বড় ভাই’ না মানায় রাহাতকে স্টেপিং করেছে বলে জানিয়েছে ঘাতক সামসুদ্দোহা সাদী। ঘটনার পর সে নিজ এলাকা দক্ষিণ সুরমার হাজীপুরে চলে যায়। সেখান থেকেই এলাকা ছেড়ে পালায়।’ এভাবেই সিলেটে আলোচিত ছাত্রলীগ কর্মী আরিফুল ইসলাম রাহাত খুনের ঘটনা স্বীকার করেছে সাদী। গ্রেপ্তারের পর প্রথমে সিআইডি’র জিজ্ঞাসাবাদে এবং পরে সিলেটে আমলী আদালত-২ এর বিচারক সুমন ভূঁইয়ার আদালতে জবানবন্দিতে এসব তথ্য জানায়। এর আগে গতকাল সকালে সিআইডি’র কার্যালয়ে আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের আসামি গ্রেপ্তারসহ সার্বিক বিষয়ে প্রেস বিফ্রিং করেন সিআইডি’র বিশেষ পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা। এ সময় বিশেষ পুলিশ সুপার জানান- ‘কলেজছাত্র রাহাত খুনের ঘটনার পরপরই সিআইডি ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে। আর এই তদন্তের মারফতে কুষ্টিয়ার দুর্গম চরাঞ্চলে সাদীর সন্ধান মিলে। সেখান থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নতুন রিয়েলমি স্মার্টফোন কিনলেই ফ্রি ইন্টারনেট
তিনি জানান- ‘সাদীর দেয়া তথ্য মতে খুনে ব্যবহৃত ছোরা উদ্ধার করা হয়েছে। গত বুধবার হাজীপুর এলাকা থেকে সেই ছোরা উদ্ধার করা হয়। ফলে ঘটনার আলামতও মিলেছে। আর সাদীও ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা স্বীকার করেছে।’ তিনি বলেন- ‘যেহেতু এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে সেটি সিআইডি’র কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সিআইডি দ্রুত তদন্ত করে মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করবে।’ সিআইডি জানিয়েছে; ‘প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে সাদী বলে মূলত রাহাতকে হত্যার উদ্দেশ্য ছিল না। উদ্দেশ্য ছিল রাহাতকে চাকু দেখিয়ে স্টেপিং করে ভয়ভীতি দেখানো। তাই আগে থেকে সাদী, তানভীর, অলিদ তাৎক্ষণিক পরিকল্পনা করে। ঘটনার পর তিনজন পালিয়ে যায় সিলাম ইউনিয়নের হাজীপুর-জালালপুর এলাকায় একটি দোকানে চা খাচ্ছিল। এ সময় এক সাংবাদিক সাদীকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করেন রাহাতকে না কি তুমি হত্যা করেছো? তখন তারা জানতে পারে রাহাত মারা গেছে। যখন জানতে পারে রাহাত মারা গেছে তখন সাদীর মোবাইলের বিকাশে ১ হাজার ২০ টাকা ছিল। সেখান থেকে ১ হাজার টাকা ক্যাশ আউট করে সিলাম হাজীপুর-জালালপুর হয়ে মোটরসাইকেল দিয়ে শেরপুর যায়। পরে শেরপুর থেকে আল-মোবারক পরিবহনের একটি বাস দিয়ে ঢাকায় যায়। সেখানে ঢাকাস্থ মিরপুরে তার এক আত্মীয়র বাসায় ওঠে। পরে সেখান থেকে ওই আত্মীয়র আরেক আত্মীয়র বাড়িতে যাওয়ার জন্য মূলত কুষ্টিয়ায় যায়। এ ঘটনায় তানভীর ও সানি আত্মগোপনে রয়েছে। এদিকে- ঘটনায় পলাতক থাকা অবস্থায় সাদী তার রূপ পরিবর্তন করে। আগে তার মাথায় ছিলো লম্বা চুল। মুখে ছিলো হালকা দাড়ি। পলাতক অবস্থায় সে তার চেহারায় পরিবর্তন আনে। সে মুখের দাড়ি কেটে ফেলে। চুলও ছোট করে ফেলে। ফলে সাদীকে চেনাই যাচ্ছিলো না। এ ছাড়া- রাহাত খুনের খবর পাওয়া মাত্রই সে তার মোবাইল নম্বর বন্ধ করে ফেলে। একই সঙ্গে তার সহযোগীরাও মোবাইল ফোন বন্ধ করে দিয়েছিলো। নিজের ফেসবুক আইডিকেও ডিঅ্যাক্টিভ করে ফেলে। ফলে সাদীকে খুঁজে পেতে সিআইডিকে বেগ পেতে হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ঘটনা ঘটালেও তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বুধবার রাতে। এরপর কুষ্টিয়া থেকে তাকে সিলেটে আনা হয়। আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শেষ করার পর গতকাল বিকালে তাকে সিলেটে আদালতে প্রেরণ করা হলে সাদী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হয়। সিআইডি’র সাব- ইন্সপেক্টর ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রিপন কুমার দেব জানিয়েছেন; দোষ স্বীকার করে সাদী আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। আদালত জবানবন্দি গ্রহণের পর তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন