এসিআর ঘষামাজা নিয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় গঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের তদন্ত প্রতিবেদনে পরস্পরবিরোধী তথ্য উঠে এসেছে। আন্তঃমন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি বলেছে এসিআর ঘষামাজার দায় এড়াতে পারেন না মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। অথচ অধিদপ্তর নিজস্ব কর্মকর্তাদের দায়ী করে ১৪ কর্মকর্তাকে শাস্তির মুখে ঠেলে দিয়েছে। দেশ রূপান্তরের কাছে আসা অধিদপ্তর ও আন্তঃমন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
২০১৯ সালের জুন মাসে ৪৮ কর্মকর্তার পদোন্নতির প্রস্তাব কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর থেকে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কর্মকর্তাদের পদোন্নতির সুপারিশের জন্য একই বছরের জুন মাসে পাবলিক সার্ভিস কমিশনে (পিএসসি) পাঠায়। প্রস্তাব পেয়ে এসিআরে কাটাকাটি ও ঘষামাজা দেখতে পান পিএসসির কর্মকর্তারা। দোষীদের খুঁজে বের করার জন্য এবং গ্রেডেশন বা জ্যেষ্ঠতার তালিকাসহ নতুন এসিআর পাঠানোর নির্দেশ দেয় পিএসসি। কিন্তু এসিআর ঘষামাজার তদন্ত না করে অধিদপ্তর মাঠ পর্যায়ে নতুন করে এসিআর দেওয়ার নির্দেশনা দিলে বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। এরপর টনকনড়ে কর্তৃপক্ষের। শ্রম মন্ত্রণালয় একজন যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করে। তারা দোষীদের খুঁজে বের করতে না পেরে অধিকতর তদন্তের সুপারিশ করে। পরে আন্তঃমন্ত্রণালয় তদন্ত কমিটি গঠন করে শ্রম ও কর্মস্থান মন্ত্রণালয়। এ তদন্ত চলমান অবস্থায় অধিদপ্তরের কিছু কর্মকর্তা এসিআর বিকৃতি ও গণমাধ্যমে তথ্য প্রকাশের জন্য পদোন্নতির তালিকার বাইরে থাকা ৩৩তম বিসিএসের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত ননক্যাডার ২য় শ্রেণির কর্মকর্তাদের দায়ী করে লিখিত অভিযোগ করে। অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্তে নামেন তৎকালীন মহাপরিদর্শক শিবনাথ রায়। ২৩টি জেলা কার্যালয়ের জন্য নিয়োগ করেন ২২ তদন্ত কর্মকর্তা। অধিকাংশ তদন্ত কর্মকর্তাই এসিআর ঘষামাজার সঙ্গে কারা জড়িত এ সংক্রান্ত তথ্য উপস্থাপন করতে পারেননি। তবে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ এবং গাজীপুরের তদন্তের দায়িত্বে থাকা প্রধান কার্যালয়ের দুই কর্মকর্তা তাদের প্রতিবেদনে ৩৩ বিসিএসের সবাইকে দায়ী করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির সুপারিশ করে। কিন্তু তৎকালীন মহাপরিদর্শক সবাইকে আসামি না করে ৩৩তম বিসিএসের ১৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা (ডিপি) করেন। যাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়, তাদের মধ্যে সাতজন ন্যায়বিচার না পাওয়ার অভিযোগ তুলে মহাপরিদর্শকের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানান। বিধিবিধানের তোয়াক্কা না করে সেই সাত কর্মকর্তার একতরফাভাবে পাঁচ বছরের পদোন্নতি স্থগিতের দন্ডসহ দেওয়া হয় আরও একটি বিভাগীয় মামলা। বাকি সাতজনের বিভাগীয় মামলা নিষ্পত্তি না করে ঝুলিয়ে রাখা হয়। শিবনাথ রায় বদলি হয়ে অন্য দপ্তরে যোগ দিয়েছেন। তার জায়গায় নতুন মহাপরিদর্শক যোগ দিলেও বিভাগীয় মামলাগুলো ঝুলে আছে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয় তদন্ত কমিটিতে ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিব, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরিচালক এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব। গত ডিসেম্বরে তদন্ত প্রতিবেদন জমা হয়। যেখানে মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জসিমউদ্দিনকে দায়ী করে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। একই সঙ্গে প্রস্তাবিত পদোন্নতির তালিকায় যাদের নাম ছিল সুফলভোগী হিসেবে সেসব কর্মকর্তার এসিআর ঘষামাজায় প্ররোচনা বা সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে মতামত দেওয়া হয়। তদন্ত করে তারা দেখতে পান, ৪৮ কর্মকর্তার মধ্যে ৪৪ জনের চাকরির মেয়াদের ঘর পূর্ণ করতেই এসিআর ফরমের প্রথম পৃষ্ঠার ৮নং ক্রমিকে ঘষামাজা, ১৩ কর্মকর্তার পদোন্নতির যোগ্যতার মন্তব্যের ঘরে রিপোর্ট প্রদানকারী কর্মকর্তার অনুস্বাক্ষর নকল ও ২ জন কর্মকর্তার প্রতিস্বাক্ষরকারী কর্মকর্তার স্বাক্ষর নকল করা হয়েছে।
আন্তঃমন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনের পর্যবেক্ষণে আরও উঠে এসেছে, পিএসসি থেকে এসিআর জালিয়াতির মতো গুরুতর পর্যবেক্ষণ আসার পরও প্রশাসনিক কর্মকর্তা জসিমউদ্দিন যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে নির্দেশনা চেয়ে নোট উপস্থাপন না করে এড়িয়ে গেছেন। এছাড়া এ তদন্ত প্রতিবেদনে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে উপমহাপরিদর্শক পদে চলতি দায়িত্ব প্রদানে প্রচলিত বিধিবিধান অনুসরণ করা সমীচীন বলে মন্তব্য করা হয়।
অথচ পূর্বে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের যুগ্ম মহাপরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান ও উপমহাপরিদর্শক মো. মতিউর রহমানের তদন্তে মতামত দেওয়া হয়েছে, ৩৩তম বিসিএস নন-ক্যাডার দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তারা এসিআর ঘষামাজার সঙ্গে জড়িত। এ দুই তদন্ত কর্মকর্তা পিএসসি ফেরত এসিআর ও মন্ত্রণালয়ে রক্ষিত এসিআরের কোনো কপিই পর্যবেক্ষণ করেননি, নেননি এসিআর যাদের হেফাজতে ছিল তাদের সাক্ষ্য। শুধু অভিযোগকারী কিছু কর্মকর্তার সাক্ষ্যের ভিত্তিতে ৩৩তম বিসিএসের সবাইকে দায়ী করেছেন অথচ অভিযোগকারী কেউই এ সংক্রান্ত প্রমাণাদি দাখিল করতে পারেননি। বরং অভিযোগকারী কেউ কেউ তাদের লিখিত সাক্ষ্যে স্বীকার করেছেন অভিযোগের বিষয়ে তারা কিছু জানতেন না। সিনিয়র কর্মকর্তাদের নির্দেশে তারা অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর করেছেন।
প্রত্যক্ষ সাক্ষী না পাওয়ার পরও কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের যুগ্ম মহাপরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান ও উপমহাপরিদর্শক মো. মতিউর রহমানের কাছে মনে হয়েছে, অধিদপ্তরে কর্মরত ৩৩তম বিসিএসের ২য় শ্রেণির প্রায় ৮০ কর্মকর্তা এসিআর ঘষামাজায় জড়িত। অথচ দপ্তর প্রধান বিভাগীয় মামলা করেন ১৪ জনের নামে। যে ১৪ কর্মকর্তা গ্রেডেশন তালিকাসহ নানা অনিয়মের বিষয়ে সরব ছিলেন তাদের বেছে বেছে টার্গেট করা হয়। এসব কর্মকর্তা হলেন মীর মো. শামীম, শাহ আলম, এস এম আরিফুজ্জামান, লিয়াকত আলী, তানিয়া আলম, আনিস ফেরদৌস, নাফিজ হারুন অমি, মো. ইউসুফ আলী, মো. কামরুল আহসান, মো. তরিকুল ইসলাম, মো. নুরুল আমীন, পিংকি মজুমদার, মাহবুবুল আলম ও রাজু বড়ুয়া। এসব কর্মকর্তার মধ্যে সাতজন তৎকালীন মহাপরিদর্শক শিবনাথ রায়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপন করেন। সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তার কাছ থেকে ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কায় তারা এ অনাস্থা জানান। তারা মহাপরিদর্শকের কাছে বিভাগীয় মামলার অভিযোগনামার জবাব দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে আবেদন করেছেন। মহাপরিদর্শকের অধীনে তারা ব্যক্তিগত শুনানিতেও অংশ নিতে রাজি হননি। তার প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপনকারী কর্মকর্তারা হলেন মো. ইউসুফ আলী, মো. কামরুল আহসান, মো. তরিকুল ইসলাম, মো. নুরুল আমীন, পিংকি মজুমদার, মাহবুবুল আলম ও রাজু বড়ুয়া।
সাত কর্মকর্তা অনাস্থা জানিয়ে প্রশাসনের সিনিয়র সচিবদের কাছে আবেদন করলেও তারা এতে সাড়া দেননি। এমনকি বিষয়টি নিয়ে চুপ ছিলেন তৎকালীন শ্রম সচিব কে এম আবদুস সালামও। অনাস্থা জ্ঞাপনকারী সাতজনকে পাঁচ বছরের জন্য পদোন্নতি স্থগিত করার দন্ড দেওয়া হয়। অপর সাতজনের বিভাগীয় মামলা এখানো শেষ হয়নি।
তৎকালীন শ্রম সচিব কে এম আবদুস সালাম গত ১৯ জুলাই শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে সংসদ সচিবালয়ে বদলি হন। এর আগে তিনি পুরো বিষয়টি নিষ্পত্তি করার সুযোগ পেলেও কালক্ষেপণ করেন। নতুন শ্রম সচিব হয়েছেন দশম ব্যাচের কর্মকর্তা মো. এহছানে এলাহী। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি গত ২৬ সেপ্টেম্বর আপিলকারী ৭ কর্মকর্তার ব্যক্তিগত শুনানি নিয়েছেন। শিগগিরই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
পুরো বিচার প্রক্রিয়া কতদূর এগিয়েছে জানতে গত ১৪ অক্টোবর শ্রম মন্ত্রণালয়ে সচিবের দপ্তরে গেলেও জানানো হয় তিনি ঢাকার বাইরে রয়েছেন। এরপর দফায় দফায় ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। গতকাল রবিবার পুনরায় শ্রম সচিবের দপ্তরে গেলে জানানো হয় পরে যোগাযোগের জন্য।
এর আগে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাইলে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।’ মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।
প্রায় ১৮ মাস বিভাগীয় মামলায় পড়ে কর্মকর্তাদের পারিবারিক জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে। তাদের দফায় দফায় দেশের প্রত্যন্ত জেলায় বদলি করা হয়েছে। ফলে আর্থিক অনটনে তাদের স্বাভাবিক জীবন পর্যুদস্ত হচ্ছে। বিভাগীয় মামলার মধ্যে থেকেই অভিযুক্ত এস এম আরিফুজ্জামান গত ১৪ সেপ্টেম্বর তারিখে মারা যান।
ভুক্তভোগী একজন শ্রম পরিদর্শক দেশ রূপান্তরকে জানিয়েছেন, তারা ন্যায়বিচারের জন্য সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ শ্রম সচিব ওপর আস্থা রাখতে চান। তবে ন্যায়বিচার না পেলে সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা দেশ রূপান্তরকে জানান, অধিদপ্তরের তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে ঘটনাটি ৩৩তম বিসিএসের কর্মকর্তারা ঘটিয়েছেন। ওই দপ্তরে ৩৩তম বিসিএসের মোট কর্মকর্তার সংখ্যা ৮০ জন। আর বিভাগীয় মামলা চলছে মাত্র ১৪ জনের নামে। অথচ আন্তঃমন্ত্রণালয় তদন্ত কমিটি বলেছে ঘটনার জন্য মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা দায়ী আর এসিআর ঘষামাজার সুফলভোগী হিসেবে পদোন্নতিপ্রত্যাশী ৪৮ কর্মকর্তা প্ররোচনা জুগিয়েছে। অধিদপ্তর এবং রেগুলেটরি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনই শেষ পর্যন্ত আমলে নিতে হবে। কারণ মন্ত্রণালয় হচ্ছে তদারকি কর্তৃপক্ষ। আর এ তদন্তে শ্রম মন্ত্রণালয় ছাড়াও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, পিএসসির কর্মকর্তারা কমিটিতে ছিলেন।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, দপ্তরের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা একটি প্রতিষ্ঠানকে কোথায় নিয়ে যেতে পারেন, তা এই অধিদপ্তরকে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। মামলার মেরিট না থাকার পরও মামলা করা হয়েছে। আর একটি ঘটনার তদন্তের জন্য ২২টি কমিটি গঠন করাও নজিরবিহীন। অনেক কর্মকর্তাকে বাধ্য করা হয়েছে ৩৩তম বিসিএসের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য।
মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটির তদন্তে বিপরীত ধরনের তথ্য বের হয়ে এলে কোনটি আমলে নেওয়া হবে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ মো. ফিরোজ মিয়া দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নিরপেক্ষতার দিক থেকে মন্ত্রণালয়ের তদন্তই এখানে মূল তদন্ত। অধিদপ্তর একটি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন আর মন্ত্রণালয় এখানে রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষ। সুতরাং মন্ত্রণালয় তদন্তে যা পেয়েছে, তাই গুরুত্বপূর্ণ। আর এখানে শ্রম মন্ত্রণালয় একা তদন্ত করেনি। কমিটিতে পিএসসি, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সদস্য ছিল। কাজেই তদন্তের বিষয় হুবহু এক হলে মন্ত্রণালয়ের তদন্তই আসল তদন্ত।’
সব দোষ গণমাধ্যমের!
গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলেই সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা নড়েচড়ে বসেন। এসিআর ঘষামাজা হয়েছে যা সব তদন্তেই প্রমাণ হয়েছে। দেশ রূপান্তরসহ আরও কয়েকটি গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের পরই কারা সংবাদপত্রে এসব তথ্য দিয়ে অধিদপ্তরের সুনাম নষ্ট করছে শীর্ষ কর্মকর্তাদের প্ররোচনায় তা খুঁজে বের করার আবেদন করেন কলকারখানা অধিদপ্তরের ২৩ কর্মকর্তা। যুগ্ম মহাপরিদর্শক থেকে শুরু করে অধিদপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তারাও এ দলে রয়েছেন। তারা মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর আবেদন করে বলেন, ‘বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে কতিপয় সাংবাদিককে খুশি করে কেউ কেউ সাংবাদিক আত্মীয়তার সুযোগে এ ধরনের জঘন্য মিথ্যা সংবাদ পরিবেশ করেছে বলে আমাদের বদ্ধমূল ধারণা।’
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর শ্রম আইন বাস্তবায়ন বাস্তবায়নের কাজ তদারকি করে। ১৯৭০ সালে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদপ্তরের সৃষ্টি হয়। ২০১৩ সালে সাভারে রানা প্লাজা ধসে পড়াসহ বাংলাদেশের পোশাক খাতে সৃষ্ট কয়েকটি দুর্ঘটনা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার চাপে পরিদপ্তরকে ‘কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর’-এ উন্নীত করা হয়। কিন্তু পরে এই দপ্তরকে আর সামনে এগিয়ে নিতে পারেননি সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে প্রেষণে যাওয়া কর্মকর্তারা। তারা সেখানে গিয়ে নিজে পদোন্নতি পেয়ে উপরের পদে যাওয়ার দৌড়ে শামিল হন, মানের দিক থেকে প্রতিষ্ঠান পড়ে থাকে যেখানে ছিল সেখানেই।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন