মিয়ানমারের প্লেট বাউন্ডারি লাইনে একটি মাইক্রোপ্লেটের কাছাকাছি বার্মা ‘সেগিং ফল্টে’ সৃষ্ট ভূমিকম্পে কেঁপেছে চট্টগ্রামও।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ১।
তবে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসেব অনুযায়ী, ভূমিকম্পটি ছিল ৫.৮ মাত্রার।
এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ভারত সীমান্ত সংলগ্ন মিয়ানমারের চিন রাজ্যের রাজধানী হাখা শহরের ১৯.৫ কিলোমিটার উত্তর-উত্তরপশ্চিমে। কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩২.৮ কিলোমিটার গভীরে। এতে অন্যান্য বিভাগের পাশাপাশি চট্টগ্রাম বিভাগেও তীব্র ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে।
ভোরে বেশ কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী ভূমিকম্পে নগরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শহরের উঁচু ভবনগুলো দুলে ওঠে। অনেকে বাসাবাড়ি ছেড়ে খোলা স্থানে বের হয়ে আসেন। সনাতন ধর্মাবলম্বী নারীরা শঙ্খ ও উলুধ্বনি দেন।
বহদ্দারহাট কাঁচা বাজার এলাকার বাসিন্দা আহসান উল্লাহ খান সাকিব বলেন, ভূমিকম্পে তাদের পাশের একটি ভবন হেলে পড়েছে। আগে সানসেটের থেকে ভবনটির দূরত্ব ছিলো ২ ফুট, এখন তা একদম লেগে গেছে, ভবনের স্যুয়ারেজ পাইপও বেঁকে গেছে।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইসলামপুর ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভূমিকম্পে একটি মাটির ঘরের দেওয়াল ধ্বসে পড়ে। পাকা ভবনে ধরেছে ফাটল। স্থানীয় ইউপি সদস্য মুহাম্মদ সেকান্দর হোসেন চৌধুরী বলেন, পূর্ব নেজামশাহ পাড়ায় ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত নুর নাহার বেগমকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছি।
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) পরিচালিত ‘আর্থকোয়াক ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ সেন্টার’ (ইইআরসি)এর গবেষণায় জানা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগরের ৭৮ শতাংশ ভবনই ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে।
৪১টি ওয়ার্ডের এক লাখ ৮২ হাজার ভবনের মধ্যে এক লাখ ৪২ হাজারই ভূমিকম্প-ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে স্কুল ও হাসপাতাল ভবন এবং বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রগুলো। ৮ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্পে এসব ভবন ও বিদ্যুৎকেন্দ্র ধসে বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন