সামছুল আরেফিন রাফাত, এহতেশামুল রাব্বি তানিম, মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান মন্ডল জিসান, মুনতাসির আল জেমি, মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম এবং এ এস এম নাজমুস সাদাত।
ঘটনার সময় উপস্থিত না থাকলেও মেহেদী হাসান রাসেল এবং মুনতাসির ফুয়াদ বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দেন বলে তদন্তকারীদের ভাষ্য।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, রাসেল শেরে বাংলা হলের দোতলায় নামিয়ে রাখা আবরারের মৃতদেহ তাড়াতাড়ি সরিয়ে ফেলার জন্য বুয়েটের চিকিৎসককে চাপ দিয়েছিলেন।
আবরার ফাহাদ নিহত হওয়ার পর আন্দোলনে নেমে ১০ দফা দাবি তোলেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে বুয়েট শিক্ষক সমিতি ও সাবেক শিক্ষার্থীরাও সমর্থন প্রকাশ করেন।
তাদের দাবির মুখে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ, আবরার হত্যার আসামিদের সাময়িক বহিষ্কার এবং হলগুলোতে নির্যাতন বন্ধে নানা পদক্ষেপ নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন