অনিয়ম ধামাচাপা দিতে পটুয়াখালীর দশমিনায় ঘুসের ভাগবাটোয়ারার জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রুহুল-আমীনের মতবিনিময় সভার খবর যুগান্তরে প্রকাশ হওয়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান, শিক্ষা কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের নিয়ে ঘুস ভাগাভাগির মতবিনিময় সভার এমন কর্মকাণ্ডের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।
তবে এ কর্মকাণ্ডের জন্য ‘তদন্ত হলে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের ভাত খাইয়ে বিদায়’ দেবেন বলে মন্তব্য করেছেন ওই শিক্ষা কর্মকর্তা; যার একটি রেকর্ডিং যুগান্তরের হাতে রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে উপজেলার ৬৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য এক কোটি ৩২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কাজ না করে অনৈতিক সুবিধার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পিইডিপি-৪ কর্মসূচির এসব টাকা ফেরত যাওয়ার আশঙ্কায় ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে মেরামতের বরাদ্দের সমুদয় অর্থ নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার হিসাবে রাখা হয়েছে।
১০ জুলাই যুগান্তরে সংবাদ প্রকাশ হলে পৃথক দুটি তদন্ত সম্পন্ন হয়। এসব অনিয়ম ধামাচাপা দিতে ও ঝুটঝামেলা এড়াতে মঙ্গলবার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রুহুল-আমীন ঘুস ভাগভাটোয়ারার জন্য নিজ কক্ষে মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন। বুধবার যুগান্তরে সংবাদ প্রকাশ হলে তোলপাড় শুরু হয়।
পরে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রুহুল আমীন এ প্রতিনিধিকে তার অফিসে যাওয়ার অনুরোধ জানান এবং নিউজের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সব সত্য কি বলা যায় বলেন। এটা লিখলেন কেন বলেন। আমার মান-ইজ্জত নষ্ট করলেন। আপনি আমার এমন ক্ষতি না করলেও পারতেন। কালকের বিষয়টা এভাবে সবাইকে জানানোর কি কোনো দরকার ছিল।
উপজেলা চেয়ারম্যানকে ভাগ দিতে হবে- যুগান্তরকে শিক্ষা কর্মকর্তার এমন বক্তব্যর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান আমার বিরুদ্ধে এখন মামলা করে না।
সর্বশেষ তিনি বলেন, এখন তদন্ত এলে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের ভাত খাইয়ে বিদায় দিতে হবে। যার রেকর্ডিং যুগান্তরের কাছে সংরক্ষিত আছে।
এ বিষয় পটুয়াখালী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইয়াদুজ্জামান বলেন, শিক্ষা কর্মকর্তা যে ধরনের কথা বলতেছে বা করতেছে এগুলো অফিসার সুলভ কোনো কথাবার্তা বা আচরণ হচ্ছে না।
এখন তদন্ত এলে ‘তদন্তকারী কর্মকর্তাদের ভাত খাইয়ে বিদায় দিতে হবে’ এ প্রসঙ্গে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, এই কথা কি সে বলতে পারেন একজন অফিসার হিসেবে। কোনোভাবেই এটা বলতে পারেন না তিনি। তাকে বলে দিয়েছি কারও কাছ থেকে কোনো টাকা-পয়সা আদায় করবেন না ও কাউকে কোনো টাকা-পয়সা দেবেন না।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন